কলকাতা এবং শহরতলি গতকাল রাত থেকে প্রবল বর্ষণে জর্জরিত। শ্যামবাজার, উল্টাডাঙ্গা, ঢাকুরিয়া, বালিগঞ্জ, বেহালা, ইএম বাইপাস, সল্টলেক সেক্টর ৫ সহ হাওড়ার একাধিক এলাকায় হাঁটু সমান জল জমে দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। কর্মব্যস্ত মঙ্গলবার সকালে বিপাকে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। রাস্তায় যানজট এবং বাস-অটোর গতি রুদ্ধ হয়ে পড়ে।
পুরসভা নামল মাঠে, জলের তোড়ে কর্মীদের যুদ্ধ
কলকাতা পুরসভার কর্মীরা জল নিষ্কাশনের জন্য রাত থেকেই এলাকায় এলাকায় পাম্প বসিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু জলস্তর এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে, শহরের নিকাশি ব্যবস্থাকে কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। শহরবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছরই বর্ষার শুরুতেই এই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি হয় অথচ স্থায়ী কোনও সমাধান নেই।
আবহাওয়া দফতরের হুঁশিয়ারি: আজ ফের তুমুল বৃষ্টির আশঙ্কা
ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ৯ জুলাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা ও হাওড়া—দুই জায়গাতেই জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫৫ কিমি পর্যন্ত উঠতে পারে বলে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
উত্তাল বঙ্গোপসাগর, উপকূলবর্তী এলাকায় মৎস্যজীবীদের উপর নিষেধাজ্ঞা
ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে বাতাসের গতিবেগ ও প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কায় সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। মৎস্যজীবীদের জন্য পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে স্থানীয় স্তরে সতর্কতা প্রচার করা হচ্ছে। নীচু এলাকাগুলিতে জল ঢোকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ।
তিনদিন জারি থাকবে সতর্কতা, কোন দিনে কতটা বৃষ্টি?
৯ জুলাই: সারাদিন মেঘলা আকাশ, একাধিক দফায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা। হলুদ সতর্কতা জারি।
১০ জুলাই: হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকলেও তুলনামূলকভাবে আবহাওয়া স্থিতিশীল। সতর্কতা বলবৎ থাকবে।
১১ জুলাই: মেঘলা আকাশ ও হালকা বৃষ্টি। বড় কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই।
১২-১৩ জুলাই: মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেই এক বা দু’বার বৃষ্টির পূর্বাভাস। জল জমার আশঙ্কা কম।
১৪ জুলাই: বৃষ্টি অথবা বজ্রপাত হতে পারে। তবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে অনুমান।
জলমগ্ন শহরে যানবাহনের সমস্যা, বিপাকে বিমানযাত্রীও
জলমগ্ন রাস্তায় বহু জায়গায় অটো ও ট্যাক্সি পরিষেবা বন্ধ ছিল মঙ্গলবার সকালে। অনেক জায়গায় রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় বাস চালকরা। এমনকি, কলকাতা বিমানবন্দরেও দেরিতে উড়ান ওঠা ও নামার ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে।