নবান্ন অভিযানে ব্যবসায় ধাক্কার আশঙ্কা হাওড়ার ব্যবসায়ীর মামলায় হাই কোর্টে বড় পর্যবেক্ষণ

নবান্ন অভিযানে ব্যবসায় ধাক্কার আশঙ্কা হাওড়ার ব্যবসায়ীর মামলায় হাই কোর্টে বড় পর্যবেক্ষণ

৯ অগাস্টের রাজনৈতিক জমায়েত ঘিরে আদালতের নজর কাড়ল রাজ্যের গোয়েন্দা রিপোর্ট, আগামীকাল ফের শুনানি

নবান্ন অভিযানকে ঘিরে আদালতের দোরগোড়ায় ব্যবসায়ী, আশঙ্কা বড় ক্ষতির

আসন্ন ৯ অগাস্ট 'নবান্ন অভিযান' কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলার দ্বারস্থ হলেন এক ব্যবসায়ী। হাওড়া ময়দানে ব্যবসা করা তপন হাজরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই রাজনৈতিক জমায়েতের ফলে তাঁর ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এদিন বুধবার মামলার শুনানি হলেও চূড়ান্ত রায় আসেনি, বৃহস্পতিবার ফের শুনানি নির্ধারিত।

মিছিল করা অধিকারের মধ্যেই পড়ে, তবে নিয়ন্ত্রণ পুলিশের দায়িত্ব— হাই কোর্ট

শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট মন্তব্য করেন, আইন মেনে মিছিল হতেই পারে। সেটা গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু সেই জমায়েত কীভাবে পরিচালিত হবে, সেটি পুলিশের হাতে। পাশাপাশি তিনি ইঙ্গিত দেন, রাজ্যের তরফে এই অভিযানের আশঙ্কা ও নিরাপত্তা রিপোর্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে— আদালত সব দিক বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত দেবে।

‘এক চোখ হারিয়েছিল পুলিশকর্মী!’ রাজ্য তুলে ধরল ২০২৪-র স্মৃতি

মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে স্মরণ করান ২০২৪ সালের ২৭ অগাস্টে হওয়া নবান্ন অভিযানের কথা। সেই দিন ৪৭ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিলেন, এক জন তো চিরতরে একটি চোখও হারিয়েছিলেন। এবারের অভিযানে জমায়েত আরও বড় হবে বলে রাজ্যের গোয়েন্দা রিপোর্টে আশঙ্কা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নিহত চিকিৎসকের পরিবার দিলেন ডাক, রাজনৈতিক দল জানাল সমর্থন

এই বছরের নবান্ন অভিযান মূলত ডাক দিয়েছে এক নিহত চিকিৎসকের পরিবার, যাঁর মৃত্যু নিয়ে রাজ্যে বিতর্ক রয়েছে। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে একটি রাজনৈতিক দল পূর্ণ সমর্থনও জানিয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছে রাজ্য। ফলে এবারের আন্দোলনের আকার ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশাসনের উদ্বেগ যথেষ্ট।

ব্যবসায়ীর আরজি, 'মিছিল নয়, চাই ব্যবসার নিরাপত্তা'

মামলায় প্রধান আরজি জানানো হয়েছে, অভিযানে কারা যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে, তা নিয়ে তাঁদের আপত্তি নেই। ব্যবসায়ী তপন হাজরার আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা চাই, হাওড়া ময়দানে যাতে কোনও হিংসাত্মক পরিস্থিতি না হয় এবং ব্যবসার ক্ষতি না হয়, আদালত যেন তা নিশ্চিত করে।

প্রবীর দাসকে ভুল করে অভিযুক্ত! ছাত্র সংগঠনের কনভেনর না হওয়ার দাবি

মামলায় বিবাদী হিসেবে নাম জড়িয়েছে প্রবীর দাস নামে এক ব্যক্তির, যাঁকে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের কনভেনর বলা হয়েছে। তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলায় এই তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাঁর মতে, আসল ইস্যু মিছিল নয়, বরং ব্যবসার সুরক্ষা এবং শান্তি বজায় রাখা।

আদালতের পর্যবেক্ষণ: অন্য মামলার রায় দেখেই হবে সিদ্ধান্ত

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানিয়ে দেন, একই বিষয়ের উপর জনস্বার্থ মামলা অন্য বেঞ্চে চলমান। সেই মামলার রায়ের উপর নির্ভর করেই এই মামলায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের শুনানিই এখন গুরুত্বপূর্ণ।

বিপুল জমায়েতের আশঙ্কা ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা, চোখ এখন আদালতের সিদ্ধান্তে

সবমিলিয়ে, রাজনৈতিক জমায়েত, ব্যবসায়িক ক্ষতি, পুলিশের প্রস্তুতি ও জনস্বার্থ— এই চতুর্মুখী টানাপোড়েনের মধ্যেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ৯ অগাস্টের নবান্ন অভিযান। আদালতের পরবর্তী নির্দেশ এখন শুধু মামলাকারীর নয়, বরং প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের কাছেও চরম গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a comment