মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ মামলায় এনআইএ-র বিশেষ আদালত সমস্ত সাত অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেছে। এই রায়ের পর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
Malegaon Blast Case 2025: মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে ২০০৮ সালে হওয়া আলোচিত বোমা বিস্ফোরণ মামলায় এনআইএ-র বিশেষ আদালত সমস্ত সাত অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেছে। এই ঐতিহাসিক রায়ের পর রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে 'গেরুয়া সন্ত্রাস'-এর তত্ত্বের ওপর একটি বড় আঘাত বলে অভিহিত করেছেন।
মৌর্য তার অফিসিয়াল সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে বলেছেন, মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় আদালতের রায় অভিনন্দনযোগ্য। এর ফলে কংগ্রেসের 'গেরুয়া সন্ত্রাস' তৈরির অপচেষ্টা ভেস্তে গেছে।
মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ মামলাটি কী ছিল?
মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালে হয়েছিল, যখন শহরে রমজান মাস চলছিল এবং নবরাত্রিও কাছে ছিল। এই বিস্ফোরণে ৬ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ১০০ জনের বেশি মানুষ আহত হন। এই হামলার প্রাথমিক তদন্ত মহারাষ্ট্র এটিএস করেছিল, যারা কিছু হিন্দু সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করেছিল।
২০১১ সালে মামলাটি জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)-কে হস্তান্তর করা হয়। বহু বছরের তদন্তের পর ২০১৬ সালে এনআইএ তাদের চার্জশিট দাখিল করে, যেখানে অনেক অভিযুক্তকে পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অবশেষে ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে শুনানি শেষ হয় এবং জুলাই ২০২৫-এর শেষ সপ্তাহে আদালত সমস্ত সাত অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেয়।
কংগ্রেসের উপর কেশব প্রসাদ মৌর্যের বড় আক্রমণ
উপমুখ্যমন্ত্রী মৌর্য এই রায়কে ন্যায়ের জয় বলে অভিহিত করে কংগ্রেসের উপর তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ইউপিএ সরকার এবং মহারাষ্ট্রের তৎকালীন কংগ্রেস-এনসিপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু সংগঠন এবং ব্যক্তিদের নিশানা করে 'গেরুয়া সন্ত্রাস'-এর ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, তৎকালীন সরকারগুলো আসল অপরাধীদের খোঁজার পরিবর্তে নির্দোষ হিন্দুদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে, জোর করে অপরাধ স্বীকার করানোর চাপ দিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মতো সংগঠনগুলোকে কালিমালিপ্ত করার ষড়যন্ত্র করেছে।
আরএসএস এবং গান্ধী পরিবারের উপরও প্রশ্ন তুলেছেন
মৌর্য তার বিবৃতিতে আরও বলেন যে, কংগ্রেস পার্টি এবং গান্ধী পরিবারের विचारधारा শুরু থেকেই राष्ट्रवादी সংগঠন এবং হিন্দু ধর্মের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। তিনি দাবি করেন যে, কংগ্রেসের এই কৌশল ভারতীয় সংস্কৃতি এবং জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করার চেষ্টার অংশ ছিল। তিনি লিখেছেন, কংগ্রেসের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত করে ভোটব্যাংকের রাজনীতি করা। কিন্তু আজকের রায় उन সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ এবং বিদ্বেষপূর্ণ রাজনীতির মুখোশ খুলে দিয়েছে।
মালেগাঁও বিস্ফোরণের মতো স্পর্শকাতর মামলায় আদালতের রায়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাপক। একদিকে এই রায় বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতাকে তুলে ধরে, অন্যদিকে এটি রাজনৈতিক বাগাড়ম্বরপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।