আইপিএল টিকিটে জিএসটি বাড়িয়ে ৪০%, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের উদ্বেগ

আইপিএল টিকিটে জিএসটি বাড়িয়ে ৪০%, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের উদ্বেগ

জিএসটি কাউন্সিল আইপিএল টিকিটের উপর কর ২৮% থেকে বাড়িয়ে ৪০% করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশেষ করে ছোট শহর ও নন-মেট্রো শহরগুলির ফ্র্যাঞ্চাইজিদের টিকিটের রাজস্ব প্রভাবিত হতে পারে। দলগুলির মালিকদের মতে, দাম বাড়লে দর্শকদের সংখ্যা কমবে এবং আয় কমে যাবে।

জিএসটি সংস্কার: জিএসটি কাউন্সিলের সাম্প্রতিক সংস্কারের আওতায় আইপিএল ম্যাচের টিকিটের উপর কর ২৮% থেকে বাড়িয়ে ৪০% করা হয়েছে। এই পরিবর্তন ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। পাঞ্জাব কিংসের সিইও সতীশ মেনন সহ অনেক দল মালিক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এর ফলে বিশেষ করে ছোট শহর এবং কম ক্ষমতার স্টেডিয়ামগুলির ফ্র্যাঞ্চাইজিদের আয় প্রভাবিত হবে। স্ট্যান্ড টিকিটের বিক্রয় থেকে বেশিরভাগ রাজস্ব আসে, তাই বর্ধিত কর সরাসরি দর্শকদের সংখ্যায় প্রভাব ফেলতে পারে।

ফ্র্যাঞ্চাইজিদের উদ্বেগ বাড়ল

এই সিদ্ধান্তের পর আইপিএল দলগুলির মালিকরা খুব একটা খুশি নন। এর কারণ হল টিকিটের বিক্রি থেকে আয় সরাসরি প্রভাবিত হতে পারে। পাঞ্জাব কিংসের সিইও সতীশ মেনন বলেছেন যে মেট্রো শহরগুলির তুলনায় ছোট শহর এবং কম ক্ষমতার স্টেডিয়ামগুলিতে এর প্রভাব আরও গুরুতর হবে।

স্টেডিয়ামের টিকিটের বিক্রি দলগুলির মোট আয়ের প্রায় ৮ থেকে ১২ শতাংশ অবদান রাখে। যদিও বিজ্ঞাপন এবং স্পনসরশিপ থেকে দলগুলি বেশি আয় করে, তবে টিকিটের বিক্রিও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি টিকিটের দাম বাড়ে, তাহলে নন-মেট্রোপলিটান এলাকাগুলিতে দর্শকদের সংখ্যা কমতে পারে। এর ফলে স্টেডিয়ামগুলি খালি দেখা যেতে পারে এবং দলগুলির আয় প্রভাবিত হতে পারে।

ছোট শহরগুলির দলগুলির উপর বেশি প্রভাব

সতীশ মেনন স্পষ্ট বলেছেন যে ৪০% জিএসটি অত্যন্ত বেশি এবং এর কারণে টিকিটের রাজস্বের উপর চাপ আসবে। তিনি জানিয়েছেন যে ছোট শহরগুলিতে টিকিটের দাম বাড়ানোর সুযোগ খুব কম। স্ট্যান্ড টিকিটের বিক্রি থেকেই তাদের আয়ের প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ আসে। অন্যদিকে, কর্পোরেট বক্স থেকে বাকি আয় হয়। এই অবস্থায়, যদি দর্শকরা টিকিটের দাম বেশি হওয়ার কারণে পিছিয়ে আসে, তাহলে দলের আয় কমে যাওয়া নিশ্চিত।

প্রভাব কি সত্যিই বড় হবে

যদিও বাজারের বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তকে খুব বেশি গুরুতর বলে মনে করছেন না। ডি অ্যান্ড পি অ্যাডভাইজরির ম্যানেজিং পার্টনার সন্তোষ এন বলেছেন যে প্রভাব অবশ্যই হবে, তবে তা খুব বড় হবে না। কারণ টিকিটের উপর ইতিমধ্যেই ২৮% জিএসটি প্রযোজ্য ছিল। এখন এটি ৪০% হয়েছে, তাই পার্থক্য অবশ্যই দেখা যাবে, কিন্তু আইপিএল-এর জনপ্রিয়তা বিবেচনা করে দর্শকরা সম্পূর্ণভাবে পিছিয়ে আসবে না।

এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এসেছে যখন রিয়েল মানি গেমিং-এর উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে আইপিএল-এর স্পনসরশিপ রাজস্ব ইতিমধ্যেই চাপে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলগুলিকে দ্বিগুণ মার খেতে হতে পারে। একদিকে স্পনসরশিপে কমতি এবং অন্যদিকে টিকিটের বিক্রি থেকে আয় কমে যাওয়া। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি।

টিকিটের দাম কত পর্যন্ত যায়

বর্তমানে, প্রাথমিক টিকিটের দাম ৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হয়। এই রেঞ্জের টিকিটগুলি সাধারণ দর্শকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। এখন যদি এই টিকিটের উপর ৪০% জিএসটি লাগে, তাহলে দাম আরও বাড়বে। এই অবস্থায়, ছোট শহরগুলির ক্রিকেট প্রেমীরা স্টেডিয়ামে আসতে দ্বিধা করতে পারেন।

জিএসটি কাউন্সিলের কাছে আপিলের প্রস্তুতি

খবর অনুযায়ী, অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করছে এবং ভবিষ্যতে জিএসটি কাউন্সিলের কাছে এই বৃদ্ধি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারে। দল মালিকদের মতে, এই কর ২৮% থেকে ৪০% পর্যন্ত বাড়ানো যুক্তিসঙ্গত নয় এবং এটি খেলার উপর অপ্রয়োজনীয় বোঝা বাড়াবে।

দর্শকদের ভূমিকা

আইপিএল-এর জনপ্রিয়তার সবচেয়ে বড় ভিত্তি হল এর দর্শক। টেলিভিশন এবং ডিজিটাল ভিউয়ারশিপের পাশাপাশি, লাইভ স্টেডিয়াম অভিজ্ঞতাও এই টুর্নামেন্টের একটি বিশেষত্ব। যদি টিকিটের দাম বাড়ে এবং দর্শকরা স্টেডিয়ামে কম আসে, তাহলে আইপিএল-এর পরিবেশও ফিকে হয়ে যেতে পারে। এই কারণেই দল মালিকরা এই সিদ্ধান্তে চিন্তিত।

জিএসটি-তে এই পরিবর্তনের ফলে স্পষ্ট যে আগামী সিজনে দলগুলিকে তাদের টিকিটিং এবং প্রাইসিং কৌশল নতুন করে সাজাতে হবে। অন্যথায়, টিকিটের বিক্রিতে সরাসরি প্রভাব দেখা যেতে পারে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিদের আয় কমে যেতে পারে।

Leave a comment