SCO সম্মেলনে মোদীর চীন সফর: ঐক্য ও বন্ধুত্বের বার্তা

SCO সম্মেলনে মোদীর চীন সফর: ঐক্য ও বন্ধুত্বের বার্তা

চীনে অনুষ্ঠিতব্য SCO সম্মেলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্ভাব্য সফরকে চীন ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। এটিকে ঐক্য ও বন্ধুত্বের প্রতীক আখ্যা দিয়ে চীন এই অনুষ্ঠানটিকে ঐতিহাসিক বলেছে।

Modi China Visit: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মাসের শেষে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীনের তিয়ানজিন শহর সফর করবেন। এই সফরটি অনেক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ২০১৯ সালের পর এটি মোদীর প্রথম চীন সফর। চীন এই সফরকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে এবং আঞ্চলিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

চীনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রস্তাবিত সফর নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সম্মেলন ঐক্য, বন্ধুত্ব এবং ফলপ্রসূ ফলাফলের মিলনস্থল হবে। গুও-এর মতে, এই সম্মেলনটি SCO-এর ইতিহাসে বৃহত্তম শীর্ষ সম্মেলন হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে SCO সদস্য দেশগুলি ছাড়াও ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানসহ ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা অংশ নেবেন।

জাপানে থামার পরে মোদী পৌঁছাবেন তিয়ানজিন

প্রধানমন্ত্রী মোদী চীন সফরের আগে জাপানে থামবেন। ৩০শে আগস্ট তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সাথে বার্ষিক ভারত-জাপান শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এরপর তিনি তিয়ানজিনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন, যেখানে তিনি ৩১শে আগস্ট থেকে ১লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য SCO সম্মেলনে অংশ নেবেন।

ভারত-চীন সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ সফর

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বিশ্ব মঞ্চে অনেক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ইতিমধ্যেই চীনে SCO-এর সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে অংশ নিয়েছেন। মোদীর এই সফর সেই ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনার ছায়া

এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলির রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। যেহেতু ব্রিকস এবং এসসিও-এর অনেক সদস্য দেশ একই, তাই এই সম্মেলন একটি নতুন দিকনির্দেশ দিতে পারে। রাশিয়া সম্মেলনে তাদের প্রতিনিধি পাঠাবে, তবে এখনও এটা স্পষ্ট নয় যে রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন নিজে উপস্থিত থাকবেন কিনা।

এসসিও প্রতিরক্ষা নথিতে ভারতের আপত্তি

জুন ২০২৫-এ ভারত এসসিও-এর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে পেশ করা একটি নথিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিল। কারণ ছিল ওই নথিতে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার উল্লেখ করা হয়নি, যাতে ২৬ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। এর বিপরীতে, নথিতে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে অস্থিরতার উল্লেখ করা হয়েছিল। ভারত এই পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবের প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

তবে, জুলাই মাসে চীন পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা করে আঞ্চলিক সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা আরও জোরদার করার কথা বলেছে। এই প্রতিক্রিয়াকে ভারতের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Leave a comment