পরিচালন সমিতির দিকেই আঙুল! ভাইস প্রিন্সিপালের মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে

পরিচালন সমিতির দিকেই আঙুল! ভাইস প্রিন্সিপালের মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে

কসবা আইন কলেজে মনোজিৎ মিশ্রের লাগাতার বাড়বাড়ন্ত ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায় সরাসরি পরিচালন সমিতির কাঁধে চাপালেন ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায়। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন তিনি যা করেছেন, তা পরিচালন সমিতির নির্দেশেই করেছেন। এর জেরে অস্বস্তি বেড়েছে পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেবের ঘনিষ্ঠ মহলেও।

নাম না করে বার্তা? অশোক দেবকে ঘিরেই কি ঘনীভূত হচ্ছে বিতর্ক!

যদিও নয়নাদেবী সরাসরি কোনও নাম নেননি, কিন্তু তাঁর বক্তব্যে পরোক্ষভাবে তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেবের দিকেই আঙুল তোলার ইঙ্গিত স্পষ্ট। কারণ কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতির আসনে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন অশোক দেব। ফলে মনোজিতের ক্ষমতা বাড়ার নেপথ্যে রাজনৈতিক ছায়া ছিল কি না, সেই প্রশ্ন এখন সামনে।

প্রশ্ন একটাই— কে দিল এই 'ক্ষমতার লাইসেন্স'?

কীভাবে এক প্রাক্তন ছাত্র কলেজে অস্থায়ী চাকরি পেলেন? কীভাবে হয়ে উঠলেন এত ক্ষমতাশালী যে ছাত্রী নিগ্রহের মতো জঘন্য অপরাধ ঘটানোর সাহস দেখাতে পারেন? একের পর এক প্রশ্ন উঠছে কলেজজুড়ে। ভাইস প্রিন্সিপালের বক্তব্য অনুযায়ী, সবই হয়েছিল পরিচালন সমিতির অনুমোদনেই।

ভাইস প্রিন্সিপালের আত্মপক্ষ সমর্থন— "আমার হাতে কিছু ছিল না!"

নয়না চট্টোপাধ্যায় জানান, কলেজে কোনও নিয়োগ বা কাউকে ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর হাতে ছিল না। তিনি শুধু পরিচালন সমিতির নির্দেশ মেনেই কাজ করেছেন। এমনকী, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে, সেখানেও সমিতির মতামত অনুসরণ করতে হয়েছে তাঁকে। ফলে কার্যত নিজেকে এই পুরো ঘটনার বাইরে রাখার চেষ্টা করলেন ভাইস প্রিন্সিপাল।

পরিচালন সমিতি আগে জানত? ইঙ্গিতে বিস্ফোরক নয়না

নয়নাদেবী আরও দাবি করেন— প্রতিটি অভিযোগ, প্রতিটি ঘটনায় পরিচালন সমিতিকে অবহিত করা হয়েছে। এমনকী মনোজিতের ক্ষেত্রেও সব তথ্য সমিতির কাছেই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে স্পষ্টতই বোঝাতে চাইলেন— মনোজিতের কার্যকলাপ সম্পর্কে সমিতির অজ্ঞতা দাবি করা অসম্ভব।

সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সরব ভাইস প্রিন্সিপাল

এই ঘটনার জেরে নয়নাদেবী চান মনোজিৎ মিশ্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ ও আদালতের তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে তাঁর পক্ষ থেকে। নিজের দায় এড়িয়ে তিনি এখন দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বোঝাতে চাইলেন— আইনের পথে হাঁটার পক্ষেই আছেন তিনি।

রাজনৈতিক ছায়া না থাকলে এতদূর যেত কি মনোজিৎ? প্রশ্ন ঘুরছে ঘুরপাকে

কলেজের একটি অস্থায়ী চাকরিপ্রাপ্ত প্রাক্তন ছাত্র কীভাবে এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে প্রশাসন ও রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা। স্থানীয়দের দাবি— মনোজিতের পেছনে রাজনৈতিক ছত্রছায়া ছিল বলেই তাঁর এত দাপট। ফলে এই কাণ্ডে রাজনৈতিক দিক থেকেও অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে।

Leave a comment