ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে আইনি বিতর্ক

ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে আইনি বিতর্ক

ওয়াশিংটন ডিসিতে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিতর্ক আরও গভীর হয়েছে। অপরাধ প্রতিরোধের জন্য ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন, কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে এটি চ্যালেঞ্জ করেছেন। স্থানীয় সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

World Update: আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বড় সিদ্ধান্ত এখন আইনি জটে পড়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন রাজধানীতে অপরাধ প্রতিরোধের নামে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিল, কিন্তু এই পদক্ষেপ অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান শোয়ালব চ্যালেঞ্জ করেছেন। তাঁর যুক্তি হল, এই সিদ্ধান্ত কেবল স্থানীয় অধিকার লঙ্ঘনই নয়, আমেরিকার গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপরও প্রশ্ন তোলে।

ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে কেন এই বিতর্ক

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে ১,০০০ এর বেশি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, রাজধানীতে ক্রমবর্ধমান অপরাধ প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যদিও, স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে যে গার্ড মোতায়েনের ফলে অপরাধ কিছুটা কমেছে, কিন্তু এটি গণতান্ত্রিক অধিকার এবং Home Rule Act 1973-এর পরিপন্থী।

অ্যাটর্নি জেনারেলের আপত্তি

ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান শোয়ালব ফেডারেল আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন যে কোনও আমেরিকান অঞ্চলকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে "সামরিক দখল" (Military Occupation) এর শিকার করা যায় না। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে Home Rule Act 1973 ওয়াশিংটনকে সীমিত স্বায়ত্তশাসন দেয় এবং রাষ্ট্রপতির এই পদক্ষেপ সেই অধিকার লঙ্ঘন করছে।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ

হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করেছে যে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের আমেরিকান আইন অনুযায়ী এই অধিকার রয়েছে। তারা বলেছে যে রাজধানীর নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ফলে অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ট্রাম্প সমর্থকদের মতে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ অপরিহার্য ছিল।

মেয়র এবং স্থানীয় সরকারের অসন্তোষ

ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র মিউরিয়েল বাউজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে অপরাধের হার কমেছে, কিন্তু এই পদ্ধতি সঠিক নয়। মেয়রের মতে, স্থানীয় প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে গার্ড পাঠানো গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের পরিপন্থী। তিনি সতর্ক করেছেন যে এই ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।

ট্রাম্পের পরবর্তী পরিকল্পনা

রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি কেবল ওয়াশিংটনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না। তিনি শিকাগো, বাল্টিমোর এবং অন্যান্য বড় শহরগুলিতেও ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন। এই শহরগুলির স্থানীয় সরকারগুলি ইতিমধ্যেই এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে যে অপরাধ প্রতিরোধের জন্য স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসনকে শক্তিশালী করা একটি ভাল উপায় হবে, বাইরের সামরিক হস্তক্ষেপ নয়।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আমেরিকান গণতন্ত্রের কাঠামো নিয়ে নতুন বিতর্ক উস্কে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছামতো ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন, তবে এটি স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন এবং নাগরিক স্বাধীনতার জন্য একটি হুমকি। অন্যদিকে, সমর্থকরা এটিকে "আইন ও শৃঙ্খলা" (Law and Order) এর জয় বলে অভিহিত করছেন।

Leave a comment