খারাপ পারফরম্যান্সের জের, পাক ক্রিকেটারদের বেতন কমানোর পথে পিসিবি

খারাপ পারফরম্যান্সের জের, পাক ক্রিকেটারদের বেতন কমানোর পথে পিসিবি

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ক্রমাগত হতাশাজনক। কখনও বাংলাদেশের কাছে হার, তো কখনও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দুর্বল দলগুলোর কাছে পরাজয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।

স্পোর্টস নিউজ: পাকিস্তান ক্রিকেট দল আজকাল মাঠের মধ্যে খুবই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কখনও বাংলাদেশের মতো দলের বিরুদ্ধে পরাজয়, তো কখনও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো কম র‍্যাঙ্কিং-এর দলের কাছে হার – এই ধারা চলতেই থাকছে। দলের এই খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এখন বড় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বোর্ড খুব শীঘ্রই সিনিয়র খেলোয়াড়দের মোটা মাইনে কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। যদি এমনটা হয়, তাহলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বাবর আজম এবং শাহীন শাহ আফ্রিদির মতো বড় নামগুলোর ওপর, যাদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।

কেন অসন্তুষ্ট পিসিবি?

কিছু সময় ধরে পিসিবির অভ্যন্তরে এই আলোচনা চলছিল যে খেলোয়াড়দের দেওয়া বিপুল অঙ্কের চুক্তির দলের পারফরম্যান্সের ওপর কোনও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে না। খেলোয়াড়দের রোজগার তো বাড়ছে, কিন্তু মাঠের ফলাফল ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। বোর্ডের মনে করা হচ্ছে খেলোয়াড়দের প্রধান লক্ষ্য দলের চেয়ে ব্যক্তিগত লাভ বেশি।

এটাই কারণ যে পিসিবি এখন কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে আইসিসি রাজস্বের ৩% অংশ বাদ দেওয়ার কথা ভাবছে। বর্তমানে এই অংশটি খেলোয়াড়দের রোজগারে অন্তর্ভুক্ত থাকে, কিন্তু এটি বাদ গেলে তাদের মাইনে কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত কমে যাবে।

খেলোয়াড়দের রোজগার কতটা কমবে?

বর্তমান কেন্দ্রীয় চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি এবং মাসিক বেতন এই প্রকার:

  • টেস্ট ম্যাচ ফি: প্রায় ১২ লক্ষ টাকা প্রতি ম্যাচ
  • ওয়ানডে ফি: প্রায় ৬ লক্ষ টাকা প্রতি ম্যাচ
  • টি২০ ফি: প্রায় ৪ লক্ষ টাকা প্রতি ম্যাচ

এছাড়াও, খেলোয়াড়দের মাসিক বেতন তাদের শ্রেণি (ক্যাটাগরি) অনুযায়ী দেওয়া হয়:

  • এ ক্যাটাগরি (বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান): ৬.৫৭ লক্ষ টাকা প্রতি মাসে
  • বি ক্যাটাগরি: ৪.৫৫ মিলিয়ন টাকা বার্ষিক
  • সি ক্যাটাগরি: ২.০৩ মিলিয়ন টাকা বার্ষিক
  • ডি ক্যাটাগরি: ১.২৬ মিলিয়ন টাকা বার্ষিক

এই প্যাকেজগুলোর মধ্যে বড় অংশ আইসিসি রাজস্ব (প্রায় ১.০৩৫ মিলিয়ন টাকা) থেকে আসে। যদি পিসিবি এটি বাদ দেয়, তাহলে সব শ্রেণির খেলোয়াড়দের রোজগারে উল্লেখযোগ্য হ্রাস আসবে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি কার?

পিসিবির এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বাবর আজম এবং মহম্মদ রিজওয়ানের, কারণ তারা এ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন। অন্যদিকে, শাহীন শাহ আফ্রিদি এবং শাদাব খানের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়দেরও কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হতে পারে। এটাও উল্লেখযোগ্য যে পিসিবি এইবার খেলোয়াড়দের ওপর খরচ বাড়িয়েছে।

রিটেনারশিপ বাজেট গত বছরের তুলনায় ৩৭% বেড়ে ১,১৭৩ মিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। যদিও, তা সত্ত্বেও খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। বোর্ডের বক্তব্য হল যতক্ষণ না দলের পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে, ততক্ষণ খেলোয়াড়দের মাইনে কোনো রকম বৃদ্ধি সম্ভব নয়।

Leave a comment