অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০২৫-২৬-এ প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কর সাশ্রয়ের একটি বড় সুযোগ রয়েছে। ধারা ৮০TTB-এর অধীনে, তাঁরা সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট এবং পোস্ট অফিস ডিপোজিটের উপর অর্জিত সুদের উপর ছাড়ের সুবিধা নিতে পারেন। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, প্রবীণ নাগরিকরা হাজার হাজার টাকা কর সাশ্রয় করতে পারেন।
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কর সাশ্রয়ের টিপস: অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০২৫-২৬-এর জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করার প্রক্রিয়া চলছে এবং এরই মধ্যে সরকার প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ স্বস্তি এনেছে। ধারা ৮০TTB-এর অধীনে, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিরা সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট এবং পোস্ট অফিস ডিপোজিট থেকে প্রাপ্ত সুদের উপর কর ছাড়ের সুবিধা নিতে পারেন। এই বিধানটি বিশেষভাবে সেইসব প্রবীণ নাগরিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যারা তাদের সঞ্চয় থেকে আয় করেন এবং করের বোঝা কমাতে চান। এর ফলে তাঁরা বার্ষিক হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবেন।
ধারা ৮০TTB কী এবং কীভাবে এটি সুবিধা প্রদান করে
অর্থবর্ষ ২০১৮-১৯-এর বাজেটে আনা ধারা ৮০TTB প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক বিধান। এর অধীনে, ব্যাংক, পোস্ট অফিস এবং সমবায় সমিতিতে জমা করা অর্থের উপর প্রাপ্ত সুদ বাবদ ₹৫০,০০০ পর্যন্ত কর ছাড় পাওয়া যেতে পারে। বিশেষ বিষয় হল, এর মধ্যে শুধুমাত্র সেভিংস অ্যাকাউন্টই নয়, ফিক্সড ডিপোজিট এবং পোস্ট অফিস ডিপোজিটও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কারা এই সুবিধা পাবেন
এই সুবিধা শুধুমাত্র ভারতীয় প্রবীণ নাগরিকদের জন্য, অর্থাৎ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। তবে, এই ছাড় শুধুমাত্র পুরনো কর ব্যবস্থায় (old tax regime) উপলব্ধ। যারা নতুন কর ব্যবস্থায় (new tax regime - ধারা ১১৫BAC) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা এই বিধানের সুবিধা পাবেন না।
কোন আয়ের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য
সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট এবং পোস্ট অফিস ডিপোজিট থেকে প্রাপ্ত সুদ ধারা ৮০TTB-এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত। এই কারণেই এই বিধানটি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত উপকারী, কারণ তাদের বেশিরভাগ আয় এই উৎসগুলি থেকেই আসে।
উদাহরণ সহ কর সাশ্রয় বুঝুন
ধরা যাক, কোনও প্রবীণ নাগরিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে ₹৮,০০০, ফিক্সড ডিপোজিট থেকে ₹১,৮০,০০০ এবং পেনশন থেকে ₹৩,০০,০০০ আয় করেন। এই পরিস্থিতিতে, তাঁর মোট আয় দাঁড়ায় ₹৪,৮৮,০০০। কিন্তু ধারা ৮০TTB-এর অধীনে ₹৫০,০০০ ছাড়ের দাবি করার পর, তাঁর করযোগ্য আয় হবে ₹৪,৩৮,০০০, যার ফলে সরাসরি কর সাশ্রয় হবে।
নথি এবং প্রক্রিয়া কতটা সহজ
এই ছাড়ের সুবিধা নিতে কোনও অতিরিক্ত কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। সাধারণ নথি যেমন প্যান কার্ড, ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং সুদের সার্টিফিকেটই যথেষ্ট। এই কারণে, এই বিধানটি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত সহজ এবং সুবিধাজনক।
৮০TTA এবং ৮০TTB-এর মধ্যে পার্থক্য
৬০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তি এবং এইচইউএফ (HUF) ধারা ৮০TTA-এর অধীনে শুধুমাত্র সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদ থেকে ₹১০,০০০ পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। এর তুলনায়, ধারা ৮০TTB অনেক বেশি লাভজনক, কারণ এতে ফিক্সড ডিপোজিট এবং পোস্ট অফিস ডিপোজিটও অন্তর্ভুক্ত এবং ছাড়ের সীমা ₹৫০,০০০ পর্যন্ত।
টিডিএস এবং ধারা ১৯৪A থেকে স্বস্তি
সুদ আয়ের উপর টিডিএস (Tax Deducted at Source) গণনা করা হয় ধারা ১৯৪A-এর অধীনে। এখানে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সীমা হল ₹৫০,০০০, যেখানে অন্য ব্যক্তিদের জন্য এটি ₹৪০,০০০। বাজেট ২০২৫-এ এই সীমা যথাক্রমে ₹১,০০,০০০ এবং ₹৫০,০০০ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এতে প্রবীণ নাগরিকরা আরও বড় স্বস্তি পেতে পারেন।
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কেন এটি বিশেষ
প্রবীণ নাগরিকদের আয়ের একটি বড় অংশ সুদ এবং পেনশনের উপর নির্ভর করে। এমন পরিস্থিতিতে, ধারা ৮০TTB সরাসরি তাদের করের বোঝা কমায় এবং তাদের আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে। এই বিধানটি তাদের জন্য শুধুমাত্র কর সাশ্রয়ের একটি উপায়ই নয়, বরং জীবনযাপন সহজ করার একটি মাধ্যমও বটে।