মুখ্যমন্ত্রীর মিছিলের দিনেই পাল্টা চাল শুভেন্দুর

মুখ্যমন্ত্রীর মিছিলের দিনেই পাল্টা চাল শুভেন্দুর
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

যেদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বুকে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের হেনস্থা নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন, সেদিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছান রাজ্যের চিফ ইলেকশন অফিসারের দফতরে। তাঁর সাফ কথা—বাংলার ভোটার তালিকাও অনুপ্রবেশমুক্ত করতে হবে।একদিকে বাঙালি অধিকার রক্ষার ডাক, অন্যদিকে ভোটার তালিকা থেকে 'ভুয়ো নাম' ছাঁটাইয়ের দাবি—বেশ জমে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি।

'রোহিঙ্গা ঢুকিয়ে বদলে দেওয়া হয়েছে রাজারহাট-নিউ টাউনের চরিত্র'

সিইও অফিস থেকে বেরিয়েই শুভেন্দুর অভিযোগ—রাজ্য সরকার পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দিয়েছে রাজারহাট, নিউ টাউন, কসবা সহ কলকাতার আশপাশে। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার বহু এলাকাও নাকি আক্রান্ত এই 'ডেমোগ্রাফিক বদলে'।এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রশাসনকে নিশানায় রেখে রাজনীতির গতি ফের একবার শানালো বিজেপি।

বাস্তুহারা না, অনুপ্রবেশকারী! শুভেন্দুর দাবি তীব্র

তিনি অভিযোগ করেন—স্বরূপনগর, হিঙ্গলগঞ্জ, বাদুড়িয়া, মিনাখাঁ, ক্যানিং, ভাঙড় সহ গোটা সীমান্ত এলাকায় বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের মাধ্যমে ভোটব্যাঙ্ক গড়ে তুলেছে শাসক দল। নির্বাচনী চিত্র বদলানোর উদ্দেশ্যে জনবিন্যাস পাল্টানো হচ্ছে—এটাই বিজেপি নেতার মূল অভিযোগ।

‘বিহারের পথ অনুসরণ করুক বাংলা’, ভোটার তালিকা সংশোধনে জোর আবেদন

শুভেন্দু বলেন, বিহারে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষায় লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা ভোটার হিসাবে ধরা পড়েছে। বাংলাতেও সেই পদ্ধতি চালু হোক। তাঁর বক্তব্য—বিনা যাচাইয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলা হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। কমিশনের হস্তক্ষেপ জরুরি।

‘বিএসএফ-কে জমি দেয়নি রাজ্য’, সীমান্ত সুরক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ

শুভেন্দুর আরও একটি গুরুতর অভিযোগ—২০১৬ সাল থেকে রাজ্য সরকার বিএসএফ-কে সীমান্তে কাঁটা তার বসানোর জন্য ৫৪০ কিমি জমি দেয়নি।কেন্দ্র ও বিএসএফের অনুরোধ সত্ত্বেও রাজ্যের অনমনীয় মনোভাব সীমান্ত রক্ষা দুর্বল করেছে বলে দাবি তাঁর।

ভিন রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থা?—‘বিষয়টা ট্যুইস্ট করা হচ্ছে’

যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, বাঙালিদের বাংলাদেশি সন্দেহে অপমান করা হচ্ছে, সেখানে শুভেন্দুর পাল্টা—‘বাংলা শেখা রোহিঙ্গাদের আইনি পরিচয় থাকলেও তারা অনুপ্রবেশকারী, যাচাইয়ের পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।তিনি একে দেখছেন ‘দেশ বাঁচানোর লড়াই’ হিসেবে, যেখানে চিহ্নিত হচ্ছে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের ছদ্মবেশ।

নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা নিয়ে সরগরম রাজনীতি

শুভেন্দু অধিকারীর এই দাবির পর রাজ্য রাজনীতিতে ফের শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা ঘিরে বিতর্ক। একপক্ষ বলছে—এটা গেরুয়া শিবিরের পুরনো চাল, অন্যপক্ষ বলছে—সতর্ক না থাকলে গণতন্ত্রে কালো ছায়া পড়বে।সবমিলিয়ে নির্বাচনপূর্ব সময়েই শুরু হয়েছে কৌশলগত প্রচার যুদ্ধ।

Leave a comment