ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের তরুণ ফাস্ট বোলার ক্রান্তি গৌড় সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
স্পোর্টস নিউজ: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের তরুণ ফাস্ট বোলার ক্রান্তি গৌড় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলমান ওয়ানডে সিরিজে তার शानदार পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ক্রিকেটপ্রেমী এবং বিশেষজ্ঞদের চমকে দিয়েছেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে, এবং ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে ম্যাচেই ক্রান্তি সেই কাজটি করে দেখিয়েছেন যা আজ পর্যন্ত কেবল একজন ভারতীয় মহিলা ফাস্ট বোলারই করতে পেরেছেন – একটি ওয়ানডে ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব।
ইংল্যান্ডে ইতিহাস রচনা, সিরিজ জয়ে নায়িকা হলেন ক্রান্তি
সম্প্রতি সমাপ্ত হওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ভারত ইংল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে। এই সিরিজের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ক্রান্তি গৌড়, যিনি তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে ম্যাচেই ৬ উইকেট নেন। এই পারফরম্যান্স তিনি সিরিজের নির্ণায়ক তৃতীয় ম্যাচে করেছিলেন, যেখানে তার ইনসুইং বলের সামনে ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরাও অসহায় ছিলেন।
এই জয়ের সাথে ভারত ইংল্যান্ডের মাটিতে একটি ঐতিহাসিক সিরিজ জয় নথিভুক্ত করেছে এবং ক্রান্তি 'প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ' নির্বাচিত হয়েছেন। তিন ম্যাচে মোট ৯ উইকেট নিয়ে তিনি সিরিজের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন।
ঝুলন গোস্বামীর পর ইতিহাস
ওয়ানডে ক্রিকেটে ৬ উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় ভারতীয় মহিলা ফাস্ট বোলার হলেন ক্রান্তি গৌড়। এর আগে ভারতের মহান ফাস্ট বোলার ঝুলন গোস্বামী ২০১১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও, দীপ্তি শর্মা (২ বার), মমতা মাবেন এবং ঝুলনই এমন বোলার ছিলেন যারা ওয়ানডে-তে ছয় উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
টিম ইন্ডিয়া পর্যন্ত ক্রান্তি গৌড়ের যাত্রা কোনও সিনেমার গল্পের চেয়ে কম নয়। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ার বাসিন্দা ক্রান্তি বিসিসিআই কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিওতে জানিয়েছেন যে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে কখনও কখনও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খাবার ধার করতে হতো। এমন একটা সময় ছিল যখন তিনি টেনিস বল দিয়ে ছেলেদের সাথে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন, কারণ সেই সময় তার কাছে অন্য কোনও বিকল্প ছিল না।
মহিলাদের ক্রিকেটে ফাস্ট বোলিংয়ের অভাব দেখে তিনি নিজেকে সেই দিকে চালিত করেন। ক্রান্তি বলেন যে শুরুতে তিনি প্রশিক্ষণের সুবিধাও পাননি, তবে তিনি কখনও হাল ছাড়েননি।
হার্দিক পান্ডিয়া থেকে অনুপ্রেরণা
ক্রান্তি তার প্রথম দিকে হার্দিক পান্ডিয়াকে অনুসরণ করতেন। তিনি বলেন, "আমি হার্দিক পান্ডিয়ার বোলিং ভিডিও দেখতাম এবং তাকে দেখেই ফাস্ট বোলিংয়ের কৌশল শিখেছি।" এই জেদ তাকে ক্রমাগত অনুপ্রাণিত করেছে এবং আজ সেই জেদই তাকে ভারতীয় দলের ফাস্ট বোলারদের সারিতে নিয়ে এসেছে।
ক্ৰান্তির এই পারফরম্যান্স ভারতকে কেবল ইংল্যান্ডে জয় এনে দেয়নি, বরং মহিলা ক্রিকেটকে একজন নতুন ফাস্ট বোলার দিয়েছে, যিনি আগামী বছরগুলিতে দলের মেরুদণ্ড হতে পারেন। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল দীর্ঘ সময় পর কোনো নতুন ফাস্ট বোলারের মধ্যে ঝুলন গোস্বামীর ঝলক দেখতে পেয়েছে।