নয়াদিল্লি: ইউনিয়ন ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া তাদের প্রথম ত্রৈমাসিকের (এপ্রিল-জুন ২০২৫) ফলাফল প্রকাশ করেছে। ফলাফলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে ব্যাংকের মুনাফা বাড়লেও, আয়ের কিছু অংশে পতনও রেকর্ড করা হয়েছে। এই সময়ে ব্যাংকের খারাপ ঋণ অর্থাৎ NPA-এর পরিস্থিতি আগের থেকে উন্নত হয়েছে, যা বড় স্বস্তির বিষয় বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্যাংক মুনাফা বাড়িয়েছে, কিন্তু আয়ে কিছু পতন
ব্যাংকের মোট নিট মুনাফা এই ত্রৈমাসিকে ৪,১১৬ কোটি টাকা, যেখানে গত বছরের একই ত্রৈমাসিকে এই সংখ্যা ছিল ৩,৬৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ১২% বৃদ্ধি দেখা গেছে।
এখন আসা যাক ব্যাংকের আয়ের কথায়, যেখানে কিছু মিশ্র চিত্র সামনে এসেছে। ব্যাংকের মোট সুদ থেকে আয় এইবার বেড়ে ২৭,২৯৬ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় সামান্য বেশি। কিন্তু, নিট সুদের আয় (NII) কমে ৯,১১৩ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছর এই ত্রৈমাসিকে ৯,৪১২ কোটি টাকা ছিল।
অপারেটিং প্রফিটেও পতন
ব্যাংকের অপারেটিং প্রফিট অর্থাৎ রোজকার ব্যাংকিং অপারেশন থেকে হওয়া আয়ও কমেছে। গতবার এটা ছিল ৭,৭৮৫ কোটি টাকা, যা এইবার কমে ৬,৯০৯ কোটি টাকা হয়েছে। এটা প্রায় ১১% পতন।
ব্যাংকের মতে, এর পেছনের একটি কারণ কিছু খরচ বৃদ্ধি এবং সুদের হারের চাপও রয়েছে।
খারাপ ঋণ অর্থাৎ NPA-এর স্থিতিতে উন্নতি
সবচেয়ে স্বস্তির বিষয় হল, ব্যাংকের খারাপ ঋণের পরিস্থিতি এখন আগের থেকে ভালো হয়েছে।
- মোট এনপিএ (Gross NPA) কমে ৩.৫২% হয়েছে, যা এক বছর আগে ৪.৫৪% ছিল।
- নেট এনপিএ (Net NPA)-ও কমে ০.৬২% হয়েছে, যেখানে আগে এটা ০.৯০% ছিল।
NPA কমার মানে হল ব্যাংক আটকে থাকা ঋণ পুনরুদ্ধার করতে বা আটকাতে ভালো কাজ করেছে।
এর ফলে ব্যাংককে প্রভিশনিংও (Provisioning) কমাতে হয়েছে। আগে এই সংখ্যা ছিল ১,৬৫১ কোটি টাকা, যা এখন কমে ১,১৫৩ কোটি টাকা হয়েছে।
ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য হয়েছে মজবুত
ইউনিয়ন ব্যাংক এটাও জানিয়েছে যে এই ত্রৈমাসিকে তাদের অনেক আর্থিক সূচকের উন্নতি হয়েছে:
- প্রভিশন কভারেজ রেশিও (Provision Coverage Ratio) বেড়ে ৯৪.৬৫% হয়েছে, যা আগে ৯৩.৪৯% ছিল।
- রিটার্ন অন অ্যাসেট (ROA) এখন ১.১১% হয়েছে, যা আগে ১.০৬% ছিল।
- ক্যাপিটাল অ্যাডিক्वेসি রেশিও (CAR)-ও এখন ১৮.৩% হয়েছে, যেখানে আগে ১৭.০২% ছিল।
এর মানে হল ব্যাংক এখন আরও বেশি সুরক্ষিত এবং আর্থিকভাবে স্থিতিশীল।
ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি
এই ত্রৈমাসিকে ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট ঋণ অর্থাৎ লোন বুকও বেড়েছে। ব্যাংক জানিয়েছে যে জুন ২০২৫ পর্যন্ত তাদের মোট ঋণ ৯,৭৪,৪৮৯ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬.৮৩% বেশি। আগে এই সংখ্যা ছিল ৯,১২,২১৪ কোটি টাকা।
এটা ইঙ্গিত করে যে ব্যাংকের ঋণের চাহিদা বজায় রয়েছে এবং মানুষ ঋণ নিতে ভরসা দেখাচ্ছে।