কম খরচে রাজকীয় অভিজ্ঞতা! পুজোয় ঘুরে আসুন সোনারুন্দি রাজবাড়ি

কম খরচে রাজকীয় অভিজ্ঞতা! পুজোয় ঘুরে আসুন সোনারুন্দি রাজবাড়ি

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সোনারুন্দি রাজবাড়ি একসময়ের বনওয়ারীবাদ রাজবংশের গৌরবের প্রতীক। যদিও রাজবাড়ির অনেকাংশ এখন ধ্বংসের মুখে, তবু কিশোরী সাগর দীঘি এবং রাজবাড়ির রহস্যময় কাহিনি আজও টানে বহু পর্যটককে। বিশেষ করে পুজোর ছুটিতে একদিনের জন্য রাজা-রানির মতো অনুভূতি নিতে চাইলে সোনারুন্দি রাজবাড়ি হয়ে উঠতে পারে সেরা উইকেন্ড ট্রিপের জায়গা।

কিশোরী সাগর দীঘি: বড় বড় মাছের রাজত্ব

ঠাকুরবাড়ির সংলগ্ন বিশাল দীঘি ‘কিশোরী সাগর’ এখন সোনারুন্দির প্রধান আকর্ষণ। এখানে বহু বছর ধরে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পোষা হয়।

মাছ ধরার অনুমতি নেই, তবে বাঁধানো ঘাট থেকে বিস্কুট বা মুড়ি ছুঁড়ে দিলে মুহূর্তে ভেসে ওঠে বিশাল মাছের দল।

ধর্মীয় উৎসবে বিশেষ আয়োজন

জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমীর মতো বৈষ্ণব উৎসবে আজও এখানে মাছের পোনা ছাড়া হয়। মৃত মাছ গঙ্গায় ভাসানোর রীতি বজায় রেখেছেন স্থানীয়রা।

এই কারণে বছরের নানা সময়ে মাছ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ভিড় জমান পর্যটকরা।

বনওয়ারীবাদের রাজবংশের ইতিহাস

এই রাজবাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বনওয়ারীদেবের নাম, যাঁকে রাজাদের গৃহবিগ্রহ বলে মানা হতো। বনওয়ারীবাদ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নিত্যানন্দ দালাল ছিলেন অসাধারণ মেধাবী।দিল্লির মুঘল দরবারে তিনি মীরমুন্সী পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন এবং ‘দানেশবন্দ’ উপাধি পেয়েছিলেন।

ধ্বংসের মুখে ঐতিহ্য

বর্তমানে রাজবাড়ির অনেক অংশ ভগ্নপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। তবুও দীঘির মাছ এবং ঐতিহাসিক কাহিনির টানে ভিড় কমে না।পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলেই এটি একটি বড় পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

কিংবদন্তির রহস্যময় মাছ

লোককথায় শোনা যায়, একসময় দীঘিতে সোনার নথ পড়া মাছ দেখা যেত। আবার কেউ মাছ ধরতে গেলে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।

বর্তমানে অবশ্য সেই রহস্যের ছায়ায় সাধারণ বিস্কুট খেয়ে দিব্যি দিব্যি মোটা হয়ে উঠেছে মাছেরা।

মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক সোনারুন্দি রাজবাড়ি আজও আকর্ষণ ধরে রেখেছে পর্যটকদের কাছে। রাজবাড়ির মূল টান কিশোরী সাগর দীঘি, যেখানে বিশালাকার মাছেরা অবাধে ভেসে বেড়ায়। পুজোর ছুটিতে কম খরচে রাজা-রানির মতো একদিন কাটাতে চাইলে এটি হতে পারে এক অসাধারণ গন্তব্য।

 

Leave a comment