মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলা থেকে একটি গা শিউরানো ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে, এক কৃষক পারিবারিক বিবাদের জেরে তার স্ত্রীকে খুন করে, এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য তাকে ক্ষেতে পুঁতে তার উপরে সবজির চাষ করে। এরপর অভিযুক্ত তার নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। প্রায় ন' মাস চেষ্টার পর পুলিশ তাকে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ থেকে গ্রেফতার করেছে।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি রেওয়া জেলার সোহাগী থানা এলাকার জেল রোড এলাকার, যেখানে ৫৯ বছর বয়সী দেবমুনি মাঝি তার স্ত্রী রামবতী মাঝি এবং মেয়ের সাথে বাস করত। দেবমুনি সবজির চাষ করত, যেখানে স্ত্রী এবং মেয়েও সাহায্য করত। কিন্তু একদিন পারিবারিক বিবাদ এতটাই বেড়ে যায় যে তা হত্যা পর্যন্ত গড়ায়।
কীটনাশক প্রয়োগে মৃত্যু
এসডিওপি উদিত মিশ্রের মতে, দেবমুনি তার স্ত্রীকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যা করে। এরপর সে মৃতদেহটি ক্ষেতের মধ্যে গর্ত করে পুঁতে দেয়। যাতে কেউ সন্দেহ না করে, সে কবরের উপর ট্রাক্টর চালিয়ে সবজির ফসল তুলে ফেলে এবং কবরটি ঢেকে দেয়। ঘটনার পরে, অভিযুক্ত তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ১১ অক্টোবর, ২০২৪-এর বলে জানা গেছে। রামবতী নিখোঁজ হওয়ার পরে, তার ছেলে অভিলাষ মাঝি ক্ষেতে যায়। মায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, বোন জানায় যে তিনি প্রয়াগরাজে গিয়েছেন। অনেক দিন ধরে রামবতীর কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবারের সদস্যরা সোহাগী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে।
৯ মাস পর এভাবে রহস্যের উন্মোচন
পুলিশ তদন্তের সময় ক্ষেত খনন করে রামবতীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এরপর বিষয়টি হত্যা মামলায় পরিবর্তিত হয় এবং পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজে নামে। লাগাতার প্রযুক্তিগত নজরদারি এবং তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অবশেষে অভিযুক্ত দেবমুনিকে প্রয়াগরাজের ঘুরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে তার অপরাধ স্বীকার করেছে। পুলিশ তাকে আদালতে পেশ করে জেলে পাঠিয়েছে। এছাড়াও, ঘটনার সময় ব্যবহৃত ট্রাক্টরটিও জব্দ করা হয়েছে।
২০ হাজারের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল
ডিআইজি রেওয়া জোন দেবমুনির গ্রেফতারের জন্য ২০ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। ঘটনাটি সামনে আসার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষ ঘটনাটি নিয়ে হতবাক। পুলিশ এখন এই মামলার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি দিক গভীরভাবে তদন্ত করছে, যাতে পুরো ঘটনার সূত্রগুলো খুঁজে বের করা যায়।
পারিবারিক বিবাদ কতটা ভয়ংকর হতে পারে, রেওয়ার এই ঘটনা তার একটি ভয়ঙ্কর উদাহরণ। ক্ষেতে কাজ করা স্ত্রীর কবর সেই ক্ষেতেই তৈরি করা এবং তার উপরে সবজি চাষ করে ঘটনাটি গোপন করার চেষ্টা পুরো এলাকাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশের সতর্কতা এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলা তদন্তের পর অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পুলিশ মেয়ের অবস্থা এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য বিষয়গুলি নিয়েও কাজ করছে।