পানাগড়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ ‘চোর চোর’ স্লোগান ভাসলো বাজারে

পানাগড়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ ‘চোর চোর’ স্লোগান ভাসলো বাজারে

পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর মহকুমার পানাগড় বাজারে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। তৃণমূল ও বিজেপির কর্মী সমর্থকরা একে অপরকে ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী কণ্ঠে আতঙ্কের ছাপ দেখা যায়। পুলিশকে তৎপর হতে হয়, কারণ দুই পক্ষের উত্তেজিত জনতা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছিল।

ভাষা আন্দোলন ও মঞ্চ ভাঙা: উত্তেজনার সূত্রপাত

কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ ভাঙার ঘটনা পানাগড়ের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করেছে। সেনাবাহিনীর হাতে মঞ্চ ধ্বংস হওয়ার প্রতিবাদে তৃণমূল কর্মীরা পানাগড় বাজারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। অন্যদিকে বিজেপি দলও ভারতীয় সেনার মানহানি প্রতিহত করতে প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে। এভাবে দুই রাজনৈতিক পক্ষ একে অপরের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়।

চৌমাথা মোড়ে স্লোগান যুদ্ধ

পানাগড় বাজারের চৌমাথা মোড়ে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভার সামনে দিয়ে বিজেপির মিছিল যাওয়ার সময় উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। দুই পক্ষের কর্মীরা একে অপরকে ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। একই সঙ্গে বিজেপি ‘ভারত মাতা’ স্লোগান দেন, যার জবাবে তৃণমূল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে শুরু করে। চৌমাথা মোড়ে একাধিকবার স্লোগান-প্রতিস্লোগান চলতে থাকে, যা পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলে।

পুলিশকে হিমশিম খেতে হলো

উত্তেজিত জনতার দমন করতে কাঁকসা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। পুলিশকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুই পক্ষকে আলাদা রাখতে হয়। পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য জোর প্রয়োগ ও বারবার সতর্কবার্তা দিতে হয়। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, পুলিশ উপস্থিত না হলে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নিত। পুলিশ রীতিমত হিমশিম খেতে হয় যেন কোনো বড় সংঘর্ষ না ঘটে।

সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন, বাজারে অশান্তি

উত্তেজনার ফলে পানাগড় বাজারের সাধারণ মানুষ ভয়ভীতিতে পড়ে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সকালে বাজারে কিছুই বিক্রি হচ্ছিল না। স্লোগান ও উত্তেজনার কারণে বাজার ও রাস্তায় চলাচল অচল হয়ে যায়। স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, রাজনৈতিক সংঘর্ষ দীর্ঘদিন চললে সামগ্রিক শান্তি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে প্রভাব পড়বে।

রাজনৈতিক সমীকরণ ও ভবিষ্যতের প্রভাব

পানাগড়ের এই সংঘর্ষ শুধু ওই এলাকায় নয়, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই প্রধান দলের কর্মীদের এই ধরনের মুখোমুখি সংঘর্ষ স্থানীয় নির্বাচনী পরিস্থিতিকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শান্তি বজায় রাখার তাগিদ বিশেষভাবে দেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও সতর্কবার্তা

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনো পক্ষ আইন ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই কাঁকসা থানার আধিকারিকরা এলাকায় নিয়মিত নজরদারি শুরু করেছেন। তারা সাধারণ জনতাকে সতর্ক করেছেন যে, অযাচিত স্লোগান বা সংঘর্ষে অংশগ্রহণ করবেন না। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রস্তুত।

উত্তেজনা এখনো বিদ্যমান

পানাগড়ের চৌমাথা মোড়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ স্থানীয় শান্তি ও জনজীবনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘চোর চোর’, ‘জয় বাংলা’ ও ‘ভারত মাতা’ স্লোগান একাধিকবার পাল্টা-পাল্টা উচ্চারণের কারণে উত্তেজনা তীব্র হয়। পুলিশ সতর্ক থাকলেও রাজনৈতিক উত্তেজনা কমানো এবং স্থানীয়দের শান্তি বজায় রাখা এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

 

Leave a comment