সংসদের মৌসুমি অধিবেশন ২১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। বিরোধী দল ‘অপারেশন সিন্দুর’ এবং সুরক্ষা বিষয়ক বিশেষ আলোচনার দাবি জানিয়েছে। সরকার আলোচনার জন্য নিয়ম অনুযায়ী ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।
সংসদ মৌসুমি অধিবেশন-২০২৫: সংসদের মৌসুমি অধিবেশন আবারও রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চলেছে। ২১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত চলবে এ অধিবেশন নিয়ে বিরোধী ও সরকারপক্ষ উভয়েই তাদের কৌশল প্রস্তুত করছে। বিশেষ করে সম্প্রতি সংঘটিত ‘অপারেশন সিন্দুর’, পাহলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মতো বিষয় নিয়ে বিরোধী দল এই অধিবেশনে ব্যাপক আলোচনার দাবি জানাচ্ছে।
বিরোধী দলের বিশেষ অধিবেশনের দাবি
গত কয়েক সময় ধরে দেশে সুরক্ষা সংক্রান্ত ঘটনার ফলে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা, ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর কার্যক্রম এবং পরবর্তীতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিরোধী দল একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের দাবি জানিয়ে আসছে। ১৬টি বিরোধী দল মিলে সরকারের কাছে চিঠি লিখে এই সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিল। তবে, এখন সরকার সংসদের নিয়মিত মৌসুমি অধিবেশন আহ্বানের ঘোষণা করেছে।
ক্যাবিনেট কমিটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে
সংসদীয় বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি সংসদের মৌসুমি অধিবেশন নিয়ে প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে এবং তা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠিয়েছে। সূত্রের খবর, প্রস্তাবে অধিবেশনের তারিখ ২১ জুলাই থেকে ১২ আগস্টের মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রায় ২০ দিনের এ অধিবেশনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিলের পাশাপাশি বিরোধী দলের দাবি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
হইচইপূর্ণ হতে পারে অধিবেশন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এইবারের মৌসুমি অধিবেশন বেশ হইচইপূর্ণ হতে পারে। একদিকে সরকার তাদের এজেন্ডা অনুযায়ী বিভিন্ন বিল পাশ করার চেষ্টা করবে, অন্যদিকে বিরোধী দল ‘অপারেশন সিন্দুর’, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং জাতীয় সুরক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় নিয়ে সরকারকে ঘেরাও করবে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং প্রস্তুতি
সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, বিরোধী দল যদি নিয়ম অনুযায়ী এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার দাবি জানায়, তাহলে সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত। বিশেষ করে ‘অপারেশন সিন্দুর’ এবং পাহলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার উপর বিস্তারিত আলোচনার জন্য সরকার ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। এই বক্তব্য ইঙ্গিত করে যে সরকার অধিবেশনকে আলোচনা ও সংলাপের সুযোগ হিসেবে দেখতে চায়।
মহাভিযোগ প্রস্তাবের প্রস্তুতি
এই মৌসুমি অধিবেশনের আরেকটি বড় রাজনৈতিক আলোচনার বিষয় হবে – ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জাস্টিস যশবন্ত বর্মা-র বিরুদ্ধে মহাভিযোগ প্রস্তাব। সরকার এই প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু তাড়াহুড়ো এড়িয়ে বিরোধী দলগুলিকেও আস্থায় নেওয়ার কৌশলে কাজ করছে। এই কাজের দায়িত্ব সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী দলগুলির সাথে সংলাপ
মহাভিযোগ প্রস্তাব নিয়ে কিরেন রিজিজু ইতোমধ্যেই কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ডিএমকে-র মতো প্রধান বিরোধী দলগুলির নেতাদের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন। মনে করা হচ্ছে তিনি অন্যান্য দলের নেতাদের সাথেও যোগাযোগ করবেন যাতে প্রস্তাবটি সংসদে আরও সমর্থন পায় এবং অধিবেশনের কার্যক্রম ব্যাহত না হয়।