টুথব্রাশ কত দিন অন্তর বদলানো উচিত বিশেষজ্ঞদের ৩ মাসের নিয়ম

টুথব্রাশ কত দিন অন্তর বদলানো উচিত বিশেষজ্ঞদের ৩ মাসের নিয়ম

টুথব্রাশ বদলানো, কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

মুখের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল দাঁত ব্রাশ করা। কিন্তু অনেকেই একটি সহজ অথচ গুরুত্বপূর্ণ নিয়মকে উপেক্ষা করেন—কত দিন অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন করা উচিত। দাঁতের ময়লা এবং প্লাক সরাতে সাহায্যকারী এই ছোট্ট যন্ত্রটি, যদি জীর্ণ বা পুরনো হয়, তাহলে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে। দন্তচিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত প্রতিটি টুথব্রাশ তিন থেকে চার মাস ব্যবহারের পর পরিবর্তন করা উচিৎ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিসলগুলো তাদের আকৃতি হারায়, ক্ষয়ে যায় এবং প্লাক অপসারণের ক্ষমতা কমে যায়। তবে যদি কোনো ব্রাশ ৩ মাসের আগেই জীর্ণ হয়ে যায়, দেরি না করে অবিলম্বে নতুন ব্রাশ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

সঠিক পরিষ্কারের ক্ষমতা এবং ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি

নতুন টুথব্রাশ দাঁতের মাঝে এবং মাড়ির রেখা বরাবর আরও কার্যকরভাবে পৌঁছে ময়লা, খাদ্যকণা এবং ব্যাকটেরিয়া সরাতে পারে। অন্যদিকে পুরনো ব্রাশে ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, এমনকি ছত্রাক জমে থাকতে পারে, যা মুখের স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলে। তাই টুথব্রাশের নিয়মিত পরিবর্তন শুধু দাঁত নয়, সামগ্রিক মুখগহ্বরের জন্যও অত্যন্ত জরুরি।

মাড়ির স্বাস্থ্য এবং মুখগহ্বরের স্বচ্ছতা

জীর্ণ ব্রিসলস কখনও কখনও মাড়িকে রক্ষা করার বদলে ঘষার কারণে জ্বালা ধরাতে পারে। সঠিক সময়ে ব্রাশ পরিবর্তন করলে মাড়ি রক্ষা হয় এবং মুখগহ্বর সাফ থাকে। নতুন ব্রাশ ব্যবহার করলে মাড়ির রোগ এবং মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধও সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এমন কিছু পরিস্থিতি রয়েছে, যেখানে ৩ মাসের আগেই টুথব্রাশ বদলানো উচিত।

৩ মাসের আগেও টুথব্রাশ বদলানোর প্রয়োজনীয়তা

কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে টুথব্রাশ ৩ মাসের আগে বদলানো প্রয়োজন হতে পারে। যেমন:

অসুস্থতার পরে: ঠান্ডা, ফ্লু বা গলার সংক্রমণের পর পুরনো ব্রাশে জীবাণু থাকতে পারে।

ভাঁজ করা ব্রিসল: যদি ব্রিসল বাইরের দিকে বেঁকে যায়, তা কার্যকরভাবে পরিষ্কার করতে পারবে না।

বাচ্চাদের ব্রাশ: ছোটরা প্রায়ই বেশি জোরে ব্রাশ করে, ফলে তাদের ব্রাশ দ্রুত ক্ষয় হয়।

ম্যানুয়াল বনাম ইলেকট্রিক ব্রাশ হেড: ইলেকট্রিক ব্রাশের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য; প্রতি তিন থেকে চার মাসে হেড পরিবর্তন করা জরুরি।

টুথব্রাশ রক্ষণাবেক্ষণ

ব্রাশ পরিবর্তনের আগে রক্ষণাবেক্ষণও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহারের পর ব্রাশটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন, যাতে টুথপেস্ট এবং ময়লা সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়। বাতাসে শুকোয়ানো যায় এমন জায়গায় রাখুন, বন্ধ পাত্রে নয়, কারণ আর্দ্রতা ব্যাকটেরিয়া জন্ম দিতে পারে। এছাড়া কারও সঙ্গে টুথব্রাশ ভাগ করা উচিত নয়, কারণ এতে জীবাণু ছড়াতে পারে এবং মুখের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং নিয়মিত ব্রাশ পরিবর্তন

টুথব্রাশ হল প্লাক, ক্যাভিটি এবং মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই প্রতি তিন মাস অন্তর—or যদি ব্রিসল ক্ষয় হতে দেখা যায়, তার আগেই—নতুন ব্রাশ ব্যবহার করা উচিৎ। নিয়মিত ব্রাশ পরিবর্তন শুধু দাঁত নয়, মাড়ি, মুখগহ্বর এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Leave a comment