শান্তিনিকেতন ভ্রমণ: বছরের প্রধান উৎসব দুর্গাপুজোর সময় বোলপুর শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। ১৮৬২ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগমনের পর এই ছাতিমতলা বিশেষ তাৎপর্য পায়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের স্মৃতি, উপাসনা এবং বিশ্বভারতীর সাংস্কৃতিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে দর্শকরা এখানে আসেন। পুজোর সময় এই স্থান বিশেষভাবে সাজানো ও উপাসনার আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলার ইতিহাস
ছাতিমতলার সঠিক ইতিহাস নিয়ে কিছু মতান্তর থাকলেও ১৮৬২ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর অজয় নদের তীরে বোলপুরে আগমনের সময় ছাতিমগাছের নীচে বিশ্রাম নেন। প্রকৃতিক সৌন্দর্য এবং মনোরম পরিবেশ তাঁকে আকৃষ্ট করেছিল। পরবর্তী বছর ২০ বিঘা জমি পাট্টা নিয়ে তিনি শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং ছাতিমতলায় উপাসনা শুরু করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ছাতিমতলা
বিশ্বকবি বিভিন্ন সময় ছাতিমতলায় উপাসনা, বৈদিক মন্ত্রপাঠ এবং বিশ্বভারতীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। এখানে রাখা বেদিতে লেখা আছে, “তিনি আমার প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি।” প্রয়াণের পরও এই ছাতিমতলা বিশেষ উপাসনার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
বিশেষ অনুষ্ঠান ও পুজোর আয়োজন
ছাতিমতলায় প্রতি বছর ৭ পৌষে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রাহ্মধর্ম দীক্ষা উপলক্ষে উপাসনার আয়োজন করা হয়। রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন (২৫ বৈশাখ) এবং প্রয়াণ দিবস (২২ শ্রাবণ) উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। খ্রিস্টোৎসবেও আলো ও সাজসজ্জা হয়।
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আকর্ষণ
পুজোর ছুটিতে বোলপুর গেলে ছাতিমতলায় ঘুরে আসা অভিজ্ঞতা অনন্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস এবং কবিগুরুর স্মৃতির সংস্পর্শ ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক বিশেষ মুহূর্ত তৈরি করে।
শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলা পুজোর ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য। এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের স্মৃতি, উপাসনা ও বৌদ্ধিক পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা। বিশেষ পুজোর আয়োজন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাতিমতলাকে করে তুলেছে অনন্য।