নেপালের হিংসাত্মক প্রদর্শনের জেরে জেল থেকে পালানো বন্দীদের ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ। এসএসবি উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং বাংলায় ৩৫ জন বন্দীকে ধরেছে। নেপালে পরিস্থিতি টানটান, ভারত সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে।
ভারত-নেপাল সীমান্ত: সম্প্রতি নেপালে Gen-Z-এর নেতৃত্বে চলা প্রতিবাদ ও হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করেছে। এই বিক্ষোভের সময় নেপালের ৭৭টি জেলার কারাগারগুলির নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে পড়ে, যার ফলে হাজার হাজার বন্দী পালিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ভারত সীমান্ত সুরক্ষা বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে।
এসএসবি সীমান্ত পারাপার করার সময় বন্দীদের ধরেছে
সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে অভিযান চালিয়ে নেপালের জেল থেকে পালানো ৩৫ জন বন্দীকে গ্রেফতার করেছে। এই সমস্ত বন্দীরা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। এসএসবি আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে ধৃত বন্দীদের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ সীমান্তে নজরদারি ও টহলদারী নিরন্তর বাড়ানো হয়েছে।
কোথায় অভিযান চালানো হয়েছে
এসএসবি-র অভিযান অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশে ২২ জন বন্দীকে ধরা হয়েছে, বিহারে ১০ জন এবং পশ্চিমবঙ্গে তিন জন বন্দীকে ধরতে সাফল্য মিলেছে। বুধবার উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থনগর জেলায় আরও পাঁচ জন বন্দী সীমান্ত পার করার চেষ্টা করার সময় ধরা পড়ে। ধৃত সকল বন্দীদের স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের পরিচয় ও অপরাধের তদন্ত করা হচ্ছে।
নেপালে পরিস্থিতি
নেপালে Gen-Z প্রতিবাদ এবং হিংসাত্মক বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ থানা দখল করে নিয়েছে এবং জেল থেকে বন্দীদের পালাতে সাহায্য করেছে। নেপাল সেনাবাহিনীকে জেল এবং স্পর্শকাতর এলাকাগুলির চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনো টানটান। নেপালে কার্ফু এবং কঠোরতা বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু জেল থেকে পালানো বন্দীদের সংখ্যা এত বেশি যে তাদের পুনরায় ধরা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের জন্য নিরাপত্তার গুরুত্ব
ভারত-নেপালের ১,৭১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খোলা সীমান্তের কারণে নেপাল থেকে পালিয়ে আসা অপরাধীরা ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের সীমান্তে এসএসবি-র নজরদারি এবং ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের ফলে এই অপরাধীদের ভারতে প্রবেশ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসএসবি গোয়েন্দা তথ্য এবং সতর্ক টহলদারীর মাধ্যমে সীমান্ত পারাপারকারীদের তাৎক্ষণিকভাবে ধরেছে।
বন্দীদের প্রোফাইল
এসএসবি আধিকারিকদের মতে, ধৃত বন্দীরা নেপালের জেল থেকে পালিয়েছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ হিংসাত্মক ঘটনা এবং প্রতিবাদে জড়িত ছিল। এসএসবি এবং স্থানীয় পুলিশ এই বন্দীদের অপরাধ রেকর্ডের তদন্ত করছে। নেপালে হওয়া প্রতিবাদ এবং কারাগারের দুর্বল নিরাপত্তা এই অপরাধীদের পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে, কিন্তু ভারতের সতর্কতা তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
ভারত-নেপাল সহযোগিতা
নেপালে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ভারত তার সীমান্ত সুরক্ষা এবং টহলদারী বাড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার উদাহরণ স্থাপন করেছে। এসএসবি-র এই অভিযান দেখায় যে নেপালের অস্থির পরিস্থিতিতে ভারত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তার জন্য তার দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করেছে।