উত্তর প্রদেশে ভারী বৃষ্টি এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। লখনউ সহ অনেক জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে এবং অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
UP Weather: উত্তর প্রদেশ এই মুহূর্তে ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝছে। রাজ্যের অনেক অংশে নদীগুলি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে এবং অনেক জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজধানী লখনউ সহ অনেক শহরে স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দফতর আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দিয়েছে, যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
গঙ্গা, যমুনা এবং শারদা নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপরে
রাজ্য বন্যা ব্যবস্থাপনা তথ্য সিস্টেমের রিপোর্ট অনুযায়ী, গঙ্গা নদী অনেক স্থানে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বুদাউনের কচলা ব্রিজ, গাজীপুর, প্রয়াগরাজের ছাতনাগ এবং ফাফামউ, বালিয়া, মির্জাপুর এবং বারাণসী-র মতো অঞ্চলে গঙ্গার জলস্তর উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। যদিও কিছু স্থানে জলস্তর কমেছে, কিন্তু বিপদ এখনও কাটেনি।
যমুনা নদী প্রয়াগরাজের নৈनी এলাকায় লাল চিহ্ন পার করেছে। অন্যদিকে, শারদা নদী লখিমপুর খেরির পল্লিয়াকালানে বিপৎসীমার উপরে বইছে। রাপ্তি নদীও শ্রাবস্তী এবং ভিংগা অঞ্চলে বিপদের কাছাকাছি রয়েছে।
কোন জেলাগুলিতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD) আজ অর্থাৎ ৮ই অগাস্ট উত্তর প্রদেশের অনেক জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা জানিয়েছে। লখনউ, অযোধ্যা, বারাবঙ্কি, গোন্ডা, লখিমপুর খেরি, বহরাইচ এবং আমেঠির মতো জেলাগুলিতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এই জেলাগুলিতে জলমগ্নতা, বন্যা এবং জনজীবনের উপর বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে।
স্কুলগুলির জন্য কী নির্দেশ রয়েছে
লখনউয়ের জেলাশাসক অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত স্কুলের জন্য আজকের দিনের জন্য বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ সমস্ত সরকারি, সাহায্যপ্রাপ্ত, বেসরকারি এবং সমস্ত বোর্ডের স্কুলের উপর প্রযোজ্য। বৃষ্টি এবং বন্যার বিপদ দেখে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলাগুলিতেও স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতির অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
নদীর পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট
গাজীপুরে গঙ্গা নদীর জলস্তর স্থির রয়েছে, যেখানে প্রয়াগরাজ, বালিয়া, মির্জাপুর এবং বারাণসীতে জলস্তরে সামান্য হ্রাস দেখা গেছে। একই সময়ে অযোধ্যায় প্রবাহিত হওয়া ঘাঘরা নদীর জলস্তর ক্রমাগত বাড়ছে এবং বারাবঙ্কির এলগিন ব্রিজে এটি স্থির রয়েছে।
যমুনা নদীর জলস্তর প্রয়াগরাজের নৈनी-তে কম হচ্ছে, কিন্তু বিপদসীমার উপরে রয়েছে। শারদা এবং রাপ্তি নদীর জলস্তরে হালকা পতন রেকর্ড করা হয়েছে, তবে আবহাওয়া দফতরের নতুন বৃষ্টির সতর্কবার্তা আবারও উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
লাগাতার বৃষ্টিতে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে
গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টির কারণে মাটি আগে থেকেই জলে ভরে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আরও বৃষ্টি হলে জলমগ্নতা এবং বন্যার পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে। গ্রামীণ এলাকায় ফসলের ক্ষতি এবং চলাচলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শহর অঞ্চলে রাস্তায় জল জমা এবং যানজট সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি এবং আবেদন
স্থানীয় প্রশাসন ক্রমাগত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দলকে সতর্ক করা হয়েছে। নৌকা, জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রশাসন জনগণের কাছে আবেদন করেছে যে, তারা জরুরি কাজ ছাড়া যেন বাড়ির বাইরে না বের হয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশাবলী যেন মেনে চলে।