ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লিজেন্ডস ২০২৫-এর ১৪তম ম্যাচটি ক্রিকেট ইতিহাসে এক অত্যন্ত অদ্ভুত ঘটনার জন্য সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই ম্যাচটি গ্রেস রোড, লেস্টারে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নের মধ্যে খেলা হয়েছিল, যেখানে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে ১০ উইকেটে পরাজিত করে।
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লিজেন্ডস ২০২৫-এর ১৪তম ম্যাচে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা ক্রিকেটপ্রেমীরা দীর্ঘকাল ভুলতে পারবে না। পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স এবং অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্সের মধ্যে গ্রেস রোড, লেস্টারে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে পাকিস্তান যেখানে ১০ উইকেটে জয়লাভ করেছে, সেখানে অস্ট্রেলীয় বোলার জন হেস্টিংসের একটি অদ্ভুত ওভার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই ওভারটি কেবল ক্রিকেট ইতিহাসের দীর্ঘতম ওভারগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল না, বরং ম্যাচ শেষ করা ওভারও হয়ে যায়।
১৮টি বল, ১২টি ওয়াইড, ১টি নো বল – এবং ওভারও শেষ হল না!
ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্তটি আসে যখন অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্সের হয়ে অষ্টম ওভারটি করতে আসেন জন হেস্টিংস। তিনি এমন এক বোলিং স্পেল করেন যা সম্ভবত আগে কখনও দেখা যায়নি। এই ওভারে তিনি ১২টি ওয়াইড বল এবং ১টি নো বল করেন, অর্থাৎ ১৩টি অতিরিক্ত বল। আশ্চর্যের বিষয় হল, হেস্টিংস কেবল ৫টি বৈধ ডেলিভারি করতে পেরেছিলেন, তার আগেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়।
পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন এই ওভারে সহজেই ৭৫ রানের লক্ষ্য ৭.৫ ওভারে অর্জন করে নেয়। হেস্টিংস মোট ১৮টি বল করেন, কিন্তু ওভারটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এটি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত এবং আলোচিত ওভার হিসাবে পরিচিত হয়ে থাকবে।
পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্সের দুর্দান্ত বোলিং
এই ম্যাচের শুরুতে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্সের অধিনায়ক শোয়েব মালিক টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই সঠিক প্রমাণিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার পুরো দল মাত্র ৭৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। পাকিস্তানের অভিজ্ঞ স্পিনার সাঈদ আজমল চমৎকার পারফরম্যান্স করে ৬টি উইকেট নেন, যেখানে ইমাদ ওয়াসিম ২টি উইকেট পান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কেবল বেন ডঙ্ক কিছু রান করতে সক্ষম হন, যিনি ২৬ রানের একটি ইনিংস খেলেন। পুরো দল ১১.৫ ওভারে শেষ হয়ে যায়।
একতরফা জয়ে পাকিস্তানের দাপট
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান দলের শুরুটা ছিল খুবই আক্রমণাত্মক। ওপেনার শারজিল খান মাত্র ২৩ বলে ৩২ রান এবং শোয়েব মাকসুদ ২৬ বলে ২৮ রান করে কোনো উইকেট না হারিয়ে দলকে জিতিয়ে দেন। জয়ের ফিনিশিং টাচ সেই বিতর্কিত ৮ম ওভারে আসে, যেখানে হেস্টিংসের বোলিং ম্যাচটিকে অদ্ভুত দিকে নিয়ে যায়। পাকিস্তান মাত্র ৭.৫ ওভারে জয়ের লক্ষ্য অর্জন করে।
নিজের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য সাঈদ আজমল ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ খেতাব পান। তাঁর স্পিন বোলিং অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করে দেয়। তিনি প্রমাণ করেন যে অভিজ্ঞতা এবং টেকনিক আজও ক্রিকেটে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
জন হেস্টিংসের ওভার – ক্রিকেট ইতিহাসের এক ব্যতিক্রমী পাতা
জন হেস্টিংসের এই ১৮ বলের ওভারটি শুধু অস্ট্রেলিয়ার জন্য হতাশাজনক ছিল না, ক্রিকেট ভক্তদের জন্যেও ছিল অপ্রত্যাশিত ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সাধারণত একটি ওভারে ৬টি বল থাকে, কিন্তু ১৩টি অতিরিক্ত বলের কারণে এই ওভারটি ১৮ বল পর্যন্ত প্রসারিত হয় এবং সেটিও সম্পূর্ণ হতে পারেনি। এই ঘটনাটি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লিজেন্ডস ২০২৫ নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ক্রিকেটপ্রেমী ও বিশ্লেষকদের মধ্যে এই ওভারের আলোচনা ভবিষ্যতে চলতেই থাকবে।