Psoriasis: ভয়ঙ্কর ত্বকের অসুখ ‘সোরিয়াসিস’, কোন খাবারে বাড়ে ঝুঁকি? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত

Psoriasis: ভয়ঙ্কর ত্বকের অসুখ ‘সোরিয়াসিস’, কোন খাবারে বাড়ে ঝুঁকি? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত

ত্বকের অন্যতম জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ ‘সোরিয়াসিস’। এটি কোনও সংক্রামক রোগ নয়, তবে শরীরের ইমিউন সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দিলে ত্বকে গোলাকার, খসখসে দাগ, চুলকানি ও প্রদাহ দেখা দেয়। আক্রান্ত অংশে আঁশের মতো খোসা উঠতে থাকে, অনেক সময় রক্ত বা পুঁজও বের হয়। এই অসুখে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই জানেন না—খাদ্যাভ্যাসই কখনও কখনও এই রোগের উপসর্গকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

বিশ্বজুড়ে সোরিয়াসিসের ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO, 2023) ও ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ সোরিয়াসিস অ্যাসোসিয়েশনস (IFPA)-এর তথ্য বলছে, বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ২–৩% মানুষ সোরিয়াসিসে আক্রান্ত। অর্থাৎ প্রায় ১২.৫ কোটিরও বেশি মানুষ এই অসুখে ভুগছেন।যদিও এটি সরাসরি খাদ্যজনিত নয়, তবুও বিশেষ কিছু খাবার শরীরে প্রদাহ বাড়িয়ে ত্বকের অবস্থা খারাপ করতে পারে।

অতিরিক্ত কফি ও ক্যাফেইনের প্রভাব

প্রতিদিন সীমিত পরিমাণে (দুই–তিন কাপ) কফি উপকারী হলেও, অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে স্ট্রেস হরমোন বাড়িয়ে দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক চাপ সোরিয়াসিসের অন্যতম ট্রিগার। অনেক রোগী জানিয়েছেন, কফি বা চা কমানোর পর তাঁদের উপসর্গে উন্নতি হয়েছে। কারণ, ক্যাফেইন ঘুমের গুণমান নষ্ট করে ও উদ্বেগ বাড়ায়, যা সরাসরি ইমিউন প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।

চকোলেট—চিনি ও চর্বির ফাঁদ

চকোলেট নিজে সোরিয়াসিসের কারণ নয়, কিন্তু এতে থাকা অতিরিক্ত চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রদাহ বৃদ্ধি করে।

এই বাড়তি ইনফ্ল্যামেশন ত্বকের কোষ উৎপাদনের গতি বাড়ায়, ফলে চুলকানি ও খোসা ওঠা আরও বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ডার্ক চকোলেট তুলনামূলকভাবে নিরাপদ, কারণ এতে চিনি কম থাকে। তবে প্রক্রিয়াজাত মিষ্টি খাবার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।

ঝাল খাবারের লুকোনো বিপদ

ঝাল খাবারের মূল উপাদান ক্যাপসাইসিন, যা শরীরে হিস্টামিন নিঃসরণ বাড়ায়। এতে ত্বকে জ্বালা, লালচেভাব ও প্রদাহ দেখা দেয়।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যাপসাইসিন TRPV1 রিসেপ্টর সক্রিয় করে, যা ইমিউন সিস্টেমে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

ফলে সোরিয়াসিসের দাগ ও জ্বালা দ্রুত বেড়ে যায়। এছাড়া ঝাল খাবার মানসিক চাপ ও উদ্বেগও বাড়াতে পারে, যা এই অসুখের অন্যতম কারণ।

কোন খাবার হতে পারে উপকারী

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুষম ও প্রদাহনাশক খাবার সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে—

ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ (স্যালমন, সারডিন)

প্রচুর ফল, সবজি ও আঁশযুক্ত খাদ্য

গ্লুটেন-মুক্ত শস্য

পর্যাপ্ত জল পান

মানসিক প্রশান্তির জন্য যোগ ও মেডিটেশন

এগুলো ত্বকের কোষের ভারসাম্য রক্ষা করে ও ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।

সোরিয়াসিস একটি প্রদাহজনিত ত্বকের রোগ, যা বিশ্বের প্রায় ১২ কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যাভ্যাস এই অসুখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। অতিরিক্ত কফি, চকোলেট ও ঝাল খাবার সোরিয়াসিসের উপসর্গ বাড়াতে পারে। তবে সুষম খাদ্য ও মানসিক প্রশান্তিই এর মোকাবিলার সেরা উপায়।

Leave a comment