পাটনার চলসা গ্রামের রাজুর জীবন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে, কারণ তার দুটি বিয়েই ভেঙে গেছে। দুবারই স্ত্রীরা প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছেন, যার মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রী গহনা ও অলঙ্কারও নিয়ে গেছেন। পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
পাটনা: বিহারের পাটনা জেলার পারসা বাজার থানা এলাকার ধনুকি চলসা গ্রামের ৪০ বছর বয়সী রাজু কুমারের জীবন সম্প্রতি গ্রামের মানুষের কাছে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কখনও কখনও কারো একটি বিয়ে ভেঙে যাওয়াও আশ্চর্যজনক বলে মনে করা হয়, কিন্তু রাজুর পরপর দুটি বিয়ে ভেঙে যাওয়া এবং উভয় স্ত্রীর প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যাওয়া গ্রামে আলোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছোট্ট মেয়ে ও বাবার ভাঙা স্বপ্ন
রাজু কুমারের প্রথম বিয়ে হয়েছিল বহু বছর আগে। প্রাথমিকভাবে সবকিছু স্বাভাবিক ও সুখের মনে হয়েছিল, কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করে। রাজুর প্রথম স্ত্রী অন্য এক যুবকের সংস্পর্শে আসে এবং একদিন হঠাৎ প্রেমিকের সাথে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
যদিও এই ঘটনা রাজুর বাড়িতে ঝড় তুলেছিল, কিন্তু স্ত্রী তার মেয়েকে রাজুর কাছেই রেখে যান। রাজু এখনও তার মেয়ের সাথেই থাকে এবং গ্রামবাসীদের মতে, এই মেয়েটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় অবলম্বন হয়ে উঠেছে।
দ্বিতীয় বিয়ে থেকে নতুন আশা
প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর রাজু ও তার পরিবার ভেবেছিল যে দ্বিতীয় বিয়ে তার জীবনকে স্থিতিশীল করবে। এই ভাবনা নিয়েই ২০২৫ সালের ১১ই জুলাই রাজুর বিয়ে বৈশালী জেলার ২২ বছর বয়সী এক তরুণীর সাথে ধুমধাম করে হয়।
যদিও এই বিয়েতে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বয়সের বড় পার্থক্য ছিল। প্রথমে বাড়ির লোকেরা ভেবেছিল যে সময়ের সাথে সাথে এই পার্থক্য কমে যাবে এবং সম্পর্ক মজবুত হবে। কিন্তু খুব শীঘ্রই এই নতুন বিয়েতেও সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।
দ্বিতীয় স্ত্রীও প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেল
১৬ই সেপ্টেম্বরের রাতে রাজুর বাড়িতে সেই একই ঘটনা পুনরাবৃত্তি হয় যা প্রথম বিয়েতে ঘটেছিল। পরিবারের মতে, রাতে হঠাৎ দরজার আওয়াজ শোনা যায়। রাজুর বোন বাইরে গিয়ে দেখে যে নতুন বউ একটি বাইকে চড়ে এক যুবকের সাথে যাচ্ছে।
যাওয়ার সময় সে বাড়ির গহনা ও অলঙ্কারও সাথে নিয়ে যায়। পরিবার জানায় যে এর মধ্যে সোনার কানের দুল, বালা, পায়ের মল এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই ঘটনায় পারসা বাজার থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
রাজুর বিতর্কিত ভাবমূর্তি এবং ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের আশা
গ্রামবাসীরা বলছেন যে রাজু জমি কেনাবেচার কাজ করে এবং বহুবার তার নাম বিতর্কের সাথে জড়িয়ে আছে। কিছু লোক মনে করেন যে তার বিতর্কিত ভাবমূর্তি, বয়সের বড় পার্থক্য এবং বিয়েতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব উভয় বিয়ে ভেঙে যাওয়ার প্রধান কারণ।
রাজুর আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীরা এখন এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। কিছু লোক তার সাহসের প্রশংসা করছেন যে সে তার মেয়ের জন্য স্থির আছে, আবার কিছু লোক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং প্রশ্ন তুলছেন যে তার আচরণ ও সিদ্ধান্তই কি উভয় স্ত্রীকে পালাতে বাধ্য করেছে?
পুলিশ তদন্তে নেমেছে
পারসা বাজার থানার পুলিশ মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্ত শুরু করেছে। থানা ইনচার্জের বক্তব্য, অভিযুক্তদের দ্রুত ধরা এবং রাজুর ক্ষতির প্রতিকার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি পরিবার ও গ্রামবাসীদের কাছে আবেদন করেছেন যে কোনো ধরনের গুজব এড়িয়ে চলুন এবং আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করুন।
পুলিশ কর্মকর্তারা আরও বলছেন যে, এই ধরনের ঘটনা সামাজিক ও মানসিকভাবেও গুরুতর হয়, তাই সমাজের এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। রাজুর জীবনে পরপর দুবার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনা এখন পাটনা জেলার মানুষের মধ্যে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।