লোকসভা নির্বাচনের পরে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঠ পরিদর্শনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই সারিতে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এস.পি. সিং বাঘেল সোমবার রাজসমন্দ পৌঁছান, যেখানে তিনি কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করে ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থাকে ভারতের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সবচেয়ে কালো অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেন। বাঘেল বলেন যে, ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্র এবং সংবিধান উভয়কেই পদদলিত করেছিল।
নাথদ্বারায় দর্শনের পর, চিত্তোরগড় যাওয়ার পথে বাঘেল রাজসমন্দে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এই সময়, প্রাক্তন জেলা সভাপতি মান সিং বারহাটের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তাকে ঐতিহ্যবাহী মেওয়ারি style-এ স্বাগত জানানো হয়। বিপুল সংখ্যক দলীয় কর্মীর উপস্থিতি এই আয়োজনকে বিশেষ করে তোলে। বাঘেল বলেন, যে কংগ্রেস দল একসময় জনগণের কণ্ঠরোধ করতে সারা দেশে জরুরি অবস্থা চাপিয়ে দিয়েছিল, আজ তারাই গণতন্ত্রের কথা বলছে।
১৯৭৫ সালের রাতগুলো আজও গণতন্ত্রকে ভীত করে
কর্মী এবং মিডিয়ার সঙ্গে আলাপকালে বাঘেল ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার ঘটনাগুলো স্মরণ করে বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতা রক্ষার জন্য দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠানো হয়েছিল, সংবাদপত্রের ওপর তালা লাগানো হয়েছিল এবং সাধারণ নাগরিকদের ভয়ের মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি বলেন, এটা ছিল গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার মতো, এবং দেশের মানুষ ১৯৭৭ সালে কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে এর জবাব দিয়েছিল।
বাঘেল বিজেপির আদর্শকে राष्ट्रवादी হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই দল কেবল ক্ষমতার রাজনীতি করে না, বরং 'রাষ্ট্র সবার উপরে' এই ভাবনা নিয়ে কাজ করে। তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জরুরি অবস্থার সত্যতা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া আজও জরুরি, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গণতন্ত্রের গুরুত্ব বুঝতে পারে।
বিজেপি নেতা ও কর্মীদের বিপুল উপস্থিতি
এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় জনতা পার্টির অনেক সিনিয়র নেতা এবং বিপুল সংখ্যক কর্মী উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে চিত্তোরগড় জেলার সভাপতি রত্ন গায়রি, প্রাক্তন জেলা সভাপতি মান সিং বারহাট, সিনিয়র নেতা মহেশ পালিওয়াল, ওবিসি মোর্চা সভাপতি জওহর জাট, জেলা মিডিয়া কনভেনার নর্মদা শংকর পালিওয়াল, পঞ্চায়েত সমিতির উপপ্রধান সুরেশ কুমাওয়াত এবং নগর পরিষদে বিরোধী দলনেতা হিম্মত কুমাওয়াত প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও প্রদীপ খাত্রী, ভেরুলাল নন্দওয়ানা, বিনোদ যোশী, বিকাশ পালিওয়াল, সত্যদেব সিং, ভবানী যোশী, প্রমোদ সেন, শান্তিলাল পালিওয়াল এবং দেশবন্ধু রাঙ্কা সহ আরও অনেক কর্মীর উপস্থিতি এই আয়োজনকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
এই বিশাল আয়োজনে বাঘেলকে ঐতিহ্যবাহী মেওয়ারি পাগড়ি ও ইঁকলাই পরিয়ে সম্মানিত করা হয়, যা কেবল অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক মর্যাদা যোগ করে নি, কর্মীদের মধ্যেও নতুন উদ্যম সৃষ্টি করেছে।
জনগণ দিয়েছে রায়
অনুষ্ঠানের শেষে বাঘেল বলেন যে, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপিকে শক্তিশালী রায় দিয়েছে। এখন কর্মীদের দায়িত্ব হলো গ্রামে গ্রামে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প, উন্নয়নমূলক কাজ এবং অর্জনগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। তিনি বলেন, জনগণের মাঝে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা এবং তাদের সমস্যাগুলো বুঝে সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া-ই আসল সেবা।
বাঘেলের ভাষণ ও বার্তা শুধু কর্মীদের উৎসাহই বাড়ায়নি, বরং এ কথাও স্পষ্ট করেছে যে বিজেপি রাজস্থানে সাংগঠনিক শক্তি এবং তৃণমূল স্তরের যোগাযোগের মাধ্যমে ২০২৮ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি এখনই শুরু করে দিয়েছে।