২০১৮ সালের কথিত মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধী ৬ই অগাস্ট চাইবাসা কোর্টে হাজিরা দেন। আদালত তাঁকে জামিন মঞ্জুর করে। বিজেপি নেতা প্রতাপ কাটিয়ার এই মামলা দায়ের করেছিলেন।
Rahul Gandhi Jharkhand Case: কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী ৬ই অগাস্ট ঝাড়খণ্ডের চাইবাসায় অবস্থিত এমপি-এমএলএ বিশেষ আদালতে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দিয়ে একটি পুরনো মানহানির মামলায় তাঁর উপস্থিতি জানান। এই মামলাটি ২০১৮ সালের, যখন রাহুল গান্ধী कथितভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির তৎকালীন জাতীয় সভাপতি অমিত শাহকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন। এই বিবৃতির জন্য বিজেপি নেতা প্রতাপ কাটিয়ার রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন।
আদালত সমন জারি করেছিল
চাইবাসা আদালত রাহুল গান্ধীকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করেছিল। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছিল যে, এই মামলার পরবর্তী শুনানির আগে তাঁর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এই নির্দেশের অনুপালনে রাহুল গান্ধী ৬ই অগাস্ট সকাল ১১টায় আদালতে পৌঁছন এবং প্রায় আধ ঘণ্টার প্রক্রিয়া শেষে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
আদালত থেকে জামিন
রাহুল গান্ধী আদালতে হাজিরা দিয়ে তাঁর জামিনের আবেদন করেন, যা আদালত মঞ্জুর করেছে। আদালত তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে। যদিও এখনও মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়নি, তবে আইনি প্রক্রিয়া জারি থাকবে।
প্রশাসন ও দলের প্রস্তুতি
রাহুল গান্ধীর চাইবাসা সফর উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক স্তরে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। টাটা কলেজ ময়দানে একটি বিশেষ হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়, যেখানে তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণ করে। হেলিপ্যাডের চারপাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, কংগ্রেস পার্টিও আদালতের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সময় মতো প্রস্তুত করে রেখেছিল।
প্রশাসনের তরফে চাইবাসার उपायुक्त আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ জারি করেন। রাহুল গান্ধীর আদালতে হাজিরা দেওয়া উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও যান চলাচল ব্যবস্থাপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বিজেপি নেতা প্রতাপ কাটিয়ারের প্রতিক্রিয়া
মানহানির মামলা দায়েরকারী বিজেপি নেতা প্রতাপ কাটিয়ার বলেন যে, সকলেরই আদালতের প্রক্রিয়াকে সম্মান করা উচিত। তিনি আরও বলেন যে, রাহুল গান্ধীর মতো একজন বর্ষীয়ান নেতার আদালতের সমন পেয়ে সময় মতো হাজিরা দেওয়া উচিত ছিল। প্রতাপ কাটিয়ার আশা প্রকাশ করেন যে, এখন এই মামলা আইনের আওতায় থাকবে এবং যে সিদ্ধান্তই আসুক, সকলেরই তা সম্মান করা উচিত। তিনি বলেন যে, আদালত একটি সাংবিধানিক সংস্থা এবং এর উপরে কেউ নেই।
এই মামলাটি শুধুমাত্র একটি আইনি প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের দায়বদ্ধতা এবং সাংবিধানিক সংস্থাগুলির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিষয়ও বটে। রাহুল গান্ধীর আদালতে হাজিরা দেওয়া এটাই প্রমাণ করে যে, গণতন্ত্রে সকল নাগরিক এবং নেতারাই আইনের অধীনে, তাঁরা যে পদেই থাকুন না কেন।
আদালতে হাজিরা দেওয়ার প্রক্রিয়া
রাহুল গান্ধী সকালে হেলিকপ্টারে টাটা কলেজ ময়দানে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তিনি সড়কপথে এমপি-এমএলএ কোর্টে পৌঁছন। আদালতে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে তাঁর উপস্থিতি জানান এবং জামিনের আবেদন করেন। পুরো প্রক্রিয়াটি প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয়, এরপর তিনি দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান।