ওড়িশার পুরীতে শুক্রবার থেকে ভগবান জগন্নাথের ঐতিহাসিক রথযাত্রা মহোৎসব শুরু হয়েছে। এই উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্ত পুরীতে সমবেত হয়েছেন। এবারের যাত্রায় দেশের প্রধান শিল্পপতি গৌতম আদানিও পরিবার সহ যোগ দিয়েছেন। তিনি তাঁর স্ত্রী প্রীতি আদানি এবং পুত্র করণ আদানির সঙ্গে ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার দর্শন করতে পুরীতে আসেন।
গৌতম আদানি দু'দিন ধরে পুরীর ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন এবং এই আস্থার মহাযজ্ঞের অংশ হবেন। আদানি পরিবারের এই যাত্রা কেবল শ্রদ্ধার পরিচয় দেয়নি, বরং সেবার মনোভাবও প্রকাশ করেছে।
আদানি গ্রুপের প্রসাদ সেবার উদ্যোগ
এ বছর আদানি গ্রুপ রথযাত্রার সময় ভক্তদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে 'প্রসাদ সেবা'র সূচনা করেছে। এই সেবা ২৬ জুন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত চলবে, যার অধীনে রথযাত্রায় আগত ভক্তদের মধ্যে খাদ্য ও প্রসাদ বিতরণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন এবং শ্রীজগন্নাথ মন্দির কমিটি আদানি গ্রুপের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে। এটিকে একটি ইতিবাচক কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে একটি শিল্প গোষ্ঠী আস্থার সঙ্গে জড়িত অনুষ্ঠানে জনসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে প্রসাদ তৈরি
গৌতম আদানি এবং তাঁর স্ত্রী প্রীতি আদানি রথযাত্রার দিন মন্দিরে গিয়ে যথাযথভাবে পূজা-অর্চনা করেন। আদানি দম্পতি ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার দর্শন করেন এবং মন্দির চত্বরে ঐতিহ্যপূর্ণ রীতিতে প্রসাদও তৈরি করেন।
এ সময় মন্দির প্রাঙ্গণে 'জয় জগন্নাথ'-এর ধ্বনি শোনা যায়। বিপুল সংখ্যক ভক্ত আদানি পরিবারের এই ভক্তি ও সেবার মনোভাব দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মন্দির প্রশাসন আদানি গ্রুপের এই অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বলেছে যে এটি আস্থা ও সেবার এক अद्भुत মিলনস্থল।
भव্য রথযাত্রা
পুরীর এই ঐতিহাসিক রথযাত্রা প্রতি বছর ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার রথ টানার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়। ভক্তরা এই রথগুলি টেনে গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত নিয়ে যান, যেখানে দেবতারা সাত দিন বিশ্রাম করেন। এরপর তিন দেবতা তাঁদের মূল মন্দিরে ফিরে আসেন।
এ বছরও রথযাত্রায় লক্ষ লক্ষ ভক্ত অংশ নিয়েছেন এবং সারা পুরী শহরে 'জয় জগন্নাথ'-এর ধ্বনি শোনা গেছে। এই আয়োজন ভারতীয় সংস্কৃতি, ভক্তি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা
ভক্তদের বিশাল ভিড় নজরে রেখে পুরী প্রশাসন নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা করেছে। প্রায় ১০,০০০ নিরাপত্তা কর্মী, যাদের মধ্যে CAPF-এর আটটি কোম্পানি, ওড়িশা পুলিশ, হোমগার্ড এবং স্পেশাল ফোর্সের সদস্য বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।
ড্রোন এবং সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে পুরো রথ পথের উপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রশাসন জানিয়েছে যে ভক্তদের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং যেকোনো ধরনের জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।