রাহুল গান্ধীর 'ভোট চুরি' অভিযোগ খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ

রাহুল গান্ধীর 'ভোট চুরি' অভিযোগ খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ
সর্বশেষ আপডেট: 2 ঘণ্টা আগে

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ভোট চুরি’ অভিযোগ সংক্রান্ত আবেদন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে যে এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত। আবেদনকারীকে কমিশনের সাথে যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নয়াদিল্লি: কংগ্রেস সাংসদ ও বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী কর্ণাটক নির্বাচনে যে ‘ভোট চুরি’ (vote rigging) সংক্রান্ত অভিযোগ করেছিলেন, সেই আবেদন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশন (Election Commission)-এর এখতিয়ারভুক্ত, তাই সুপ্রিম কোর্ট এতে হস্তক্ষেপ করবে না। আদালতের এই রায়ের পর রাজনৈতিক মহলে এই বিষয়টি নিয়ে আবারও বিতর্ক জোরদার হয়েছে।

ঘটনাটি কী ছিল?

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কিছুদিন আগে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের সময় কারচুপির অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে রাজ্যে বেশ কয়েকটি বিধানসভা আসনে, বিশেষ করে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালে, বড় আকারে ‘ভোট চুরি’ হয়েছে। রাহুল গান্ধী আরও অভিযোগ করেছিলেন যে শাসক দল বিজেপি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে। এই বক্তব্যের পর দেশজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।

আবেদনে কী দাবি করা হয়েছিল?

রাহুল গান্ধীর অভিযোগের পর একজন আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেছিলেন। এই আবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে আদালত একটি বিশেষ তদন্ত দল (Special Investigation Team – SIT) গঠন করুক, যার নেতৃত্ব কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারক (retired judge) কে দেওয়া হবে। আবেদনকারীর যুক্তি ছিল যে বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত তখনই সম্ভব যখন এটি আদালতের তত্ত্বাবধানে করা হবে।

সুপ্রিম কোর্ট কেন আবেদনটি খারিজ করল?

বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মালা বাগচীর বেঞ্চ শুনানির সময় আবেদনটি খারিজ করে বলেন যে নির্বাচনে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিষ্পত্তির অধিকার নির্বাচন কমিশনের কাছে রয়েছে। আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে আবেদনকারীর সরাসরি নির্বাচন কমিশনের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

সুপ্রিম কোর্ট তার আদেশে বলেছে –

“আমরা আবেদনকারীর যুক্তি শুনেছি। এই আবেদনটি জনস্বার্থ মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়েছে, কিন্তু এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ারে পড়ে না। আবেদনকারীর উচিত এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের কাছে পেশ করা। আমরা এমন আবেদনগুলির শুনানি করব না যার সমাধান সাংবিধানিক সংস্থাগুলির কাছে ইতিমধ্যেই উপলব্ধ।”

আইনজীবী কী বলেছিলেন?

আবেদনকারীর পক্ষে অ্যাডভোকেট রোহিত পান্ডে যুক্তি দিয়েছিলেন যে নির্বাচন কমিশনকে আগেই এই বিষয়টি জানানো হয়েছিল, কিন্তু কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি বলেন যে যেহেতু নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা গণতন্ত্রের (democracy) ভিত্তি, তাই সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ করা উচিত। তবে, আদালত এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে।

রাহুল গান্ধীর অভিযোগ

রাহুল গান্ধী ৭ আগস্ট একটি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছিলেন যে কর্ণাটকে নির্বাচনের সময় বড় পরিমাণে ভোট চুরি হয়েছে। তিনি বিজেপির উপর সরাসরি আক্রমণ করে বলেছিলেন যে শাসক দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সাথে ছিনিমিনি খেলেছে। রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্যের পর বিরোধীরা সরকারকে ঘেরাও করার চেষ্টা করেছিল, অন্যদিকে বিজেপি এই অভিযোগগুলিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে অভিহিত করেছিল।

নির্বাচন কমিশনের প্রতিক্রিয়া

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার রাহুল গান্ধীর অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছিলেন। কমিশন কংগ্রেস নেতাকে বলেছিল যে তিনি সাত দিনের মধ্যে তার দাবির সমর্থনে হলফনামা (affidavit) জমা দিন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল যে যদি রাহুল গান্ধী প্রমাণ দিতে না পারেন, তাহলে তাকে তার বক্তব্যকে ভিত্তিহীন (baseless) বলে মেনে নিতে হবে।

Leave a comment