ভারতীয় মহিলা দল ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকের ইতিহাসে তাদের সবথেকে বড় পরাজয়ের স্বাদ এনে দিয়েছে। স্মৃতি মান্দানার নেতৃত্বে ভারতীয় দল ২৮ জুন, শনিবার, পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুর্দান্ত সূচনা করে ৯৭ রানের বিশাল জয় ছিনিয়ে নেয়।
ভারত বনাম ইংল্যান্ড: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সূচনা এমনভাবে করেছে, যা স্বাগতিকদের মনোবল প্রথম ম্যাচেই ভেঙে দিয়েছে। নটিংহ্যামের মাঠে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারত ইংল্যান্ডকে ৯৭ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে শক্তিশালী জয় তুলে নেয়। এই জয় শুধু সিরিজের শুরুই নয়, ভারতের শক্তি এবং প্রস্তুতির ঘোষণাও ছিল।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে টিম ইন্ডিয়া ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১০ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে। অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা তার বিস্ফোরক ব্যাটিং দিয়ে সেঞ্চুরি করে ইংরেজ বোলারদের পরাস্ত করেন। তিনি ১১২ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেন, যাতে ১৪টি চার এবং ৪টি বিশাল ছক্কা ছিল। তাঁর সঙ্গে হারলিন দেওল ৪৩ রান করে ভালো পার্টনারশিপ গড়েন।
ইংল্যান্ডের সামনে ২১১ রানের পাহাড় প্রমাণ লক্ষ্য ছিল, কিন্তু ভারতীয় বোলাররা তাদের টিকতে দেননি। ইংলিশ দল মাত্র ১৪.৫ ওভারে ১১৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায়। ভারতের তরুণ বাঁহাতি স্পিনার শ্রী চরণী তার অভিষেক ম্যাচেই চারটি উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। তাঁর সামনে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যায়।
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের সাক্ষী নটিংহ্যাম
এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের মহিলা দলকে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ইতিহাসে তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয় বরণ করতে হয়। ৯৭ রানে পরাজয় স্বাগতিক দলকে সম্পূর্ণভাবে ঝাঁকিয়ে দেয়। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ন্যাট সিভার ব্রান্ট অবশ্যই ৬৬ রানের একটি সাহসী ইনিংস খেলেন, তবে বাকি ব্যাটসম্যানরা ভারতীয় বোলারদের মোকাবেলা করতে পারেননি।
ভারতের হয়ে শ্রী চরণীর পাশাপাশি দীপ্তি শর্মা এবং রাধা যাদবও ২-২টি উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের আশা শেষ করে দেন। পুরো দল একবারের জন্যও ছন্দে ছিল না এবং ভারতের সুপরিকল্পিত বোলিং তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ দেয়নি।
টিম ইন্ডিয়ার ঐতিহাসিক জয়
এই জয় ভারতীয় মহিলা দলের টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানের ব্যবধানে চতুর্থ বৃহত্তম জয় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এর আগে ভারত ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৪ রান, ২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কাকে ৯৯ রান এবং ২০২২ সালে বাংলাদেশকে ৯৮ রানে হারিয়ে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করে। স্মৃতি মান্দানার নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া যেভাবে ধৈর্য্য এবং আগ্রাসনের মধ্যে ভারসাম্য দেখিয়েছে, তা প্রমাণ করে যে এই দল শুধু সিরিজ জেতার জন্য নয়, বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে এসেছে।
ব্যাটিংয়ে যেখানে মান্ধানা এবং হারলিনের জুটি ভিত গড়েছিল, সেখানে বোলিংয়ে শ্রী চরণী ইংল্যান্ডের ইনিংসের কোমর ভেঙে দেন। সিরিজের পরবর্তী ম্যাচ ১ জুলাই ব্রিস্টলে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইংল্যান্ড দল ফিরে আসার জন্য সম্পূর্ণ চেষ্টা করবে। তবে প্রথম ম্যাচে পাওয়া ধাক্কার পর তাদের মানসিক দিক থেকে প্রস্তুত হওয়া সহজ হবে না। ভারতের বোলিং এবং ব্যাটিং উভয় বিভাগের আত্মবিশ্বাস এই মুহূর্তে শীর্ষে রয়েছে এবং ইংল্যান্ডের সামনে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
