প্যাকেজড ফুডের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতনতা: FSSAI-কে FOPNL লেবেল লাগানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

প্যাকেজড ফুডের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতনতা: FSSAI-কে FOPNL লেবেল লাগানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় খাদ্য সুরক্ষা ও মানক কর্তৃপক্ষ (FSSAI)-কে নির্দেশ দিয়েছে যে তারা প্যাক করা খাদ্য পণ্যগুলির উপর ফ্রন্ট-অফ-প্যাক নিউট্রিশন লেবেল (FOPNL) लागू করুক।

FSSAI: ভারতে প্যাকেজড ফুড ইন্ডাস্ট্রির জন্য সুপ্রিম কোর্ট একটি বড় এবং ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। শীর্ষ আদালত ভারতীয় খাদ্য সুরক্ষা ও মানক কর্তৃপক্ষ (FSSAI)-কে নির্দেশ দিয়েছে যে এখন থেকে সমস্ত প্যাকেটবন্দী খাদ্য পণ্যগুলির ফ্রন্ট-অফ-প্যাক (FOP) পুষ্টি লেবেল বাধ্যতামূলকভাবে लागू করতে হবে। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল ভোক্তাদের তারা যে খাদ্য দ্রব্য কিনছেন, তার পুষ্টির স্তর সম্পর্কে স্পষ্ট এবং সঠিক তথ্য দেওয়া, যাতে তারা স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলি বেছে নিতে পারে।

FSSAI এবং ফ্রন্ট-অফ-প্যাক (FOP) লেবেল কী?

FSSAI (ভারতীয় খাদ্য সুরক্ষা ও মানক কর্তৃপক্ষ) ভারত সরকারের একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, যা দেশে বিক্রি হওয়া খাদ্য পণ্যগুলির গুণমান, সুরক্ষা এবং মান নির্ধারণ করে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ভোক্তাদের নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন এবং পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করা। ফ্রন্ট-অফ-প্যাক (FOP) পুষ্টি লেবেল হল এমন তথ্য যা কোনও খাদ্য পণ্যের প্যাকেজের সামনের অংশে স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়।

এর উদ্দেশ্য হল ভোক্তাদের দ্রুত এই তথ্য দেওয়া যে খাদ্যটিতে কতটা পরিমাণে ফ্যাট, চিনি, নুন, ক্যালোরি-র মতো জিনিস বিদ্যমান। সারা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে এই ধরনের রং-কোডেড বা গ্রাফিক্যাল তথ্য আগে থেকেই দেওয়া হচ্ছে। ভারতে এটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি উঠছিল, যার উপর এখন সুপ্রিম কোর্ট কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

সাংসদ মিলিন্দ দেওড়ার সক্রিয় ভূমিকা

শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র সাংসদ মিলিন্দ দেওড়া, যিনি সংসদের অধীনস্থ বিধিবদ্ধ কমিটির চেয়ারম্যানও, তিনি এই বিষয়টিকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরেন এবং এটিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের 'A-to-D নিউট্রি-গ্রেড' পদ্ধতি ভারতে लागू করার সুপারিশ করেন। দেওড়ার মতে, এই পদ্ধতির অধীনে A (সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর) থেকে D (কম স্বাস্থ্যকর) পর্যন্ত খাদ্যগুলিকে তাদের পুষ্টি মানের ভিত্তিতে গ্রেড দেওয়া হয়। এর ফলে ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারে যে সে যা খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী বা ক্ষতিকর।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকও গুরুতর

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও এই দিকে গুরুতর নজর রাখছে। সম্প্রতি মন্ত্রক স্কুল, অফিস এবং পাবলিক প্লেসে তেল ও চিনির ব্যবহার সম্পর্কে বিশেষ বোর্ড লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে লোকেদের মধ্যে সচেতনতা আনা যায় যে তারা কোন জিনিসগুলি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল স্থূলতা, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার এবং অন্যান্য লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার কমানো, যা ভারতে দিন দিন বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে যাচ্ছে।

মিলিন্দ দেওড়া স্পষ্টভাবে বলেছেন যে কেবল বিদেশি কোম্পানির প্যাকেজড ফুডই নয়, ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী স্ন্যাকস যেমন- সামোসা, জিলিপি-র মতো জিনিসের উপরেও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কতা জরুরি। তিনি বলেন, এই খাদ্যগুলিতে অতিরিক্ত তেল এবং চিনি ব্যবহার করা হয়, যা মানুষের মধ্যে স্থূলতা এবং রোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই দেশে স্থায়ীভাবে স্মার্ট ফুড চয়েস-কে উৎসাহিত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

কেন FOP লেবেলিং জরুরি?

  • ভারতে স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ দ্রুত বাড়ছে।
  • ফাস্ট ফুড এবং প্যাকেজড ফুডের অতিরিক্ত সেবন এর সবচেয়ে বড় কারণ।
  • ভোক্তারা প্রায়শই জানেন না যে তারা যে জিনিসটি কিনছেন, তাতে কতটা চিনি, ফ্যাট এবং ক্যালোরি লুকিয়ে আছে।
  • FOP লেবেলিং থেকে গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবেন যে এই পণ্যটি তার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা সঠিক বা ভুল।

Leave a comment