ভারতীয় সংস্কৃতিতে হрияালী তিজের (Hariyali Teej) বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই দিনটি বিশেষভাবে বিবাহিত মহিলাদের জন্য সৌভাগ্য, প্রেম এবং উৎসর্গের প্রতীক। এই দিনে মহিলারা মা পার্বতী এবং ভগবান শিবের পূজা করেন এবং সারাদিন নির্জলা উপবাস পালন করেন। বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনে যথাযথভাবে পূজা ও উপবাস করলে বৈবাহিক জীবন সুখের হয় এবং স্বামীর আয়ু বৃদ্ধি পায়।
এই বছর হрияালী তিজ উৎসবটি ২৬শে জুলাই ২০২৫ তারিখে পালিত হবে। তৃতীয়া তিথি শুরু হচ্ছে ঐ দিন রাত ১০টা ৪১ মিনিটে। যদিও উপবাস সারাদিন চলবে এবং সন্ধ্যায় পূজা ও कथा শোনার পর উপবাস ভঙ্গ করা হবে।
উপবাস করার সময় এই ভুলগুলি করবেন না
হрияালী তিজের ব্রত (উপবাস) যেমন আবেগগতভাবে জড়িত, তেমনই এর কিছু নিয়ম ও প্রথাও রয়েছে। অনেক সময় মহিলারা ছোটখাটো বিষয়গুলি উপেক্ষা করেন, যার ফলে ব্রতের প্রভাব কমে যেতে পারে।
- রাহুকাল-এ পূজা করা থেকে বিরত থাকুন: হрияালী তিজের পূজার শুভ সময় হলো প্রদোষ কাল। তবে রাহুকাল-এ পূজা করা নিষিদ্ধ। এই দিনে যদি পূজা বা ব্রতের कथा রাহুকালের মধ্যে হয়, তবে তার ফল কম হতে পারে। পূজার আগে শুভ মুহূর্তের বিষয়ে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।
- ব্রতে তামসিক খাবার বা বস্তু ত্যাগ করুন: হрияালী তিজ ব্রতের দিন সাত্ত্বিকতা পালন করা অত্যন্ত জরুরি। এই দিনে মাংস, ডিম, মদ, রসুন-পেঁয়াজ-এর মতো তামসিক খাবার খাওয়া উচিত নয়। এমনকি এই জিনিসগুলি স্পর্শ করাও ব্রতকে দোষযুক্ত করতে পারে। এছাড়াও চামড়ার তৈরি জিনিস, যেমন - বেল্ট, জুতা বা পার্স ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
- মনের থেকে ব্রত করুন, ক্রোধ ও কলহ থেকে দূরে থাকুন: এই ব্রত কেবল শরীর দিয়ে নয়, মন থেকেও করতে হয়। যদি মন অশান্ত থাকে, ক্রোধ, ঈর্ষা বা কলহের भावना থাকে, তবে পূজার সম্পূর্ণতা পাওয়া যায় না। ব্রতের দিনে বিশেষভাবে শান্ত মন বজায় রাখতে হবে এবং যেকোনো প্রকারের বিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে।
সাজসজ্জা এবং রঙের বিশেষ গুরুত্ব
হрияালী তিজে মহিলাদের ষোলো শৃঙ্গার করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই দিনে সবুজ, হলুদ এবং লাল রঙের পোশাক পরা একটি ঐতিহ্য, কারণ এই রংগুলি মা পার্বতীর প্রিয়।
সবুজ রঙের সঙ্গে জড়িত ঐতিহ্য
সবুজ রং জীবন, সমৃদ্ধি এবং সুখের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। মহিলারা সবুজ চুড়ি, সবুজ বস্ত্র এবং লহরিয়া পরেন। এই রং শুধু সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি ইতিবাচক শক্তিরও প্রতীক।
মেহেন্দির গুরুত্ব
হрияালী তিজে মেহেন্দি (হেনা) লাগানো শুভ বলে মনে করা হয়। কথিত আছে, মেহেন্দির রং যত গাঢ় হয়, স্বামীর প্রেম তত গভীর হয়। এই দিনে মেহেন্দি ছাড়া পূজা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
পূজার সময় মনোযোগ দিন
পূজার সময় পূর্ণ মন ও মনোযোগের সঙ্গে শিব-পার্বতীর ধ্যান করুন। যথাযথভাবে প্রদীপ জ্বালান, জল অর্পণ করুন এবং कथा পাঠ করুন বা শুনুন।
দোলনায় চড়ার সময় খেয়াল রাখুন
হрияালী তিজে দোলনায় চড়ার প্রথা বহু পুরনো। মহিলারা দলবদ্ধভাবে গান গেয়ে দোলনায় চড়েন। তবে অনেক সময় উৎসাহের কারণে সুরক্ষার দিকে নজর রাখা হয় না। দোলনা নিরাপদ স্থানে এবং মজবুত গাছে স্থাপন করা উচিত। অতিরিক্ত উচ্চতা বা ভিড়ের মধ্যে দোল খাওয়া এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
ব্রতের বিধিতে অবহেলা করবেন না
ব্রতের সময় শিব-পার্বতীর कथा শোনা এবং পূজা যথাযথভাবে করা আবশ্যক। অনেক সময় মহিলারা তাড়াহুড়ো করে कथा অসম্পূর্ণ রাখেন বা আরতি করতে ভুলে যান। এর ফলে ব্রতের পূর্ণতা আসে না।
ব্রত ভাঙার নিয়ম
ব্রত সঠিক সময়ে এবং নিয়ম মেনে ভাঙতে হবে। ব্রত ভাঙার সময় ভগবানকে ভোগ নিবেদন করুন এবং জল পান করে ব্রত সমাপ্ত করুন।
হरियाালী তিজের সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
হрияালী তিজ কেবল ব্রত বা পূজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই দিনে মহিলারা বাপের বাড়িতে গিয়ে সম্মিলিতভাবে উৎসব পালন করেন, গান করেন, মেলা ও দোলনার আনন্দ উপভোগ করেন। এই উৎসব পারিবারিক প্রেম এবং সামাজিক মিলনেরও প্রতীক।
এই দিনের পূজা করে মা পার্বতীকে প্রসন্ন করার বিশ্বাস রয়েছে। কথিত আছে যে, এই দিনেই তিনি ভগবান শিবকে স্বামী হিসাবে পাওয়ার জন্য তপস্যা করেছিলেন এবং অবশেষে তাকে বর হিসাবে লাভ করেন।