বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতকে আক্রমণের পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান। পাক অধিকর্তা এই পরিকল্পনা ফাঁস করেছেন, যা সেনা প্রধান অসীম মুনিরের মস্তিষ্কপ্রসূত। ভারতের জন্য এই কৌশল পূর্বাঞ্চলে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
Pakistan Plan: পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে একটি নতুন এবং উদ্বেগজনক ষড়যন্ত্রের খবর পাওয়া গেছে। এই বার পরিকল্পনাটি প্রচলিত পশ্চিমা সীমান্ত থেকে নয়, বরং পূর্ব সীমান্ত অর্থাৎ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে শুরু করার। পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল অসীম মুনির এবং তার কৌশলগত দল বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার পরিকল্পনা করছেন। এই খবর কোনো ভারতীয় সংস্থা বা বিশ্লেষক নয়, বরং পাকিস্তানেরই একজন সিনিয়র আর্মি অফিসার জানিয়েছেন।
পূর্ব সীমান্ত থেকে যুদ্ধের কৌশলের ইঙ্গিত
পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন যে ভবিষ্যতে কোনো সংঘর্ষে পাকিস্তান পূর্ব সীমান্ত থেকে শুরু করবে। এই বিবৃতিটি শুধুমাত্র একটি সামরিক ধারণা নয়, বরং একটি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়। এর মানে হল পাকিস্তান বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ভারতকে অস্থির করার কৌশল তৈরি করছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমীকরণে বদল
পাকিস্তানের এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের নতুন ইউনুস সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ইউনুসের ঝোঁক পাকিস্তানের প্রতি নরম এবং ভারতের প্রতি কঠোর হচ্ছে। কিছু প্রতিবেদনে এও দাবি করা হয়েছে যে ইউনুস সরকার পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক আবার সক্রিয় করেছে।
যদি এটা সত্যি হয়, তবে এটি ভারতের জন্য একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ ভারতের ঐতিহ্যবাহী মিত্র, কিন্তু যদি সেটি পাকিস্তানের মঞ্চ হয়ে ওঠে, তবে ভারতকে পূর্ব সীমান্তেও LoC-এর মতো প্রস্তুতি নিতে হবে। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য যেমন অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির নিরাপত্তা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
সাইবার এবং গোয়েন্দা জোটের আশঙ্কা
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে শুধু কূটনৈতিক নয়, গোয়েন্দা ও সাইবার জোটের পরিকল্পনাও রয়েছে। আইএসআই এবং বাংলাদেশি সংস্থাগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। পাকিস্তানের উদ্দেশ্য হল ভারতকে দুদিক থেকে ঘেরাও করা - একদিকে জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্ত এবং অন্যদিকে বাংলাদেশ সীমান্ত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের থেকে অসীম মুনিরের সমর্থন
এই সম্পূর্ণ পরিকল্পনাকে আন্তর্জাতিক স্তরে মজবুত করার চেষ্টাও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে চলছে। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাকিস্তানের প্রতি ঝোঁক এবং ভারতের প্রতি সাম্প্রতিক সমালোচনামূলক মনোভাব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য উৎসাহের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে ট্রাম্প প্রশাসন আবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা থাকায় পাকিস্তান নতুন করে কূটনৈতিক সমর্থন এবং বিশ্বব্যাপী সমর্থন পেতে পারে।
অসীম মুনির সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন এবং আমেরিকা উভয়ের সঙ্গেই তাঁর কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন। তিনি জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চেও পাকিস্তানের ভাবমূর্তি উন্নত করতে এবং ভারতকে ঘেরাও করার চেষ্টা জোরদার করেছেন।
ভারতের জন্য দ্বৈত চ্যালেঞ্জ
ভারতের নিরাপত্তা নীতির জন্য এটি একটি নতুন এবং গুরুতর চ্যালেঞ্জ। এতদিন পর্যন্ত ভারতে পাকিস্তানের দিক থেকে আসা বিপদগুলির কেন্দ্র ছিল জম্মু ও কাশ্মীর এবং পশ্চিমা সীমান্ত, কিন্তু যদি বাংলাদেশও পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের আখড়া হয়ে ওঠে, তবে ভারতকে দ্বৈত ফ্রন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সীমান্তের সংবেদনশীলতা এবং রাজনৈতিক-সামাজিক জটিলতাগুলি আগে থেকেই ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ। এখানে যদি পাকিস্তান-স্পনসর্ড অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা হয়, তবে এর প্রভাব শুধু নিরাপত্তায় নয়, অভ্যন্তরীণ শান্তি ও উন্নয়নেও পড়বে।