করবা চৌথ ২০২৫-এর উপবাস ১০ অক্টোবর, শুক্রবার পালন করা হবে। এই দিনে সারগির সময় সকাল ০৪:৪০ থেকে ০৫:৩০ পর্যন্ত থাকবে। মহিলারা সূর্যোদয়ের আগে সারগি গ্রহণ করে নির্জলা উপবাস রাখেন এবং চন্দ্রোদয়ের পর উপবাস ভঙ্গ করেন। পুরুষরাও চাইলে নিয়ম মেনে তাদের স্ত্রীর জন্য এই উপবাস পালন করতে পারেন।
Karwa Chauth 2025: করবা চৌথের পবিত্র উপবাস এই বছর ১০ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার পালিত হবে। কার্তিক কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্থী তিথি ৯ অক্টোবর রাত ১০:৫৪ থেকে শুরু হয়ে ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭:৩৮ মিনিটে শেষ হবে। সারগির সময় সকাল ০৪:৪০ থেকে ০৫:৩০ পর্যন্ত থাকবে। মহিলারা এই দিনে নির্জলা উপবাস রাখেন এবং চন্দ্রোদয়ের পর স্বামীর হাত থেকে জল গ্রহণ করে উপবাস ভঙ্গ করেন। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই উপবাস স্বামীর দীর্ঘায়ু এবং দাম্পত্য সুখের জন্য পালন করা হয়। পুরুষরাও নিয়ম মেনে এই উপবাস রাখতে পারেন।
করবা চৌথের তারিখ এবং পূজার সময়
পণ্ডিতদের মতে, কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্থী তিথি ৯ অক্টোবর রাত ১০টা ৫৪ মিনিট থেকে শুরু হয়ে ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে শেষ হবে। উদয়াতিথি অনুসারে করবা চৌথের উপবাস ১০ অক্টোবর, শুক্রবার পালন করা হবে। এই দিনেই মহিলারা সকালে সূর্যোদয়ের আগে সারগি গ্রহণ করে সারাদিন নির্জলা উপবাস রাখবেন এবং রাতে চাঁদকে অর্ঘ্য দিয়ে উপবাস ভঙ্গ করবেন।
সারগির সময় এবং গুরুত্ব
করবা চৌথের সারগির শুভ সময় ১০ অক্টোবর সকাল ৪টা ৪০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। সারগি সূর্যোদয়ের আগে গ্রহণ করা হয়, যাতে মহিলারা সারাদিন জল এবং খাবার ছাড়াই উপবাস রাখতে পারেন। সারগি কেবল একটি ঐতিহ্য নয়, বরং একটি আশীর্বাদ হিসাবে বিবেচিত হয়, যা শাশুড়ি তার পুত্রবধূকে দেন। এতে খাবার-দাবারের জিনিসের সাথে সুহাগ সামগ্রী এবং সাজসজ্জার জিনিসও অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সারগিতে মহিলারা কী কী খেতে পারেন
সারগির থালায় এমন খাদ্যদ্রব্য রাখা হয় যা শক্তি এবং সুষম পুষ্টি প্রদান করে। এর মধ্যে থাকে ক্ষীর, পরোটা, মঠরি, সুত ফেনি, মিষ্টি, ফল, ডাবের জল, দুধ, ড্রাই ফ্রুটস এবং হালুয়া। কিছু মহিলা চা-ও পান করেন, যাতে সারাদিন শক্তি বজায় থাকে। সারগির উদ্দেশ্য হলো মহিলারা সারাদিন নির্জলা থেকেও যেন দুর্বল অনুভব না করেন।
সারগি গ্রহণ করার আগে মহিলারা সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করেন। এরপর শিব, পার্বতী এবং চন্দ্রদেবকে স্মরণ করেন। নিজেদের বাড়ির বড়দের আশীর্বাদ নেওয়ার পর সারগি গ্রহণ করা হয়। সারগি গ্রহণের সময় মনকে শান্ত রাখা এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করা শুভ বলে মনে করা হয়। সারগি নেওয়ার পর মহিলারা সারাদিন উপবাস রাখেন এবং সন্ধ্যায় চন্দ্রকে অর্ঘ্য দিয়ে নিজেদের স্বামীর হাত থেকে জল পান করে উপবাস ভঙ্গ করেন।
করবা চৌথ ব্রতের ধর্মীয় গুরুত্ব
করবা চৌথের ব্রত বিবাহিত মহিলাদের অক্ষয় সৌভাগ্য এবং দাম্পত্য সুখের জন্য পালন করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই ব্রত সম্পূর্ণরূপে নিয়ম মেনে পালন করলে স্বামীর দীর্ঘায়ুর আশীর্বাদ লাভ হয় এবং দাম্পত্য জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে। মহিলারা এই দিনে ষোলো শৃঙ্গার করেন এবং পূর্ণ উৎসাহের সঙ্গে করবা চৌথের পূজায় অংশগ্রহণ করেন।
করবা চৌথের পূজা বিধি
সন্ধ্যার সময় মহিলারা করবা চৌথের পূজা করেন। পূজার স্থানে মাটি বা পিতলের কর্বায় জল ভরে রাখা হয়। এরপর মাতা পার্বতী, ভগবান শিব, গণেশ জি এবং চন্দ্রমার পূজা করা হয়। কথা শোনার পর মহিলারা করবা চৌথের আরতি করেন এবং চন্দ্র ওঠার অপেক্ষা করেন। যখন চন্দ্র দেখা যায়, তখন মহিলারা ছাঁকনি দিয়ে চাঁদ এবং স্বামীর মুখ দেখেন। এরপর স্বামীর হাত থেকে জল পান করে উপবাসের সমাপ্তি করেন।
পুরুষরাও কি করবা চৌথের ব্রত রাখতে পারেন?
আজকের দিনে অনেক স্বামী তাদের স্ত্রীদের প্রতি প্রেম ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য করবা চৌথের ব্রত পালন করেন। ধর্মশাস্ত্রগুলিতে এর বিরোধিতা করা হয়নি। পুরুষরাও এই ব্রত রাখতে পারেন, তবে তাদের এর নিয়মাবলী পালন করা আবশ্যক। সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করার পর ভগবান শিব-পার্বতীর পূজা করা উচিত এবং ব্রতের সংকল্প নেওয়া উচিত। ব্রতের সময় পুরুষরা জল পান করতে পারেন, তবে তাদের খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে এবং পূজার সমস্ত নিয়ম পালন করতে হবে।
ব্রত পালনের সময় যে বিষয়গুলি মনে রাখা জরুরি
ব্রত পালনের সময় পবিত্রতা এবং শ্রদ্ধা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পূজা স্থান পরিষ্কার করুন এবং সারাদিন ইতিবাচক মনোভাব রাখুন। ব্রতের কথা শোনা এবং আরতি করা শুভ বলে মনে করা হয়। চন্দ্রকে অর্ঘ্য দেওয়ার পরই ব্রত ভঙ্গ করা উচিত।
করবা চৌথের এই উৎসব প্রেম, নিষ্ঠা এবং সমর্পণের প্রতীক। এটি কেবল একটি ব্রত নয়, বরং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস এবং বন্ধনকে মজবুত করার একটি সুযোগ।