জিও আইপিও: বাজারে আসছে রিলায়েন্সের টেলিকম ইউনিট, টার্গেট ₹52,200 কোটি

জিও আইপিও: বাজারে আসছে রিলায়েন্সের টেলিকম ইউনিট, টার্গেট ₹52,200 কোটি
সর্বশেষ আপডেট: 5 ঘণ্টা আগে

রিলায়েন্স জিও-এর আইপিও নিয়ে সংস্থা ব্যাংক ও সেবির সাথে আলোচনা শুরু করেছে। রিলায়েন্স জিও ইনফোকমে প্রায় 5% অংশীদারিত্ব বিক্রির পরিকল্পনা করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া এই মাসের শেষ নাগাদ শুরু হতে পারে এবং আইপিও 2026 সালের প্রথম অর্ধে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Reliance Jio IPO: রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের টেলিকম ইউনিট জিও ইনফোকম লিমিটেডের আইপিও নিয়ে ব্যাংক এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির সাথে আলোচনা শুরু করেছে। সংস্থাটি 5% অংশীদারিত্ব বিক্রির অনুমোদন চাইছে, যা থেকে প্রায় 52,200 কোটি টাকা সংগ্রহ করার আশা করা হচ্ছে, যা ভারতের বৃহত্তম আইপিও হতে পারে। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া অক্টোবরের শেষ নাগাদ শুরু হবে এবং নভেম্বরে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকারদের নিয়োগ হতে পারে। আইপিও 2026 সালের প্রথম অর্ধে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রিলায়েন্স প্রস্তুতি শুরু করেছে

ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তাদের ইউনিট রিলায়েন্স জিও ইনফোকমের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি বড় ব্যাংকের সাথে কথা বলেছে। সংস্থাটি নভেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার নিয়োগ করতে পারে। বর্তমানে আলোচনা চলছে এবং এর ভিত্তিতেই আইপিও-এর আকার ও উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

সূত্রের খবর, রিলায়েন্স বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির সাথেও আলোচনা শুরু করেছে যাতে জিও ইনফোকমে 5 শতাংশ অংশীদারিত্ব বিক্রির অনুমতি নেওয়া যায়। যদি সেবির অনুমোদন পাওয়া যায়, তবে এটি ভারতীয় শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পাবলিক অফার হবে।

52,200 কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা

আগের রিপোর্ট অনুযায়ী, রিলায়েন্স জিও তাদের আইপিও-এর মাধ্যমে প্রায় 52,200 কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় 6 বিলিয়ন ডলার সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে। সংস্থার লক্ষ্য হল জিওকে আলাদাভাবে তালিকাভুক্ত করে বিনিয়োগকারীদের সরাসরি এতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি সম্প্রতি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা (AGM)-তে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে জিও-এর আইপিও আগামী বছর, অর্থাৎ 2026 সালের প্রথম অর্ধে চালু হতে পারে।

যদি এই পরিকল্পনা সফল হয়, তবে জিও-এর আইপিও দেশের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ইস্যু হতে পারে। এটি হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়া-এর প্রস্তাবিত 28,000 কোটি টাকার আইপিও-এর থেকেও দ্বিগুণ বড় হবে।

সেবি থেকে প্রাপ্ত ছাড়ের কারণে আকার পরিবর্তিত হবে

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনো সংস্থাকে তালিকাভুক্তির তিন বছরের মধ্যে কমপক্ষে 25 শতাংশ পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং বজায় রাখতে হয়। কিন্তু রিলায়েন্সের বক্তব্য যে, বর্তমান বাজারে এত বড় অংশীদারিত্বের অফার শোষণ করার জন্য পর্যাপ্ত তারল্য (লিকুইডিটি) নেই। এই কারণেই সংস্থাটি সেবির কাছে ছোট অংশীদারিত্ব বিক্রির অনুমতি চেয়েছে যাতে বাজারের উপর চাপ না পড়ে।

সেবি সম্প্রতি নিয়ম সংশোধন করে বড় সংস্থাগুলিকে স্বস্তি দিয়েছে। এখন তারা তাদের আইপিও-তে ন্যূনতম 5 শতাংশের পরিবর্তে কেবল 2.5 শতাংশ অংশীদারিত্ব বিক্রি করতে পারবে। এই পরিবর্তনের সরাসরি সুবিধা রিলায়েন্স জিও পাবে।

নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী যদি রিলায়েন্স কেবল 2.5 শতাংশ অংশীদারিত্ব বিক্রি করে, তবে জিও-এর আইপিও-এর আকার প্রায় 30,000 কোটি টাকায় নেমে আসবে। অর্থাৎ, পূর্বে আনুমানিক 52,200 কোটি টাকার তুলনায় এটি প্রায় অর্ধেক হবে।

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেড়েছে আগ্রহ

রিলায়েন্স জিও ভারতের বৃহত্তম টেলিকম সংস্থা, যার 45 কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। সংস্থাটি 5জি পরিষেবাগুলির দ্রুত সম্প্রসারণের কাজ করছে এবং দেশের প্রতিটি অংশে তার নেটওয়ার্কের পরিধি শক্তিশালী করছে। এমন পরিস্থিতিতে এর আইপিও নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দারুণ উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রিলায়েন্স জিও-এর তালিকাভুক্তি ভারতীয় শেয়ারবাজারে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করবে। বিনিয়োগকারীরা একটি শক্তিশালী এবং দ্রুত বর্ধনশীল ডিজিটাল সংস্থায় বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি, রিলায়েন্সও তাদের ডিজিটাল ব্যবসাকে আরও প্রসারিত করার জন্য পুঁজি সংগ্রহ করতে সহায়তা পাবে।

কবে আসবে জিও-এর আইপিও

রিপোর্ট অনুযায়ী, জিও-এর আইপিও আগামী বছর 2026 সালের প্রথম অর্ধে চালু হতে পারে। তবে, চূড়ান্ত তারিখ এবং সঠিক আকার বাজারের অবস্থা, সেবির অনুমোদন এবং ব্যাংকারদের পরামর্শের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। বর্তমানে রিলায়েন্সের দল আইপিও প্রক্রিয়ার কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত রয়েছে।

যদি এই আইপিও সফল হয়, তবে এটি ভারতের পুঁজিবাজারে একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করবে এবং জিওকে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসাবে নতুন পরিচিতি এনে দেবে।

Leave a comment