কেরল ক্রিকেট লিগে সঞ্জু স্যামসন ২৬.৬০ লাখে বিক্রি, সবথেকে দামি খেলোয়াড়, কোচি ব্লু টাইগার্স কিনল, প্রথমবার টুর্নামেন্টে খেলতে দেখা যাবে।
সঞ্জু স্যামসন: কেরল ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র সঞ্জু স্যামসন আবারও প্রমাণ করলেন যে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং ক্রিকেটীয় প্রতিভা কেবল জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চেই সীমাবদ্ধ নয়। কেরল ক্রিকেট লিগ (KCL)-এর দ্বিতীয় সিজনের নিলামে কোচি ব্লু টাইগার্স তাঁকে ₹২৬.৬০ লক্ষের রেকর্ড দর হাঁকিয়ে দলে অন্তর্ভুক্ত করে। এর ফলে স্যামসন কেরল ক্রিকেট লিগের ইতিহাসে সবথেকে দামি খেলোয়াড় হয়েছেন।
এই দর তখন আরও চমকপ্রদ হয় যখন জানা যায় তাঁর বেস প্রাইস ছিল মাত্র ₹৩ লক্ষ। কোচির দল তাদের ৫০ লক্ষ টাকার পার্স থেকে অর্ধেকের বেশি কেবল স্যামসনের জন্য খরচ করেছে। এই সিদ্ধান্ত তাঁর জনপ্রিয়তা এবং পারফর্ম্যান্স উভয়টিরই স্বীকৃতিস্বরূপ।
সঞ্জু স্যামসনের ঘরের মাঠে 'কামব্যাক শো'
কেরল ক্রিকেট লিগের এই সংস্করণে সঞ্জু স্যামসনকে প্রথমবার খেলতে দেখা যাবে। মজার বিষয় হল, গত সিজনে তিনি KCL-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন, কিন্তু জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে মাঠে নামতে পারেননি। এবার তিনি শুধু খেলবেন না, বরং সবথেকে দামি খেলোয়াড় হিসেবে নিজের দলের নেতৃত্বও দিতে পারেন। কেরল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (KCA) কর্তৃক আয়োজিত এই টি-২০ লিগের দ্বিতীয় সিজন রাজ্যে ক্রিকেটের উন্নতি এবং স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য মঞ্চ তৈরির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ফিরে আসার প্রেক্ষাপট: চোট, বিতর্ক এবং নতুন সুযোগ
সঞ্জু স্যামসনকে শেষবার IPL 2025-এ রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলতে দেখা গিয়েছিল। চোটের কারণে তিনি পুরো টুর্নামেন্টে খেলতে পারেননি এবং দলের দায়িত্ব রিয়ান পরাগকে দেওয়া হয়েছিল। যদিও, যে ৯টি ম্যাচে তিনি অংশ নিয়েছিলেন, তাতে তিনি ৩৬-এর গড়ে এবং ১৪০-এর স্ট্রাইক রেটে ২৮৫ রান করেন।
IPL-এর পর তিনি ভারতের ওডিআই বা টি-২০ দলে সুযোগ পাননি এবং বিজয় হাজারে ট্রফির জন্য আয়োজিত ওয়াইনাড ক্যাম্পে অনুপস্থিত থাকার কারণে কেরলের দল থেকেও বাদ পড়েছিলেন। এমতাবস্থায়, KCL তাঁর জন্য ঘরের দর্শকদের সামনে নিজের ফর্ম এবং ফিটনেস দেখানোর এক বিশাল সুযোগ নিয়ে এসেছে।
নিলামে স্যামসনের জলওয়া, অন্যান্য খেলোয়াড়দেরও দর উঠল
নিলামের সময় শুধু সঞ্জু স্যামসনই নন, আরও অনেক কেরলের তারকারাও বিপুল অর্থ পেয়েছেন। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান বিষ্ণু বিনোদকে অ্যারিজ কোলাম ₹১৩.৮০ লক্ষ টাকায় কিনেছিল, যা নিলামের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর ছিল। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জলজ সাক্সেনা, যিনি কেরলের হয়ে বহু বছর ধরে খেলেছেন, তাঁকে অ্যালেপ্পি রিপালস ₹১২.৪০ লক্ষ টাকায় কিনেছিল। এই পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে KCL এখন কেবল একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট নয়, বরং একটি গুরুতর ক্রিকেট প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে যেখানে প্রতিভা এবং অভিজ্ঞতার কদর করা হচ্ছে।
কোচি ব্লু টাইগার্সের কৌশল পরিষ্কার: স্যামসনের উপর ভরসা
কোচি ব্লু টাইগার্স কর্তৃক স্যামসনের উপর এই বিশাল বিনিয়োগ প্রমাণ করে যে তারা এই লিগ জিততে চাইছে। ফ্র্যাঞ্চাইজির সূত্রানুসারে, 'সঞ্জু আমাদের জন্য কেবল একজন খেলোয়াড় নন, বরং অনুপ্রেরণা। তাঁর অভিজ্ঞতা, স্থানীয় সংযোগ এবং অধিনায়কত্বের ক্ষমতা দলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।' যদি স্যামসন সম্পূর্ণ ফিটনেস নিয়ে মাঠে নামেন, তবে এটি কোচির দলের জন্য বিশাল সুবিধা হবে।
KCL-এর ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা
কেরল ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় সিজন অনেক দিক থেকে আগের চেয়ে বড় এবং ভালো হতে চলেছে। রাজ্যজুড়ে ক্রিকেট প্রেমীদের আগ্রহ এই লিগে ক্রমাগত বাড়ছে। সঞ্জু স্যামসনের মতো তারকা খেলোয়াড়দের উপস্থিতি এই টুর্নামেন্টকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। KCA এবার লিগের প্রচার এবং খেলোয়াড়দের ব্র্যান্ড ভ্যালুর উপরও বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে, যা থেকে আশা করা যায় যে KCL আগামী বছরগুলিতে রঞ্জি ট্রফি বা বিজয় হাজারে-র মতো প্রতিযোগিতার মতোই রাজ্যের প্রতিভা তৈরি করার একটি বড় মাধ্যম হবে।