এক চামচ দুধ ও নারকেলের ছোট্ট টোটকাতেই মিলবে অর্থসুখ-সৌভাগ্য
কৌশিকী অমাবস্যার মাহাত্ম্য আরও বৃদ্ধি পেল সূর্যগ্রহণে এই ভাদ্র মাসের ২২ অগস্ট, শুক্রবার পালিত হবে কৌশিকী অমাবস্যা। দৃক সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে তিথি শুরু হচ্ছে ২১ অগস্ট, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে এবং চলবে ২২ অগস্ট সকাল ১১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। উদয়তিথি অনুযায়ী পালিত হবে শুক্রবারই। বিশেষত্ব হল, এ বছর একই দিনে ঘটছে সূর্যগ্রহণ। ফলে এই অমাবস্যার মাহাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে বহু গুণে। জ্যোতিষ মতে এই দিন আচার-বিধি পালনের মাধ্যমে জীবনে আসবে উন্নতি, দূর হবে অশুভ প্রভাব।
জ্যোতিষ টোটকায় মিলবে সমৃদ্ধি ও সুসময়
প্রাচীন শাস্ত্র ও লোকবিশ্বাস বলছে, কৌশিকী অমাবস্যায় কিছু বিশেষ টোটকা পালন করলে জীবনের বাঁধা বিঘ্ন কাটিয়ে আসে সুসময়। অর্থসুখ, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের দ্বার খুলে যায়। এ বছর সূর্যগ্রহণের কারণে টোটকার গুরুত্ব আরও বেড়েছে। জ্যোতিষী চক্রপাণি ভাটের কথায়, “অমাবস্যা ও সূর্যগ্রহণ একত্রিত হলে সঠিক আচার মেনে চললে আধ্যাত্মিক ফল বহু গুণ বাড়ে।” ফলে এই দিনে মানুষ ভক্তিভরে বিভিন্ন প্রতিকারমূলক আচার পালন করেন।
এক চামচ দুধের অদ্ভুত টোটকা
এই অমাবস্যার পুণ্যতিথিতে একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী টোটকা প্রচলিত আছে। বলা হয়, মাত্র এক চামচ দুধ কুয়োতে ঢেলে দিলে বা কুয়ো না থাকলে মাটির গর্ত তৈরি করে সেখানে ঢেলে দিলে জীবনে আসবে শান্তি। এটি রাহু-কেতুর কুপ্রভাব দূর করে মানসিক অশান্তি থেকে মুক্তি দেয়। শাস্ত্রকারদের মতে দুধ অমাবস্যায় ‘শুদ্ধি ও ঐশ্বর্যের প্রতীক’। ফলে সামান্য এই আচার পালন করলেই আশীর্বাদে ভরে উঠবে সংসার।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ বার্তা
কৌশিকী অমাবস্যার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ হল বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন রাখা। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে এঁটো বাসন বা আবর্জনা ফেলে রাখা অত্যন্ত অশুভ। এর ফলে দারিদ্র ও অশুভ শক্তির প্রভাব বেড়ে যায়। তাই এই দিনে ঘর-বাড়ি ও আঙিনা ঝকঝকে পরিষ্কার রাখা আবশ্যক। পণ্ডিতদের মতে, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে পুণ্যফল বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
নারকেলের পাঁচ টুকরোর আচার
নারকেলকে সমৃদ্ধি ও পূজার অন্যতম উপকরণ হিসেবে ধরা হয়। কৌশিকী অমাবস্যায় একটি নারকেল কিনে সেটিকে ৫ টুকরো করে নিতে হয়। এরপর একটি টুকরো সদর দরজায় সারা রাত রেখে, পরদিন সকালে সমস্ত টুকরো জলে বিসর্জন দিতে হয়। এই আচার করলে গৃহে লক্ষ্মীর আগমন ঘটে এবং সংসারে আসা বাধা-বিঘ্ন দূর হয়। নারকেল দেবীর প্রতীক, ফলে এটি শুভ শক্তি আহ্বান করে।
রাহু-কেতুর প্রভাবমুক্তির উপায়
অমাবস্যা মানেই গ্রহদোষ ও অশুভ শক্তির দাপট। তাই এই দিন রাহু-কেতুর প্রভাব কমাতে বিশেষ টোটকা পালন করা জরুরি। ছোট ছোট আটার গুলি তৈরি করে মাছকে খাওয়ানো হলে গ্রহের কুপ্রভাব থেকে মুক্তি মেলে বলে শাস্ত্রকারদের অভিমত। পাশাপাশি সন্ধ্যায় বাড়ির সদর দরজায় দুটি তিলতেলের প্রদীপ জ্বালালে অশুভ শক্তির প্রভাব দূর হয়ে যায়। এভাবে অমাবস্যার রাতে আলো ও পুণ্যের সমাহার বাড়িয়ে সংসারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
কৌশিকী অমাবস্যা ও সূর্যগ্রহণের মিলন এবছর ভক্ত ও জ্যোতিষমতে এক বিশেষ দিন হয়ে উঠেছে
সামান্য টোটকা—এক চামচ দুধ, নারকেলের আচার বা মাছ খাওয়ানো—দ্বারাও সংসারে সুখ-সমৃদ্ধি ডেকে আনা যায়। তবে এগুলি কেবলমাত্র লোকবিশ্বাস ও জ্যোতিষের আচারবিধি, তাই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। তবুও ভক্তি, পরিচ্ছন্নতা ও সঠিক আচারে এই দিনকে বিশেষ করে তুললে জীবনে মিলবে ইতিবাচক ফল।