মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনকে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক ছাড় দিয়েছেন। শি জিনপিংকে ভালো বন্ধু বলেছেন। এই সিদ্ধান্তে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সংঘাত এড়ানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Trump Tariff: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে চীনকে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। চীন ও আমেরিকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা আপাতত কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম Truth Social-এ পোস্ট করে জানান যে তিনি চীনের শুল্ক সম্প্রসারণের জন্য নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্প আরও বলেন যে চুক্তির অন্যান্য শর্তাবলী আগের মতোই থাকবে।
শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য
ট্রাম্প এই সময় চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংকে "ভালো বন্ধু" বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন যে চীন এই মুহূর্তে খুব ভালোভাবে আচরণ করছে। তাঁর এই বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নতি হতে পারে। জল্পনা করা হচ্ছে যে এই বছরের শেষে ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে পারে।
মার্কিন কোম্পানিগুলির প্রতিক্রিয়া
চীনের সঙ্গে ব্যবসা করা মার্কিন কোম্পানিগুলি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বিশ্বাস, ৯০ দিনের এই শুল্ক বিরতি তাদের বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দেবে। এর ফলে কোম্পানিগুলি চীনে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করার সুযোগ পাবে।
বড় সংকট এড়ানোর আশা
চীনের উপর আরোপিত নতুন শুল্কের সময়সীমা মঙ্গলবার রাত ১২:০১ মিনিটে শেষ হওয়ার কথা ছিল। যদি এই ছাড় না দেওয়া হতো, তাহলে আমেরিকা চীনা আমদানির উপর ৩০% এর বেশি অতিরিক্ত কর আরোপ করতে পারত। এর জবাবে চীনও মার্কিন রপ্তানির উপর বেশি শুল্ক ধার্য করে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারত। এই ধরনের পদক্ষেপ উভয় দেশের জন্য অর্থনৈতিক সংঘাতের কারণ হতে পারত। কিন্তু ৯০ দিনের এই ছাড় উভয় পক্ষকে বিরোধ মীমাংসা করার সময় দিচ্ছে।
মার্কিন-চীন বাণিজ্য পরিষদের মতামত
মার্কিন-চীন বাণিজ্য পরিষদের সভাপতি শন স্টেইন বলেন যে এই শুল্ক ছাড় উভয় সরকারকে একটি স্থায়ী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় প্রদান করে। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ কেবল বর্তমান উত্তেজনা কমাবে না, ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে স্থিতিশীলতাও দেবে।
সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক চুক্তি
জুন ২০২৫-এ, আমেরিকা ও চীন পারস্পরিক উত্তেজনা কমাতে একটি চুক্তি করেছিল। এর অধীনে আমেরিকা কম্পিউটার চিপ প্রযুক্তি এবং পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনে ব্যবহৃত ইথেন-এর উপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর পরিবর্তে চীন মার্কিন কোম্পানিগুলির জন্য বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলির সরবরাহ সহজ করতে সম্মত হয়েছিল।
আগেও এড়ানো হয়েছিল সংঘাত
মে ২০২৫-এও দুই দেশ একে অপরের পণ্যের উপর আরোপিত ভারী শুল্ক কমিয়ে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট এড়িয়েছিল। সেই সময় চীনের জন্য মার্কিন শুল্ক ১৪৫% এবং আমেরিকার জন্য চীনা শুল্ক ১২৫% পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। জেনেভাতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় পক্ষ শুল্ক কমানো এবং আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যার পরে মার্কিন শুল্ক কমে ৩০% এবং চীনা শুল্ক ১০% এ নেমে আসে।