নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধী মিছিলে রাহুল গান্ধী আটক, পরে মুক্তি

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধী মিছিলে রাহুল গান্ধী আটক, পরে মুক্তি

দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধী মিছিলের সময় রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং 200 জনের বেশি নেতাকে আটক করা হয়েছিল। পরে সকল নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়। ভোটার তালিকা নিয়ে বিক্ষোভে সরব হন বিরোধীরা।

SIR Protest: নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিহারে বিক্ষোভ এখন দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছেছে। সংসদের বাদল অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী দলগুলি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ময়দান খোলে এবং রাজধানীর রাস্তায় মিছিল করে। এই বিক্ষোভের সময় দিল্লি পুলিশ রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং অন্যান্য অনেক নেতাসহ 200 জনের বেশি লোককে আটক করে। পরে সকল নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

বিরোধীপক্ষের মিছিল: সংসদ থেকে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত

বিরোধীপক্ষের এই মিছিল সংসদের মকর দ্বার থেকে শুরু হয়ে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতর পর্যন্ত যায়। এই মিছিলটি স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন (SIR)-এর বিরুদ্ধে ছিল, যা বিহারে লাগু করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়ার অধীনে অনেক লোকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে আসন্ন 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে ভোট চুরি হতে পারে।

রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা সহ অনেক নেতার গ্রেপ্তার

মিছিল চলাকালীন দিল্লি পুলিশ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব এবং অন্যান্য বিরোধী নেতাদের আটক করে। দিল্লি পুলিশ এটিকে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় বলে জানিয়েছে। আটক হওয়া নেতাদের নিকটবর্তী থানাগুলিতে রাখা হয়েছিল, যেখান থেকে পরে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

আটকের পর রাহুল গান্ধী বলেন, এটা রাজনৈতিক নয়, সংবিধানের লড়াই। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে দেশের পরিষ্কার ও অবাধ ভোটার তালিকা প্রয়োজন, যা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে।

টিএমসি সাংসদ মিতালী বাগের শরীর খারাপ

বিরোধী দলের বিক্ষোভের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মিতালী বাগ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান। একই সময়ে, সাংসদ মহুয়া মৈত্ররও শরীর খারাপ হয়। রাহুল গান্ধী তৎক্ষণাৎ তাঁদের সাহায্য করেন এবং হাসপাতালে পাঠান। এই ঘটনা বিক্ষোভের চাপ ও ভিড়ের মধ্যে ঘটে, যা প্রতিবাদের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

ব্যারিকেড টপকে মিছিলে যোগ দিলেন অখিলেশ যাদব

বিরোধী দলের মিছিলের জন্য পুরো রাস্তায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। অনেক জায়গায় ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব ব্যারিকেড টপকে এগিয়ে যান। তাঁর এই পদক্ষেপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এবং পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে। এই ঘটনা বিরোধীদের দৃঢ় সংকল্পকে তুলে ধরে।

পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বিরোধিতার আইনি দিক

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে যে এই বিক্ষোভের জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে ধর্না ও বিক্ষোভের জন্য যন্তর-মন্তরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বিরোধীরা সংসদ থেকে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে যে আটক হওয়া সকল নেতাকে শীঘ্রই মুক্তি দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধীদের বড় অভিযোগ

বিরোধীদের অভিযোগ, বিহারে নির্বাচন কমিশন স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশনের নামে ভোটার তালিকা থেকে অনেক লোককে বাদ দিয়েছে। এতে 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে ‘ভোট চুরির’ আশঙ্কা বেড়েছে। বিরোধীরা চায় নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করুক যাতে গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকে।

মিছিলে অংশ নেওয়া অন্যান্য বিশিষ্ট নেতারা

এই মিছিলে কংগ্রেস ছাড়াও এসপি, বিএসপি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলের অনেক সাংসদ ও নেতা অংশ নেন। ডিম্পল যাদব সহ অনেক প্রবীণ নেতাও এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিরোধী জোটের এই পদক্ষেপ আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।

সংসদ থেকে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতর প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে। বিরোধী দলের সাংসদরা কর্তব্য পথ এবং রায়সেনা রোড হয়ে এই মিছিল করেন। এই রাস্তাটি নয়াদিল্লির প্রধান সরকারি ও প্রশাসনিক ভবনের পাশ দিয়ে গেছে, তাই নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

Leave a comment