অ্যালুমিনিয়াম কাস্টিং প্রস্তুতকারক স্বস্তিক ক্যাসেল লিমিটেডের শেয়ার আজ বিএসই এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত হয়েছে। তালিকাভুক্তির দাম ছিল ₹67 প্রতি শেয়ার, যেখানে ইস্যু মূল্য নির্ধারিত হয়েছিল ₹65। এইভাবে বিনিয়োগকারীরা প্রথম দিনেই 3.08% এর সামান্য লাভ পেয়েছেন। তালিকাভুক্তির কিছুক্ষণ পরেই শেয়ারটি ₹68 এর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল এবং প্রথম ব্যবসায়িক দিনের লেনদেন এই স্তরেই শেষ হয়েছিল। অর্থাৎ, প্রথম দিনের শেষে বিনিয়োগকারীরা মোট 4.62% লাভ পেয়েছেন।
আইপিওতে রিটেল বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ
স্বস্তিক ক্যাসেলের ₹14.07 কোটির ইনিশিয়াল পাবলিক অফার 21 জুলাই থেকে 23 জুলাইয়ের মধ্যে খোলা ছিল। এই ইস্যুটিতে বিনিয়োগকারীরা অসাধারণ সাড়া দিয়েছেন। সামগ্রিকভাবে সাবস্ক্রিপশন 5.08 গুণ ছিল, যেখানে রিটেল বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত অংশ 7.75 গুণ পর্যন্ত ভরে গিয়েছিল। কোম্পানি এই আইপিওতে ₹10 ফেস ভ্যালু সহ মোট 21.64 লক্ষ নতুন শেয়ার জারি করেছে। অফারে শুধুমাত্র ফ্রেশ ইস্যু অন্তর্ভুক্ত ছিল, অর্থাৎ প্রমোটাররা তাদের কোনও অংশীদারিত্ব বিক্রি করেননি।
কোম্পানি কোথায় টাকা খরচ করবে
আইপিও থেকে সংগৃহীত ₹14.07 কোটির মধ্যে কোম্পানি প্রায় ₹5 কোটি প্ল্যান্ট ও মেশিনারি কেনার জন্য নির্ধারণ করেছে। এছাড়াও, শেড এবং বিল্ডিং নির্মাণের ওপরও এই একই পরিমাণ অর্থ খরচ করা হবে। ₹5 কোটি কার্যকরী মূলধন অর্থাৎ দৈনন্দিন ব্যবসার খরচের জন্য ব্যবহার করা হবে। অবশিষ্ট অর্থ কোম্পানি সাধারণ কর্পোরেট প্রয়োজনে ব্যবহার করবে।
কোম্পানির ব্যবসা কী করে?
স্বস্তিক ক্যাসেল 1996 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কোম্পানি উচ্চ মানের অ্যালুমিনিয়াম কাস্টিং প্রোডাক্ট তৈরি করে। এর মূল ব্যবসা ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত। কোম্পানি অটোমোবাইল, ইলেকট্রিক্যাল, ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং মেশিনারি কোম্পানিগুলির জন্য কাস্টিং পার্টস প্রস্তুত করে। এর গ্রাহকরা মূলত দেশের বড় শিল্প কেন্দ্রে বিস্তৃত।
মুনাফায় দ্রুত বৃদ্ধি, কিন্তু রাজস্বে ওঠানামা
যদি কোম্পানির মুনাফার দিকে নজর দেওয়া যায়, তবে এতে ক্রমাগত বৃদ্ধি দেখা গেছে। অর্থবর্ষ 2023-এ কোম্পানির নিট লাভ ছিল ₹58 লক্ষ। পরের বছর অর্থাৎ FY24-এ এটি বেড়ে ₹65 লক্ষ হয়েছে। কিন্তু 2025 সালের আনুমানিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোম্পানি ₹2.63 কোটির অসাধারণ নিট লাভ दर्ज করেছে। যদিও, রাজস্বের কথা বললে, এতে স্থিতিশীলতা ছিল না। FY23-এ কোম্পানির রেভিনিউ ছিল ₹24.41 কোটি, যা FY24-এ কমে ₹23.35 কোটি হয়েছে। FY25-এ এটি আবার বেড়ে ₹30.31 কোটি পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ঋণের বোঝা এখনও রয়ে গেছে
কোম্পানির ওপর অর্থবর্ষ 2023-এর শেষে মোট ₹9.64 কোটির ঋণ ছিল। FY24-এ এটি কমে ₹8.97 কোটি হয়েছে, কিন্তু FY25-এ আবার বেড়ে ₹9.12 কোটি হয়েছে। অর্থাৎ ঋণের স্তরে স্থায়িত্ব নেই। যদিও কোম্পানি কার্যকরী মূলধনের জন্য আইপিও থেকে পাওয়া অর্থ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে, যার ফলে ভবিষ্যতে ঋণের চাপ কিছুটা কম হতে পারে।
আইপিও-র আগে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা কী ছিল?
আইপিও-র আগে কোম্পানির কাছে পুঁজির অভাব এবং পরিচালনা খরচ একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। যদিও কোম্পানি বিগত বছরগুলোতে লাভে ভালো বৃদ্ধি दर्ज করেছে, কিন্তু ব্যবসার বিস্তার এবং মুনাফা বজায় রাখার জন্য আরও পুঁজির প্রয়োজন ছিল। এই কারণে কোম্পানি জনগণের থেকে অর্থ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাজারের প্রতিক্রিয়া কী বলছে?
তালিকাভুক্তির দিনে শেয়ারটি সামান্য প্রিমিয়ামে খোলা হলেও, शुरुआती লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে। শেয়ারটি তালিকাভুক্তির দাম থেকে উপরে গিয়ে ₹68-এর স্তর স্পর্শ করেছে, যা বোঝায় বাজারে কোম্পানিকে নিয়ে উৎসাহ বজায় রয়েছে। যদিও, এই প্রবণতা দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকবে কিনা, তা কোম্পানির আগামী ত্রৈমাসিকের ফলাফল এবং ব্যবসার পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করবে।
প্রমোটারদের অংশীদারিত্ব বজায় রয়েছে
এই আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানির প্রমোটাররা তাদের কোনো অংশীদারিত্ব বিক্রি করেননি, অর্থাৎ কোম্পানির কর্তৃত্ব আগের মতোই প্রমোটারদের হাতে রয়েছে। এতে এও ইঙ্গিত মেলে যে কোম্পানির ম্যানেজমেন্টও ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী।
বিনিয়োগকারীদের নজর আগামী ঘোষণাগুলির ওপর
এখন বাজারের নজর এই বিষয়ের ওপর যে স্বস্তিক ক্যাসেল আইপিও থেকে সংগৃহীত অর্থ কোন গতিতে এবং কোন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খরচ করে। পাশাপাশি, আগামী মাসগুলোতে কোম্পানি কোন নতুন অর্ডার বা পার্টনারশিপের ঘোষণা করে, সেদিকেও বিনিয়োগকারীদের নজর থাকবে।