লাদাখের সো-মোরিরি অঞ্চলে পর্বতারোহী, বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল দ্বারা এই আরোহণ শুধুমাত্র একটি দুঃসাহসিক অভিযান নয়, বরং একটি গভীর মানবিক সংবেদনা এবং শ্রদ্ধার্ঘ্যের প্রতীকও।
নয়াদিল্লি: লাদাখের একটি নাম না জানা পর্বতশৃঙ্গকে এখন ‘অভয়া’ নামে অভিহিত করা হবে। এই নামটি সেই প্রশিক্ষণরত মহিলা ডাক্তারকে উৎসর্গ করা হয়েছে, যাঁকে গত বছর কলকাতায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন পর্বতারোহী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক এবং সমাজকর্মীদের একটি যৌথ দল এই ডাক্তারের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি নাম না জানা শৃঙ্গের নাম ‘অভয়া’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৬,১০৫ মিটার উঁচু শৃঙ্গকে উৎসর্গ
এই শৃঙ্গটি লাদাখের লেহ জেলার সো-মোরিরি অঞ্চলে অবস্থিত, যার উচ্চতা প্রায় ৬,১০৫ মিটার। এই অঞ্চলটি তার দুর্গম পরিস্থিতি এবং সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। এই বিশেষ পর্বতারোহণ অভিযানের অংশ হওয়া দলে দেশের স্বনামধন্য বিজ্ঞানী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, পর্বতারোহী এবং চিকিৎসকেরা রয়েছেন। এই দলটি প্রতীকীভাবে এই শৃঙ্গের নাম ‘অভয়া’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সাহস, সম্মান এবং ন্যায়ের প্রতীক।
প্রজেক্ট সীমা: সামাজিক ও বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য-সংযুক্ত মিশন
এই পর্বতারোহণ অভিযান ‘প্রজেক্ট সীমা’ (Sustainable Empowerment and Exploration in Mountainous Areas)-এর অধীনে চালানো হচ্ছে। এই মিশনের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র পর্বতারোহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা, পরিবেশগত অধ্যয়ন, সামাজিক বিকাশ এবং গোষ্ঠীগত অংশগ্রহণকেও যুক্ত করে।
দলের নেতা এবং প্রবীণ পর্বতারোহী দেবাশীষ বিশ্বাস পিটিআই-এর সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন: তাঁর মৃত্যু দেশের আত্মাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আমরা চাই এই শৃঙ্গের নাম ‘অভয়া’ রেখে তাঁর সাহসিকতা এবং আত্মবলিদানকে চিরকালের জন্য স্মরণীয় করে রাখা হোক।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের বেদনাদায়ক ঘটনা
গত বছর জুলাই মাসে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার স্বনামধন্য আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে একজন মহিলা প্রশিক্ষণরত ডাক্তারের সঙ্গে গণধর্ষণ এবং তারপর হত্যার ঘটনা সামনে এসেছিল। এই অমানবিক ঘটনার পর দেশজুড়ে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল। মেডিকেল মহল রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিল এবং নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচারের দাবি করেছিল।
বর্তমানে এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত জেলে বন্দী এবং তার উপর আইনি কার্যক্রম চলছে। এই অভিযানের সময় বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা হিমালয় অঞ্চলে:
- হিমবাহ এবং জলবায়ু পরিবর্তন
- নদী এবং হ্রদের বাস্তুসংস্থান
- স্থানীয় কৃষি ব্যবস্থা এবং জীববৈচিত্র্য
যেমন বিষয়গুলির ওপরও অধ্যয়ন করবেন। পাশাপাশি, এই অভিযান মহিলা সুরক্ষা এবং সামাজিক চেতনার বার্তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমও হবে।