সন্দেশখালি কাণ্ডে হাইকোর্টে বড় ধাক্কা শেখ শাহজাহানের বিজেপি নেতা খুনে সিবিআই তদন্তই বহাল আবেদন খারিজ ডিভিশন বেঞ্চে !

সন্দেশখালি কাণ্ডে হাইকোর্টে বড় ধাক্কা শেখ শাহজাহানের বিজেপি নেতা খুনে সিবিআই তদন্তই বহাল আবেদন খারিজ ডিভিশন বেঞ্চে !

সিবিআই তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টায় জল ঢেলে দিল হাইকোর্ট

সন্দেশখালিতে বিজেপি নেতা খুন ও এক ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার মামলায় সিবিআই তদন্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন শেখ শাহজাহান। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন এক কথায় খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে সিবিআই তদন্ত আগের মতোই চলবে—এই রায় নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা শাহজাহানের জন্য।

ডিভিশন বেঞ্চের রায়: ‘আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়’

বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তের এই ধরনের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। তাই বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা-ই বহাল থাকবে।

২০১৯ সালের হিংসা: মৃত বিজেপি নেতা ২, নিখোঁজ ১, অভিযোগের তির শাহজাহানের দিকেই

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক হিংসার বলি হন বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডল ও দেবদাস মণ্ডল। আর এক কর্মী সুকান্ত মণ্ডল গত ছয় বছর ধরে নিখোঁজ। এই ঘটনাগুলির মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসে তৎকালীন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের। অভিযোগ, তাঁর নেতৃত্বেই হামলা চালানো হয়েছিল।

সিআইডির চার্জশিট থেকে বাদ শাহজাহানের নাম, তীব্র প্রশ্ন উঠেছিল

সিআইডি তদন্তে নাম উঠে আসেনি শেখ শাহজাহানের। চার্জশিটে তাঁর নাম না থাকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ওঠে রাজনৈতিক মহলে। বিশেষ করে যখন অভিযোগকারীরা একের পর এক বলে আসছিলেন, এই ঘটনার মূলে ছিলেন শাহজাহান নিজে।

মৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রীর মামলা: সিবিআই তদন্তের জন্য বড় পদক্ষেপ

মামলার মোড় ঘুরে যায় ২০২4 সালে, যখন মৃত বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডলের স্ত্রী হাইকোর্টে আবেদন জানান নতুন করে তদন্তের জন্য। তিনি দাবি করেন, সিআইডির তদন্ত পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। আদালত তার যুক্তি শুনেই সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ করেন শেখ শাহজাহান, যা সোমবার খারিজ হয়ে গেল।

আদালতের পর্যবেক্ষণ: ‘সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ নয়’

ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। আদালতের মতে, অভিযুক্তের আবেদন মামলার সারবত্তা বা ন্যায়ের পথে বাধা তৈরি করছে। তাই তদন্ত হোক নিরপেক্ষভাবেই, আদালতের উপর আস্থা রেখেই।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: চাপ বাড়ল তৃণমূলের উপরেও

এই রায়ের পর রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তাপ তৈরি হতে পারে। তৃণমূল এখনও এই বিষয়ে মুখ খোলেনি ঠিকই, তবে বিরোধীরা এই রায়কে ‘ন্যায়বিচারের জয়’ বলে দাবি করেছে। বিজেপির দাবি, “যাঁরা হিংসার রাজনীতি চালান, তাঁরা আইনের হাত থেকে রেহাই পাবেন না।”

সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে নতুন মোড় নিতে পারে সন্দেশখালি কাণ্ড

সন্দেশখালি কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত বহাল রাখার রায় শুধুই আইনগত ধাক্কা নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য রাজনৈতিক বার্তাও। শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা কতটা, সেটা এখন নির্ধারিত হবে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অনুসন্ধানে। আদালতের এই রায় বাংলার রাজনীতিতে এক নতুন দিকচিহ্ন তৈরি করল।

Leave a comment