ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ওজন কমানোর শর্টকাট নয়

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ওজন কমানোর শর্টকাট নয়

ওজন কমানোর ঝটপট সমাধান হিসেবে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই ১৬ ঘণ্টার উপোস এবং ৮ ঘণ্টার খাবারের উইন্ডো ফলো করে সুফল পেয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই পদ্ধতি সবার জন্য নয়। শুধুমাত্র সময় মেনে খাওয়া আর না খাওয়াটা যথেষ্ট নয়; পুষ্টিকর খাবার, জল এবং সঠিক নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন।

উপোস মানেই যে সব খাওয়া যাবে তা নয়

অনেকেই ১৪–১৬ ঘণ্টা উপোস করে ‘যা খুশি তাই খাওয়া’ করতে শুরু করেন, যা বিপদ ডেকে আনতে পারে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে খাবারের ধরন ও মানও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন উপোসের সময় জল বেশি খাওয়া|

খাওয়ার অভ্যাস না মানলে এনার্জি হারাতে পারেন

দীর্ঘক্ষণ উপোস করলে শরীরের এনার্জি কমে যেতে পারে। পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না নিলে মাথাব্যথা, ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। কর্মদক্ষতা কমে যায়, মনোযোগ হারানো, ল্যাথার্জি এবং সারাদিনের কার্যক্রমে সমস্যা দেখা দেয়। তাই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের সময় সঠিক সময়ে সঠিক খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

পেটের সমস্যা ও বিপাকজনিত জটিলতা

উপোসের সময় সঠিক খাবার না নিলে গ্যাস, অম্বল এবং হজমের সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদে ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা আলসারের ঝুঁকিও থাকে। এমনকি পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিলে ওজন কমলেও শরীর দুর্বল থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই এই ডায়েট শুরুর আগে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

মানসিক চাপ ও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট

দীর্ঘক্ষণ উপোসে অ্যাড্রেনালিন ও কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটি মানসিক চাপ এবং অবসাদ তৈরি করে। পাশাপাশি মেটাবলিক ব্যালান্স নষ্ট হয়, খাবার ঠিকমতো হজম হয় না এবং সারাদিন মন খারাপ থাকে। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি এড়াতে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করা উচিত।

ওজন কমার বদলে বাড়তেও পারে

অনেকেই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে অতিরিক্ত খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনুভব করেন। এতে ওজন কমার বদলে বাড়তেও পারে। ডায়েট এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ফাস্টিং শুরু করলে শরীরের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন হজমের সমস্যা, ক্লান্তি, এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার হ্রাস।

সচেতনভাবে ফাস্টিং করা জরুরি

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কার্যকর হতে পারে, কিন্তু শুধুমাত্র সময়ের উপর নির্ভর করা যথেষ্ট নয়। সঠিক পুষ্টি, জল, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মনোযোগী খাওয়াদাওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফাস্টিং শুরু করার আগে ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিপরীত অবস্থায় ওজন কমার বদলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

Leave a comment