আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা থেকে ভারতের রপ্তানিকারকদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমেরিকা 1 নভেম্বর 2025 থেকে চীনা পণ্যের উপর 100 শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে, যার ফলে আমেরিকান বাজারে চীনের পণ্য ব্যয়বহুল হবে এবং ভারত রপ্তানি বৃদ্ধির নতুন সুযোগ পেতে পারে।
US-CHINA TRADE WAR: আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের আবহে ভারতের রপ্তানিতে লাভবান হওয়ার আশা করা হচ্ছে। আমেরিকা 1 নভেম্বর 2025 থেকে চীনের পণ্যের উপর 100 শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে, যার ফলে আমেরিকান বাজারে চীনা পণ্য ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। এর ফলে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা আমেরিকান বাজারে তাদের পণ্য আরও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বিক্রি করার সুযোগ পাবেন। 2024-25 সালে ভারত আমেরিকায় 86 বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে শুল্কের কারণে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আমেরিকা চীনের উপর নতুন শুল্ক আরোপ করল
আমেরিকা 1 নভেম্বর 2025 থেকে চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর 100 শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে চীনা পণ্যের উপর মোট শুল্কের হার প্রায় 130 শতাংশে পৌঁছে যাবে। এই পদক্ষেপ বেইজিংয়ের 9 অক্টোবর 2025 এর সিদ্ধান্তের জবাবে নেওয়া হয়েছে, যেখানে বিরল আর্থ মেটালের রপ্তানির উপর কঠোর নিয়ম কার্যকর করা হয়েছিল। এই বিরল খনিজগুলি আমেরিকান প্রতিরক্ষা, বৈদ্যুতিক যান এবং ক্লিন এনার্জি শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
ভারতের জন্য সুযোগ
ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত লাভজনক প্রমাণিত হতে পারে। ভারতীয় রপ্তানি সংস্থাগুলির ফেডারেশনের সভাপতি এস সি রলহন বলেছেন যে আমেরিকা কর্তৃক চীনের উপর শুল্ক বাড়ানোর ফলে চাহিদা ভারতের দিকে স্থানান্তরিত হবে। ভারত 2024-25 আর্থিক বছরে আমেরিকায় প্রায় 86 বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এতে স্পষ্ট যে বর্ধিত আমেরিকান শুল্ক থেকে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বড় লাভ পেতে পারেন।
একজন টেক্সটাইল রপ্তানিকারক বলেছেন যে, এখন চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর আমেরিকা কর্তৃক ভারী শুল্ক আরোপের ফলে ভারতের পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান শক্তিশালী হবে। তার বিশ্বাস যে আমেরিকান বাজারে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
আমেরিকান বাজারে ভারতীয় পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা
বিশেষজ্ঞ এবং রপ্তানিকারকদের বিশ্বাস যে চীনের উপর শুল্ক বাড়ার ফলে আমেরিকান বাজারে তাদের পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। এর ফলে চীনা পণ্য আমেরিকান ক্রেতাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকরা আরও ভালো সুযোগ পাবেন। খেলনা রপ্তানিকারক মনু গুপ্ত বলেছেন যে চীনের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্য আসবে। তিনি জানিয়েছেন যে এর ফলে ভারতীয় পণ্যগুলি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সমান সুযোগ পাবে।
সম্ভাব্য প্রভাব এবং সুযোগ
চীনের উপর 130 শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক হার আরোপ করার পর আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের চাহিদা বাড়তে পারে। টেক্সটাইল, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, খেলনা এবং কনজিউমার গুডস-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের লাভবান হওয়ার আশা করা হচ্ছে। এর ফলে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি কমতে পারে এবং রপ্তানির নতুন বাজার খুলতে পারে।
আমেরিকা-চীন বাণিজ্য বিরোধের কারণে চীনা পণ্যের দাম আমেরিকান বাজারে বাড়বে। ভারতীয় পণ্য প্রতিযোগিতামূলক দামে উপলব্ধ হওয়ায় ক্রেতাদের ঝোঁক ভারতের দিকে বাড়তে পারে। এর ফলে ছোট ও মাঝারি রপ্তানিকারকরাও আমেরিকান বাজারে প্রবেশ করতে পারবেন এবং নতুন সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারবেন।
আমেরিকান বাজারে ভারতের সুবিধা
ভারতীয় রপ্তানিকারকরা এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে কৌশল প্রস্তুত করছেন। তারা আমেরিকান বাজারে পণ্যের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি, কাস্টমাইজেশন এবং গুণগত মান উন্নয়নের উপর মনোযোগ দিচ্ছেন। এছাড়াও, ভারত সরকারও রপ্তানিকারকদের জন্য সহজ নীতি এবং কর ছাড়ের বিকল্প নিয়ে বিবেচনা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে আমেরিকা-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদে ভারতের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আমেরিকান ক্রেতাদের জন্য ভারতীয় পণ্য সস্তা এবং গুণগত মানে উন্নত বিকল্প হবে। এর ফলে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে এবং ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।