শুভেন্দুর রাগে জয় বাংলা বিতর্ক আরামবাগে তৃণমূল কর্মীর স্লোগানে ফেটে পড়লেন বিরোধী দলনেতা!

শুভেন্দুর রাগে জয় বাংলা বিতর্ক আরামবাগে তৃণমূল কর্মীর স্লোগানে ফেটে পড়লেন বিরোধী দলনেতা!

আরামবাগের রাজপথে তীব্র উত্তেজনা! 

তৃণমূল কর্মীর মারধরের অভিযোগ, নাম করলেন নিরাপত্তারক্ষীদের এই ঘটনার কেন্দ্রে থাকা শেখ মইদুল নামে এক তৃণমূল কর্মী সরাসরি অভিযোগ করেছেন—শুধু তেড়ে আসা নয়, শুভেন্দুর নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছেন। মইদুলের বক্তব্য, “আমি শুধু জয় বাংলা বলেছি, তাতে উনি এত রেগে গেলেন কেন? তারপর আমাকে ঠেলাঠেলি করে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধরও করা হয়।” এই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

প্রতিবাদে তৃণমূলের বিক্ষোভ, উত্তপ্ত আরামবাগ

ঘটনার পরে আরামবাগে দ্রুত জমায়েত করে তৃণমূল কংগ্রেস। সন্ধ্যার কিছুক্ষণের মধ্যেই মূল রাস্তায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন দলীয় কর্মীরা। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি—“শান্তিপূর্ণভাবে স্লোগান দেওয়ায় যদি এমন মার খেতে হয়, তাহলে এ রাজ্যে বিজেপি কোন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে?” পুলিশের সামনেই চলতে থাকে ধ্বংসাত্মক স্লোগান, তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন নেতৃত্ব।

শুভেন্দুর স্পষ্ট বার্তা: ‘জয় বাংলা মানেই বাংলাদেশ, মেনে নেওয়া যায় না’

ঘটনার পর নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “জয় বাংলা স্লোগান বাংলাদেশের। এই স্লোগান ব্যবহার করে এ রাজ্যে ভিন্নধর্মী রাজনীতি করা হচ্ছে। আমি সেই রাজনীতিকে সমর্থন করি না। তাই প্রতিবাদ করেছি। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা আইন মেনেই কাজ করেছে।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের রাজ্য বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন তিনি।

বিজেপির জবাব: ‘জয় বাংলা মানে তৃণমূলের মুসলিম তোষণ’

এই ইস্যুতে বিজেপি শিবিরও সরব হয়েছে। হুগলি জেলার বিজেপি সভাপতি জানান, জয় বাংলা মানে আজ তোষণের রাজনীতি। এটা বাংলার স্লোগান নয়, বরং এক ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রচার। শুভেন্দু যা করেছেন, তা পুরোপুরি ন্যায্য। এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বক্তব্যও সামনে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে—বাংলার সংস্কৃতির অপমান হচ্ছে এই সব স্লোগানে।

তৃণমূলের পাল্টা: ‘জয় বাংলা তো নেতাজির স্লোগান!

তৃণমূল অবশ্য বিজেপি ও শুভেন্দুর বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক চাল’ বলেই দাবি করছে। জেলার তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, জয় বাংলা স্লোগান তো নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সেনার যুদ্ধস্লোগান ছিল। এটা বাংলার গর্ব। বিজেপি নেতাজিকে অপমান করছে আর নিজের সুবিধামতো ইতিহাস বদলাচ্ছে। পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে, বিরোধী দলনেতা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন।

পুলিশি তদন্তে নামার আশ্বাস, কিন্তু প্রশ্ন উঠছে নিরপেক্ষতা নিয়ে

পূর্বতন ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগ নেওয়া হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, যদি অভিযুক্ত বিরোধী দলনেতা হন, তাহলে তদন্ত আদৌ নিরপেক্ষ হবে কি? এই প্রশ্ন তুলে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে গোটা ঘটনার স্বচ্ছতা নিয়ে।

চোখে মুখে ক্ষোভ, তবুও শান্তির বার্তা তৃণমূল কর্মীর

ঘটনার পরে মুখে আঘাত নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন শেখ মইদুল। বলেন, আমি রাজনীতির কর্মী, সন্ত্রাস চাই না। আমার ওপর অন্যায় হয়েছে। বিচার চাই। তাঁর চোখে ছিল ক্ষোভের আগুন, কিন্তু মুখে শান্তির আহ্বান—এ যেন বাংলার রাজনীতিতে এক নতুন চিত্র।

Leave a comment