ডোনাল্ড ট্রাম্প ১লা আগস্ট, ২০২৫ থেকে কানাডার পণ্যগুলির উপর ৩৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। তিনি এর কারণ হিসেবে ফেন্টানিল সংকট এবং বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্পের শুল্ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা থেকে আসা সমস্ত পণ্যের উপর ১লা আগস্ট, ২০২৫ থেকে ৩৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্প এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে কানাডার পক্ষ থেকে ফেন্টানিলের মতো মারাত্মক মাদক সরবরাহ বন্ধ করতে ব্যর্থতা এবং আমেরিকার বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিকে উল্লেখ করেছেন। তিনি কানাডার দুগ্ধ নীতিগুলিরও তীব্র সমালোচনা করেন এবং সতর্ক করেন যে, যদি কানাডা পাল্টা ব্যবস্থা নেয়, তবে আমেরিকা শুল্ক আরও বাড়িয়ে দেবে। ট্রাম্প কানাডীয় কোম্পানিগুলিকে আমেরিকায় ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
কানাডা থেকে আমদানির উপর ভারী শুল্ক
মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার একটি বড় এবং প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি কানাডা থেকে আসা সমস্ত পণ্যের উপর ৩৫% শুল্ক অর্থাৎ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। এই নতুন শুল্ক ১লা আগস্ট, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে এবং সমস্ত ধরণের কানাডীয় পণ্যের উপর সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।
ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের পিছনে দুটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন – প্রথমত, ফেন্টানিলের মতো মারাত্মক মাদকদ্রব্যের আমেরিকায় ক্রমাগত সরবরাহ, এবং দ্বিতীয়ত, কানাডার সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি।
ফেন্টানিল সংকট: ট্রাম্প কানাডাকে দায়ী করেছেন
তাঁর সরকারি চিঠিতে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, কানাডা আমেরিকায় ফেন্টানিলের মতো মারাত্মক মাদক পাচার বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি লিখেছেন, “আপনারা জানেন যে, আমেরিকা আগেও শুল্ক আরোপ করেছিল, যাতে দেশে ছড়িয়ে পড়া ফেন্টানিল সংকট নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই সংকট আংশিকভাবে কানাডার ব্যর্থতার কারণে আরও বেড়েছে।”
ফেন্টানিল একটি অত্যন্ত মারাত্মক সিন্থেটিক ড্রাগ, যা আমেরিকায় অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনের কারণে মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প এই সংকটকে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করে বলেছেন যে, এখন আমেরিকাকে তার জনগণের সুরক্ষা এবং অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ট্রাম্পের কঠোর সতর্কতা: ট্রান্সশিপমেন্টের উপরেও শুল্ক
ট্রাম্প সতর্ক করেছেন যে, যদি কোনো কানাডীয় কোম্পানি এই শুল্ক এড়াতে তাদের পণ্য তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে আমেরিকায় পাঠানোর চেষ্টা করে, তবে তাদের উপরেও ৩৫% শুল্ক আরোপ করা হবে। এই প্রক্রিয়াকে, যা বাণিজ্যিকভাবে ট্রান্সশিপমেন্ট বলা হয়, তার উপর কঠোর নজর রাখা হবে, যাতে কোনো কোম্পানি কর ফাঁকি দিতে না পারে।
পাল্টা পদক্ষেপ নিলে আরও বাড়বে কর
তাঁর চিঠিতে ট্রাম্প এ কথাও স্পষ্ট করেছেন যে, যদি কানাডা এই সিদ্ধান্তের জবাবে তাদের পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক বাড়ায়, তবে আমেরিকাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। তিনি লিখেছেন, “যদি আপনারা কোনো কারণে শুল্ক বাড়ান, তবে আপনারা যত শতাংশ বাড়াবেন, আমরাও সেই পরিমাণ ৩৫%-এর সঙ্গে যোগ করব।”
কানাডার দুগ্ধ নীতিগুলির উপর ট্রাম্পের আক্রমণ
ট্রাম্প কানাডার দুগ্ধ নীতিকে অনুচিত এবং বৈষম্যমূলক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন যে, কানাডা মার্কিন দুগ্ধ চাষীদের পণ্যের উপর ৪০০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। একই সঙ্গে, মার্কিন কৃষকদের তাদের পণ্য কানাডায় বিক্রি করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতাও নেই। তিনি লিখেছেন, “কানাডা আমাদের দুগ্ধ চাষীদের উপর অভূতপূর্ব কর আরোপ করে। তাও আবার যখন আমাদের কৃষকদের সেখানে পণ্য বিক্রি করার অনুমতিই নেই।”
কানাডীয় কোম্পানিগুলিকে আমেরিকায় ব্যবসার আমন্ত্রণ
যেখানে একদিকে ট্রাম্প কানাডার বিরুদ্ধে কঠোরতা দেখিয়েছেন, সেখানে অন্য দিকে তিনি কানাডার কোম্পানিগুলিকে আমেরিকায় ব্যবসা শুরু করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, যদি কোনো কানাডীয় কোম্পানি আমেরিকায় এসে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপন করতে চায়, তবে তারা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্ত অনুমোদন পেয়ে যাবে।
তিনি লিখেছেন, “আমরা ব্যবসা করতে আগ্রহী কোম্পানিগুলিকে দ্রুত, পেশাদার এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদন দেব। আমেরিকায় বিনিয়োগ করতে আসা উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানানো হবে।”