মরগান স্ট্যানলির পূর্বাভাস: ২০২৬ সালের মধ্যে সেনসেক্স ১ লাখ ছুঁতে পারে

মরগান স্ট্যানলির পূর্বাভাস: ২০২৬ সালের মধ্যে সেনসেক্স ১ লাখ ছুঁতে পারে

মরগান স্ট্যানলির রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে ভারতীয় বাজারের সাম্প্রতিক পতন এখন স্থিতিশীল হচ্ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারি নীতি এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের দৃঢ়তার কারণে সেনসেক্স জুন ২০২৬ সালের মধ্যে ১,০০,০০০ স্তরে পৌঁছাতে পারে।

Stock Market: বৈশ্বিক আর্থিক সংস্থা মরগান স্ট্যানলি ভারতীয় শেয়ার বাজার নিয়ে একটি বড় পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় শেয়ার বাজারে সাম্প্রতিক পতনের পর্ব এখন শেষের পথে এবং আগামী সময়ে বাজারে শক্তিশালী উন্নতি দেখা যেতে পারে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে সেনসেক্স জুন ২০২৬ সালের মধ্যে ১,০০,০০০ স্তরে পৌঁছাতে পারে। এই অনুমান ভারতীয় অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধির হার, সরকারি নীতি এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণের উপর ভিত্তি করে।

বাজারের জন্য তিনটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি

মরগান স্ট্যানলি সেনসেক্সের জন্য তিনটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি উল্লেখ করেছে। প্রথমটি হল বুল পরিস্থিতি, যেখানে বাজারে উত্থান বজায় থাকে এবং অর্থনীতি ক্রমাগত শক্তিশালী পারফরম্যান্স করে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় ৩০% সম্ভাবনা রয়েছে যে সেনসেক্স ১,০০,০০০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

দ্বিতীয় পরিস্থিতিটি হল বেস পরিস্থিতি, যেখানে অর্থনীতিতে স্থিতিশীল বৃদ্ধি বজায় থাকে এবং সেনসেক্স প্রায় ৮৯,০০০ স্তরে যেতে পারে। তৃতীয় পরিস্থিতিটি হল বিয়ার পরিস্থিতি, যেখানে বৈশ্বিক মন্দা বা ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মতো কারণগুলির প্রভাব পড়ে এবং সেনসেক্স ৭০,০০০-এর কাছাকাছি নেমে আসতে পারে। তবে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাজারে উন্নতি এবং বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি।

কোন কোম্পানিগুলির উপর মরগান স্ট্যানলির আস্থা রয়েছে

প্রতিবেদনে কিছু কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে যাদের ব্যবসায়িক মডেলকে স্থিতিশীল এবং বৃদ্ধির দিক থেকে শক্তিশালী বলে মনে করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মারুতি সুজুকি, ট্রেন্ট, টাইটান কোম্পানি, বরুণ বেভারেজেস, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, বাজাজ ফাইন্যান্স, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, লারসেন অ্যান্ড টুব্রো, আল্ট্রাটেক সিমেন্ট এবং কফোর্জের মতো কোম্পানিগুলির শেয়ার।

প্রতিবেদন অনুসারে, এই কোম্পানিগুলি ভারতীয় অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান ভোগ, নির্মাণ, আর্থিক পরিষেবা এবং পরিকাঠামো সম্প্রসারণের দিক নির্দেশ করে এবং বিনিয়োগকারীদের এই শেয়ারগুলিতে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা এবং আরও ভালো রিটার্নের সম্ভাবনা দেখা যায়।

বাজারের গতিবিধি এখন সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির উপর নির্ভরশীল

মরগান স্ট্যানলি বলছে যে এখন শেয়ার বাজারের প্রবণতা শুধুমাত্র স্টক-পিকিংয়ের উপর নির্ভরশীল থাকবে না। আগামী সময়ে বাজারের দিকনির্দেশনা অর্থনৈতিক নীতি, সরকারি সিদ্ধান্ত এবং আরবিআই-এর মুদ্রানীতি দ্বারা নির্ধারিত হবে। সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা, ব্যাঙ্কিং সংস্কার, মূলধন ব্যয় বৃদ্ধি এবং কর কাঠামোতে নমনীয়তা বাজারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে কোভিড-এর পরে ভারত যে কঠোর অর্থনৈতিক ও আর্থিক নিয়মগুলি মেনে চলেছিল, এখন সেই নীতিগুলিতে ধীরে ধীরে শিথিলতা আসছে, যা বিনিয়োগ এবং ভোগ উভয়কেই উৎসাহিত করতে পারে।

বৈশ্বিক সম্পর্ক

ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের সম্ভাব্য উন্নতি, আমেরিকার সাথে বাণিজ্য চুক্তি এবং বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে ভারতের ক্রমবর্ধমান ভূমিকাও শেয়ার বাজারকে শক্তি যোগাতে পারে। এছাড়াও, পরিষেবা রপ্তানি, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং ম্যানুফ্যাকচারিংকে উৎসাহিত করার নীতিগুলি ভারতকে বৈশ্বিক স্তরে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে।

অন্যদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, তেলের দামের ওঠানামা এবং আমেরিকা-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মতো কারণগুলি এখনও বাজারের জন্য ঝুঁকি হিসেবে বিদ্যমান।

Leave a comment