নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সাংসদদের বাধা: গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগের বিষয় বললেন সঞ্জয় রাউত

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সাংসদদের বাধা: গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগের বিষয় বললেন সঞ্জয় রাউত

সঞ্জয় রাউত বলেছেন, 'আমরা সাংসদ, সন্ত্রাসী নই। ইন্ডিয়া ব্লকের ৩০০ জনের বেশি সাংসদ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিল, কিন্তু দিল্লি পুলিশ তা বন্ধ করে দিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগের বিষয়।'

নয়াদিল্লি: নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া জোটের (INDIA Bloc) সাংসদদের প্রতিবাদ দিল্লি পুলিশ আটকে দিয়েছে, যার ফলে রাজনৈতিক মহলে আবারও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভগুলির প্রতিনিধিদেরও কি কথা বলা থেকে আটকানো যেতে পারে? ইন্ডিয়া ব্লকের সাংসদরা বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধন (Special Summary Revision - SIR) এবং ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে তাদের দাবি জানাতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু দিল্লি পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের आगे যাওয়া আটকে দেয়। এই ঘটনায় শিবসেনার রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পুলিশের এই আচরণকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন।

সাংসদদের প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের বাধা

ইন্ডিয়া জোটের ৩০০ জনের বেশি সাংসদ বেশ কিছুদিন ধরে নির্বাচন কমিশনের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁরা বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধন এবং ইভিএম, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত ত্রুটির অভিযোগ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা দিল্লির নির্বাচন কমিশন অফিসের বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ সেই প্রতিবাদ আটকে দেয়। দিল্লি পুলিশ কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সাংসদদের आगे যাওয়া আটকাতে ব্যারিকেড लगाয়।

পুলিশের পদক্ষেপে প্রশ্ন তুললেন সঞ্জয় রাউত

এই বিষয়ে শিবসেনার প্রধান নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সংসদের সদস্যরা কি সন্ত্রাসী বা গুণ্ডা যে পুলিশ তাদের ভয় পায়? তিনি বলেন, 'আমরা ভারতের সম্মানিত সাংসদ, এবং আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের বক্তব্য রাখতে যাচ্ছিলাম। আমাদের কাছে কোনো অস্ত্র নেই, আমরা অহিংস। তবুও আমাদের থামানো হল। এটা কি গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান?' সঞ্জয় রাউত আরও বলেন যে, গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার হল সাংসদরা তাঁদের বক্তব্য নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন। কিন্তু যখন দিল্লি পুলিশ সাংসদদেরই আটকে দেয়, তখন তা উদ্বেগের কারণ।

গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারের ওপর সংকট

সঞ্জয় রাউত বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের রাজধানীর গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। তিনি বলেন, 'গণতন্ত্র আমাদের এই অধিকার দিয়েছে যে আমরা আমাদের ভোটাধিকার এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে खुलकर কথা বলতে পারব। যখন সাংসদদেরই কথা বলতে বাধা দেওয়া হয়, তখন তা গণতন্ত্রের জন্য বড় বিপদ।' তাঁর বক্তব্য ছিল যে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে শুধু প্রশ্ন তুলছেন, যা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার।

ভোটার তালিকা, ইভিএম সহ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন

ইন্ডিয়া ব্লকের সাংসদরা বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধন এবং ভোটার লিস্টে গরমিল, ইভিএম মেশিনের বিশ্বাসযোগ্যতা, এবং ‘ভোট চুরি’র অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব চাইছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন যে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নেই এবং এর তদন্ত হওয়া উচিত। 

সঞ্জয় রাউত বলেন, 'আমরা বার বার এই বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি, কিন্তু কেউ সেগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়নি। এখন যখন আমরা आवाज তুলব, তখন আমাদের থামানো হচ্ছে কেন?'

রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বৃদ্ধি

দিল্লি পুলিশের এই পদক্ষেপের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো এটিকে গণতন্ত্র ও সংসদের অবমাননা বলে উল্লেখ করেছে। অনেক নেতাই পুলিশের এই পদক্ষেপকে ভুল বলে অভিহিত করেছেন এবং কেন্দ্র সরকারের কাছে এই বিষয়ে স্পষ্ট জবাব চেয়েছেন। वहीं, সরকার বলেছে যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা তাদের প্রধান কাজ এবং কাউকে নিয়মের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না।

ইন্ডিয়া ব্লকের সাংসদদের দাবি, নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতা বাড়াক এবং সমস্ত অভিযোগের निष्पक्ष তদন্ত হোক। তাঁরা চান নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে निष्पक्ष এবং সুরক্ষিত হোক, যাতে প্রত্যেক নাগরিকের ভোট সত্যিকারের অর্থে মূল্যবান হয়। সাংসদরা বলেছেন যে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের আওয়াজ তুলতে থাকবেন এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা করবেন।

Leave a comment