ডেন্টাল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি ৩-৪ মাসে টুথব্রাশ পরিবর্তন করা জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে একই ব্রাশ ব্যবহার করলে এতে ব্যাকটেরিয়া জমে যায়, যা থেকে মাড়ির সংক্রমণ, মুখের দুর্গন্ধ এবং ক্যাভিটির ঝুঁকি বাড়ে। পুরনো ব্রিসলস দাঁতও ঠিকমতো পরিষ্কার করতে পারে না এবং মাড়ির ক্ষতি করতে পারে।
Oral Health tips: আমরা সবাই প্রতিদিন দাঁত পরিষ্কার করার জন্য টুথব্রাশ ব্যবহার করি, কিন্তু সময়মতো এটি পরিবর্তন না করলে এটি বিপজ্জনক হতে পারে। ডেন্টাল বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ৩-৪ মাসে একটি নতুন টুথব্রাশ ব্যবহার করা জরুরি। পুরনো ব্রাশ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের আখড়া হয়ে ওঠে, যা থেকে মাড়ির সংক্রমণ, মুখের দুর্গন্ধ এবং দাঁতের ক্ষয়-এর মতো সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে ফ্লু বা ঠান্ডার পরেও টুথব্রাশ পরিবর্তন করা উচিত, যাতে সংক্রমণ পুনরায় না ছড়ায়।
পুরানো টুথব্রাশ কেন বিপজ্জনক?
দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা ব্রাশ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের আখড়া হয়ে ওঠে। দাঁত পরিষ্কার করার সময় খাবারের ছোট টুকরা, লালা এবং শ্লেষ্মা ব্রিসলসের মধ্যে আটকে যায়। ধীরে ধীরে এর উপর ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে। যখন আপনি এই ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করেন, তখন সেই ব্যাকটেরিয়াগুলো আবার আপনার মুখে চলে যায়। এর থেকে মাড়িতে সংক্রমণ, দাঁতের ক্ষয় এবং মুখের দুর্গন্ধের মতো সমস্যা শুরু হতে পারে।
ব্রিসলসের অবস্থা দেখে বুঝুন
পুরানো টুথব্রাশ শুধু ময়লার আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে তাই নয়, এর ব্রিসলসও খারাপ হতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলো বাঁকা হয়ে যায়, ভেঙে যেতে শুরু করে বা খুব শক্ত হয়ে যায়। এই ধরনের ব্রিসলস দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে পারে না। অনেক সময় এগুলো মাড়িতে আঘাতও করতে পারে। শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ তাদের মাড়ি আগে থেকেই সংবেদনশীল থাকে।
কখন বুঝবেন যে টুথব্রাশ পরিবর্তন করা জরুরি
যদি আপনার ব্রাশ তিন-চার মাসের বেশি পুরনো হয়, তবে এটি অবিলম্বে পরিবর্তন করা উচিত। এছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ রয়েছে যা দেখে বোঝা যায় যে এখন নতুন ব্রাশ কেনার সময় এসে গেছে। যেমন ব্রিসলস বাঁকা হয়ে যাওয়া, টুথব্রাশ থেকে দুর্গন্ধ আসা বা ব্রাশ করার পরেও মুখ পরিষ্কার মনে না হওয়া।
ঠান্ডা-কাশির পর পুরনো ব্রাশ ব্যবহার করবেন না
ডাক্তাররা বলছেন, যদি সম্প্রতি আপনার ফ্লু, ঠান্ডা বা গলার সংক্রমণ হয়ে থাকে, তাহলে সেই সময় ব্যবহার করা টুথব্রাশ ফেলে দেওয়া উচিত। কারণ, রোগের সময় ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া ব্রাশের উপর লেগে থাকতে পারে। যদি আপনি সেই ব্রাশটি পুনরায় ব্যবহার করেন, তাহলে রোগটি আবার ফিরে আসতে পারে।
টুথব্রাশের যত্ন কিভাবে নেবেন
ভালো ব্রাশ তখনই কার্যকর হবে যখন তার সঠিক যত্ন নেওয়া হবে। ব্রাশ করার পরে এটি ভালোভাবে ধুয়ে শুকানো জরুরি। ভেজা টুথব্রাশ রাখলে তার উপর ব্যাকটেরিয়া দ্রুত জন্মাতে পারে। ব্রাশ সবসময় খাড়া করে রাখুন এবং চেষ্টা করুন এটিকে ঢেকে রাখার জন্য, যাতে ধুলো এবং জীবাণু না লাগে।
শিশুদের টুথব্রাশের প্রতি বেশি মনোযোগ দেওয়া জরুরি
শিশুরা প্রায়ই ব্রাশ চিবোতে শুরু করে, যার ফলে ব্রিসলস দ্রুত খারাপ হয়ে যায়। অনেক সময় শিশুরা ব্রাশ এখানে-সেখানে ফেলে দেয়, যার ফলে তার উপর ধুলো এবং জীবাণু লেগে যায়। তাই শিশুদের টুথব্রাশ সময়-সময় পরিবর্তন করা এবং পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি।
শুধু ব্রাশ পরিবর্তন করাই যথেষ্ট নয়
মুখের স্বাস্থ্য মানে শুধু ব্রাশ করা নয়। সঠিক ব্রাশ করার কৌশল, ফ্লস ব্যবহার করা এবং সুষম খাদ্যও ততটা জরুরি। যদি আপনি নিয়মিত ব্রাশ পরিবর্তন করেন কিন্তু দাঁত সঠিক উপায়ে পরিষ্কার না করেন, তাহলে সমস্যা থেকেই যেতে পারে।
ডেন্টাল বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি তিন থেকে চার মাসে ব্রিসলসের শক্তি কম হতে শুরু করে। দাঁতের পরিচ্ছন্নতা ততটা কার্যকর থাকে না। এছাড়াও, এই সময়ের মধ্যে ব্রাশের উপরে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া জমা হয়। এই কারণেই ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনগুলোও একই নিয়ম দেয় যে টুথব্রাশ প্রতি ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে পরিবর্তন করা উচিত।