সুশীল কুমারের প্রত্যাবর্তন: হত্যার অভিযোগের মাঝে রেলওয়েতে কাজে ফিরলেন অলিম্পিক পদক জয়ী

সুশীল কুমারের প্রত্যাবর্তন: হত্যার অভিযোগের মাঝে রেলওয়েতে কাজে ফিরলেন অলিম্পিক পদক জয়ী

দুইবারের অলিম্পিক পদক জয়ী এবং ভারতীয় কুস্তির প্রাক্তন তারকা সুশীল কুমার এবার এক নতুন পথে পা বাড়িয়েছেন। সাগর ধনখড় হত্যা মামলায় দীর্ঘ সময় ধরে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকার পর সম্প্রতি তিনি জামিন পান, যার ফলে তিনি উত্তর রেলওয়েতে তাঁর কর্তব্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবার শুরু করেছেন।

ক্রীড়া সংবাদ: ভারতের দুইবারের অলিম্পিক পদক জয়ী এবং এক সময়ের কুস্তির তারকা সুশীল কুমার, হত্যার অভিযোগের মধ্যে উত্তর রেলওয়েতে তাঁর কাজে ফিরে এসেছেন। দিল্লি হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর তিনি এই সপ্তাহের শুরুতে উত্তর রেলওয়ের অফিসে হাজিরা দেন। তাঁর এই প্রত্যাবর্তন শিরোনামে রয়েছে—কারণ সুশীল এখনও একটি উচ্চ-প্রোফাইল হত্যা মামলার আসামি।

হত্যার অভিযোগ, আদালত থেকে জামিন

ঘটনাটি ২০২১ সালের, যখন দিল্লির ছত্রশাল স্টেডিয়ামে সহযোগী কুস্তিগীর সাগর ধনখড়ের হত্যার অভিযোগে সুশীল কুমারকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় দু’বছর বা তার বেশি সময় ধরে জেলে থাকার পর দিল্লি হাইকোর্ট মামলার বিলম্বের কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি তাঁকে জামিন দেয়। যদিও, এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে তদন্ত চলছে এবং বিচার প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি।

কোন পদে পুনর্বহাল হয়েছেন সুশীল?

রেলওয়ে সূত্রে খবর, সুশীল কুমার উত্তর রেলওয়েতে সিনিয়র কমার্শিয়াল ম্যানেজার পদে কর্মরত আছেন। রেলওয়ে পরিষেবা নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কর্মীকে ততক্ষণ পর্যন্ত সাসপেন্ড করা যায় না যতক্ষণ না আদালত থেকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এই নিয়ম মেনেই সুশীল কুমারের পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং তিনি ফর্মাল পোশাকে অফিসে যোগ দেন।

সুশীল কুমারের কাজে ফেরা নিয়ে জনসমক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে: কিছু লোক মনে করেন যে, যতক্ষণ না আদালতের রায় আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা যায় না। অন্য দিকে, সমালোচকদের বক্তব্য, হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির পুনর্বহাল ভুল বার্তা দেয়, বিশেষ করে যখন বিষয়টি জনস্বার্থ এবং নৈতিকতার সঙ্গে জড়িত।

একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এ কেমন পুনর্বহাল? একটি যুবকের মৃত্যু হয়েছে আর অভিযুক্ত আবার অফিসে বসে আছে!” অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আইন অনুসারে দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কেউ অপরাধী নয়। পুনর্বহাল সঠিক।”

এক চ্যাম্পিয়ন থেকে আসামি পর্যন্ত: সুশীলের যাত্রা

সুশীল কুমার ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ এবং ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে রৌপ্য পদক জিতে ভারতকে গর্বিত করেছিলেন। তিনি দেশে কুস্তি খেলাকে এক নতুন পরিচিতি এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কর্মজীবন বিতর্কের সম্মুখীন হয় যখন সাগর ধনখড়ের মৃত্যুর মামলায় তাঁর নাম আসে। এক সময়ের নায়ক, যাঁদের পোস্টার রেল স্টেশন এবং স্টেডিয়ামগুলিতে লাগানো হত, এখন আদালতের তারিখ এবং আইনি লড়াইয়ে জড়িত।

যদিও সুশীল কুমার বর্তমানে নিচু প্রোফাইলে থেকে তাঁর কাজে ফিরেছেন, তবে তাঁর ক্রীড়া জীবন প্রায় শেষ বলেই মনে করা হচ্ছে। কুস্তি ফেডারেশন এবং অলিম্পিক কমিটিগুলি থেকে তিনি আগেই বাদ পড়েছেন, এবং জনসাধারণের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।

Leave a comment