স্যার ক্রিক: প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বিজয়া দশমীর দিন ভূজ মিলিটারি বেসে বলেছেন, স্বাধীনতার ৭৮ বছর পর স্যর ক্রিক এলাকায় সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে পাকিস্তান ওই এলাকায় সামরিক পরিকাঠামো বৃদ্ধি করেছে, যা রীতিমতো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভারত আলোচনার পথ বেছে নিয়েছিল, কিন্তু ফলাফল সন্তোষজনক নয়। তাই যদি পাকিস্তান স্যর ক্রিকে কোনও দমনাত্মক বা অগ্রিম পদক্ষেপ নেয়, তাহলে “এমন মোক্ষম জবাব” দেওয়া হবে যে ইতিহাস ও ভূগোল পাল্টে যেতে পারে—এমন সতর্কতা উচ্চ স্বরে বলা হয়েছে।
ভেজালবিহীন হুঁশিয়ারি: কী বললেন রাজনাথ
বিজয়া দশমীর প্রসঙ্গে ভূজ মিলিটারি বেসে উপস্থিত রাজনাথ সিং বলেন, স্যর ক্রিকে পাকিস্তান সামরিক অবকাঠামো বাড়াচ্ছে—এটি স্বতঃসিদ্ধ নয়। তিনি আরও যোগ করেন, “ভারত একাধিকবার আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে, কিন্তু পাকিস্তানের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।” রাজনাথের বক্তব্যে কড়া বার্তা স্পষ্ট—সীমান্তে যে কোনও উত্তেজনাকে সম্পূর্ণ চোখে দেখা হবে না।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ভৌগোলিক বিবরণ
স্যর ক্রিক হচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ জলপথ, যা গুজরাটের কচ্ছ ও পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশকে আলাদা করে। ব্রিটিশ শাসনকালে এই খালকে স্যর ক্রিক বলা হয়। ভারত দাবি করে সীমান্ত লাইন ঠিক মধ্যবর্তী হওয়া উচিত; পাকিস্তান পূর্ব তীরে লাইন দাবি করেছে। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালেও এ বিষয়ে পাকিস্তানের দাবি পাননি—তার পরেও নিয়তি জট সরেনি।
অপারেশন সিঁদুরের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন মন্ত্রী
রাজনাথ সিং উল্লেখ করেছেন, অপারেশন সিঁদুরের সময় পাক সেনা স্যর ক্রিকে ঢুকতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়।তিনি বলেন ১৯৬৫ সালের ঐতিহাসিক অভিযানের স্মৃতি টাটকা রেখে বলেন—ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রয়োজনে লাহোর পর্যন্ত পৌঁছানোর সক্ষমতা দেখিয়েছিল। তাঁর ভাষায়, ২০২৫-এ দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে মনে রাখা উচিত যে করাচি যাওয়ার একটা রুট স্যর ক্রিক দিয়েই যায়।
সামরিক-নৈতিক প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক চাপে সম্ভাব্য প্রভাব
রাজনাথের এই কড়া বক্তব্য কেবল সামরিক ব্যর্থতার কথা স্মরণ করাচ্ছে না—এটি কূটনৈতিক পটভূমিতেও চাপ বাড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্ত্রীর ভাষা যদি স্থলভূমি-নৌপথে কড়া পদক্ষেপের সংকেত হয়ে ওঠে, তা ইরোপীয়/আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী হবে, সেটিও এখন নজরকাড়া ইস্যু।
প্রতিক্রিয়া ও স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিধ্বনি
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এবং সামরিক বিশ্লেষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মন্ত্রীকে সমর্থন করে বলছেন, কড়া সঙ্কেত প্রয়োজনীয়; আবার অনেকে কূটনৈতিক আলোচনা ত্বরান্বিত করার পক্ষে। পাক দিক থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও তেমন প্রকাশ পায়নি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বিজয়া দশমীতে ভূজ মিলিটারি বেস থেকে বলেছেন, স্যর ক্রিকে পাকিস্তানের সামরিক পরিকাঠামো বাড়ালে ভারতের কড়া জবাব দেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছেন, সীমান্ত আলোচনার পরও পাকিস্তানের উদ্দেশ্য অস্পষ্ট থাকলে দেশ প্রতিরক্ষা কাজে সবসময় প্রস্তুত থাকবে।