ইন্দিরা একাদশী পালিত হবে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ, যা আশ্বিন কৃষ্ণা একাদশী তিথিতে পড়ে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে ব্রত করলে পূর্বপুরুষেরা মুক্তি লাভ করেন। রাজা ইন্দ্রসেনের কাহিনি এই ব্রতের গুরুত্ব ও পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে, যার মধ্যে শালগ্রাম ভগবানের পূজা এবং সঠিকভাবে ব্রত পালন করা অন্তর্ভুক্ত।
ইন্দিরা একাদশী ২০২৫: এই বছর ইন্দিরা একাদশী পালিত হচ্ছে ১৭ সেপ্টেম্বর এবং এটিকে আশ্বিন কৃষ্ণা একাদশী তিথি হিসেবে গণ্য করা হয়। মহিষ্মতী নগরের রাজা ইন্দ্রসেন এবং তাঁর পিতার কাহিনির মাধ্যমে এই ব্রতের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। রাজা নারদ মুনির নির্দেশ অনুসারে পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধ এবং শালগ্রাম ভগবানের পূজা সহ ব্রত পালন করেছিলেন। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই ব্রত পালনের মাধ্যমে পূর্বপুরুষেরা মোক্ষ লাভ করেন এবং ভক্তরা পুণ্য অর্জন করেন। এই ব্রত সূর্যোদয় থেকে দ্বাদশী তিথির সূর্যোদয় পর্যন্ত পালন করা হয়।
ইন্দিরা একাদশীর তাৎপর্য
ইন্দিরা একাদশী আশ্বিন কৃষ্ণা একাদশী তিথিতে পালিত হয় এবং এই বছর এই উৎসবটি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ পড়ছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে ব্রত করলে পূর্বপুরুষেরা মোক্ষ লাভ করেন। একাদশী ব্রত সূর্যোদয় থেকে দ্বাদশী তিথির সূর্যোদয় পর্যন্ত পালন করা হয় এবং এটি পালন করলে সাত প্রজন্মের পূর্বপুরুষেরা মুক্তি লাভ করেন বলে বিশ্বাস করা হয়। এই উপলক্ষে শালগ্রাম ভগবানের পূজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।
এই দিন ইন্দিরা একাদশীর পবিত্র কাহিনি পাঠ ও শ্রবণ করাও অত্যন্ত পুণ্যের কাজ বলে মনে করা হয়। কাহিনিতে রাজা ইন্দ্রসেন এবং তাঁর পিতার মুক্তির বর্ণনা রয়েছে, যা এই ব্রতের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।
রাজা ইন্দ্রসেন এবং নারদ মুনির কথোপকথন
ইন্দিরা একাদশীর কাহিনি অনুসারে, মহিষ্মতী নগরে রাজা ইন্দ্রসেন বাস করতেন, যিনি ভগবান বিষ্ণুর পরম ভক্ত এবং প্রজাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু ছিলেন। একদিন নারদ মুনি তাঁর কাছে আসেন এবং রাজার স্বাস্থ্য ও ভক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। রাজা তাঁকে সশ্রদ্ধ অভ্যর্থনা জানান এবং নারদ মুনিকে আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
নারদ মুনি জানান যে রাজার পিতা যমলোকে ছিলেন এবং যদি রাজা তাঁর জন্য ইন্দিরা একাদশীর ব্রত পালন করেন, তবে তিনি স্বর্গ লাভ করবেন। এরপর রাজা ব্রতের পদ্ধতি জানার জন্য নারদ মুনির কাছে নির্দেশনা চান।
ব্রত পালনের নিয়ম ও পূজার পদ্ধতি
নারদ মুনি বলেন যে দশমী তিথিতে স্নান ইত্যাদি সেরে পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধ করতে হবে এবং একাদশী তিথিতে দাঁত মেজে স্নান করতে হবে। শালগ্রাম ভগবানের সামনে ব্রতের প্রতিজ্ঞা নিতে হবে এবং সমস্ত ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে অনাহারে একাদশী পালন করতে হবে। যোগ্য ব্রাহ্মণদের ফলার ও ভোজন করিয়ে দক্ষিণা দিতে হবে, এবং অবশিষ্ট সামগ্রী গরুকে দান করতে হবে।
রাত্রি জাগরণ করার পর দ্বাদশী তিথির সকালে ভগবানের পূজা করতে হবে এবং পরিবারের সাথে অন্ন গ্রহণ করতে হবে। এই পদ্ধতি পালনের ফলে পূর্বপুরুষেরা মোক্ষ লাভ করেন এবং ভক্ত পুণ্য অর্জন করেন।
ব্রতের ফল এবং মোক্ষ লাভ
রাজা ইন্দ্রসেন নারদজির নির্দেশ অনুসারে ব্রত পালন করেছিলেন, যার ফলে আকাশ থেকে পুষ্পবৃষ্টি হয় এবং তাঁর পিতা গরুড়ে আরোহণ করে বিষ্ণুলোকে গমন করেন। রাজা ইন্দ্রসেনও নিষ্কণ্টক রাজত্ব করে অবশেষে তাঁর পুত্রকে সিংহাসন অর্পণ করে স্বর্গলোকে যাত্রা করেন। কাহিনি অনুসারে, এই ব্রত পালনের মাধ্যমে মানুষ পাপমুক্ত হয়ে মোক্ষ লাভ করতে পারে।